আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টনসিল অপারেশন নিয়ে কিছু ভুল ধারণা***

অনেকেরই ধারণা, টনসিল অপারেশন করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়। অথচ ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব পেডিয়াট্রিক অটোল্যারিংগোলজির প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, টনসিল অপারেশনের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে না। এ বিষয়ক দীর্ঘমেয়াদি এক গবেষণায় দেখা গেছে, টনসিল অপারেশনের পর কোষবাহী এবং রক্তবাহী কোনো ধরনের রোগ প্রতিরোধক উপাদানের কোনো ঘাটতি শরীরে হয় না। অপারেশনের এক মাসের মধ্যেই রোগীর রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা আগের অবস্থায় ফিরে আসে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার নির্ধারক কিছু উপাদান রয়েছে।

রক্তে যেগুলোর উপস্থিতি নিরূপণের মাধ্যমে বোঝা যায়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অবস্থা। কোষবাহী প্রতিরোধ ক্ষমতার নিরূপক উপাদানগুলো হচ্ছে, ঈউ৩+, ঈউ৪+, ঈউ৮+, ঈউ১৯+, ঈউ২৫+ এবং ঈউ১৬++৫৬+ এবং রক্তবাহী প্রতিরোধ ক্ষমতার নিরূপক উপাদানগুলো হচ্ছে_ ওম,ে ওমঅ, ওমগ, ঈ৩ ধহফ ঈ৪। কিন্তু টনসিল অপারেশনের আগে এবং পরে রক্ত পরীক্ষা করে এগুলোর কোনোটিরই তারতম্য লক্ষ্য করা যায়নি। এ ছাড়া মাথা ও গ্রীবার চারপাশে মোট ৩শ'র মতো লসিকাগ্রন্থি রয়েছে, তার মধ্য থেকে দুটো অসুস্থ টনসিল ফেলে দিলে শরীরের বিশেষ কিছু সমস্যা হয় না। বাকি লসিকাগ্রন্থি শরীরের রোগ প্রতিরোধ রক্ষার কাজটি সহজেই চালিয়ে নিতে পারে।

টনসিলকে বলা হয় মুখ গহ্বরের দারোয়ান। বাড়ির দারোয়ান যখন অসুস্থ থাকে কিংবা নিজেই যখন চুরির মতো কাজে লিপ্ত হয়, তখন তাকে বিদায় করে দেওয়াই যেমন ভালো। তেমনি করে মুখ গহ্বরের দারোয়ান টনসিল বারবার অসুস্থ হয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করতে পারে না। উল্টো শরীরকে অসুস্থ করে তোলে। কখনো কখনো শরীরে রোগ সৃষ্টিকারী মারাত্মক জীবাণুর উৎস বা আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে টনসিল।

আর সেই জীবাণু ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে কিডনি কিংবা হার্টের ভাল্বকে। যার ফলে কিডনির চাকনির প্রদাহ হার্টের ভাল্ব নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় টনসিল নামের সেই অসুস্থ কিংবা মারাত্মক জীবাণুর আবাসস্থল দারোয়ানকে অপারেশনের মাধ্যমে শরীর থেকে বিদায় করে দেওয়াই উত্তম। এতে ভবিষ্যতে শরীর রোগমুক্ত থাকবে। শুধু ইনফেকশনই নয়, টনসিল অনেক বড় হয়ে তা যদি খাবার গ্রহণের পথ কিংবা শ্বাস নেওয়ার পথকে বাধাগ্রস্ত করে তখনো টনসিলকে ফেলে দেওয়া উচিত।

সারাবিশ্বে শিশুদের সুস্থ রাখার জন্য যত অপারেশন হয় তার শীর্ষে রয়েছে টনসিল ।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলিফ্যামিলি

মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা। ফোন : ০১৬৭২৭৬৫৭৩৯

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।