আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাড়ি বানানোর নিয়ম

বহুতল বসতবাড়ি বানাতে হলে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড বা বিএনবিসি’র নিয়মকানুন মেনেই বাড়ির নকশা করতে হবে। অন্যথায় জীবন ও পরিবেশ দুটোই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।

বাড়ি বানানোর বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের লাইফস্টাইল বিভাগে  দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. জেবুন নাসরিন আহমদ বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী বাড়ি বানানোর জন্য আগের চেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ” 

নাসরিন আহমদ জানান, বিএনবিসি ২০০৮ এর ৫১ ধারায় বাড়ি বানানো সময় ‘ম্যাক্সিমাম গ্রাউন্ড কভারেজ’ বা এমজিসি’র একটি চার্ট অনুসরণ করতে হয়। এতে জমির আকার অনুযায়ী কী পরিমাণ জায়গা ছেড়ে কয়তলা ও কতবড় ভবন নির্মান করা যাবে, সেটা উল্লেখ করা আছে।

এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে— যদি জমির পরিমাণ দুই কাঠার মধ্যে হয় তবে জমির মালিক শতকরা ৬৭.৫ ভাগ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। তাকে প্রায় এক তৃতীয়াংশ জমি ছেড়ে বাড়ি বানাতে হবে।

ঘিঞ্জি ঢাকা শহর। ছবি : হাসান বিপুল- বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

তবে, তিনি ‘ফ্লোর এরিয়া রেশিও’ বা ‘ফার’ পাবেন ৩.১৫।

মানে, ২ কাঠা জমি x ৩.১৫ ফার = ৬.৩০ কাঠার জমির সমপরিমাণ জায়গা ভবনে ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।

জমির আয়তন যত বেশি ‘ফার’ও তত বেশি হয়।

বাড়ি বানানোর সময় চারপাশে জমি ছাড়ার প্রসঙ্গে নাসরিন আহমদ বলেন, “এর সুবিধা বাড়ির মালিকই পাবেন। যেমন, বাড়ির চারপাশে কিছুটা জায়গা খালি থাকলে ঘরে সহজেই আলোবাতাস চলাচল করতে পারে। খোলা জায়গায় শিশুরা খেলাধুলা করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, “বিল্ডিং কোড নীতিমালার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা। আমরা সবাই জানি, ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। এতে প্রাকৃতিক পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে। এজন্য বাড়ি বানানোর সময় জমির চারপাশ থেকে কিছুটা অংশ বাদ দিয়ে বহুতল বাড়ি বানাতে হয়। ফলে বর্ষার সময় বৃষ্টির পানি ফাঁকা জায়গা দিয়ে নিচে পড়ে আর মাটি শুষে নিতে পারে।

“সবাই যদি চারপাশে জায়গা খালি না রেখে বাড়ি বানায় তাহলে ভবিষ্যতে মাটির ভেতরকার পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাবে। বলা যেতে পারে একটা ফাঁপা জায়গার উপর ঢাকা শহর দাঁড়িয়ে থাকবে। এটা যে কত ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় একটু ভাবলেই শরীর শিউরে উঠে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শহরগুলোর তালিকায় রয়েছে। ” কথার ফাঁকে যুক্ত করলেন নাসরিন।

একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, জমির আকার যত বড় হয় তত বেশি (ফার) পাওয়া যায়। ‘মেক্সিমাম গ্রাউন্ড কভারেজ’ও তখন কমতে শুরু করে।

ঢাকার গোধূলি। ছবি : হাসান বিপুল- বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

এছাড়া জমির পাশে যদি ১৮ মিটার রাস্তা থাকে সেখানে যে কোনো আয়তনের জমিতে ৬ ফার পাওয়া যাবে।

অর্থাৎ জমি যদি ৩ কাঠাও হয়, সেই জমিতে ১৮ কাঠা জমির সমপরিমাণ জায়গা ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া যাবে।

২০০৮ সালে প্রকাশিত ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডে একটি বিষয় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, বাড়ি বানানোর আগে সরকার অনুমোদিত স্থপতির মাধ্যমে তৈরি করা নকশার অনুমতি নিতে হবে।

নির্মাণ কাজ শেষে সেই স্থপতি এই মর্মে সম্মতি জ্ঞাপন করবেন যে, তার দিক-নির্দেশনামতো বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। বিল্ডিং কোড অনুযায়ী কোনো বিষয়ে নিয়মকানুন অনুসরণ না করার জন্য কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তিনি দায়ী থাকবেন।

২০০৮ সালে গ্যাজেট আকারে প্রকাশিত ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের পিডিএফ ভার্সন ডাউনলোড করা যাবে।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.