আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাগ কমানোর কৌশল

রাগ কমানোর কিছু কৌশল নিম্নে উল্লেখ করা হলো। এপ্লাই করে দেখতে পারেন :

১। থামুনঃ
কেউ ইচ্ছে করে রাগ করে না। তবে সে রাগ যদি প্রিয়জনের প্রতি অভিমানের না হয়ে থাকে তবে নিজেকে বলুন থামতে। জি হ্যাঁ আপনি ঠিক পড়ছেন।

যখনই কোনো বিষয় আপনার ভালো লাগবে না কিংবা আপনি বোঝাতে পারবেন না তখন থেমে যান। কেউ যদি আপনার সাথে খারাপ আচরণ করে তবে তার সাথে কথা বাড়িয়ে লাভ কি বলুন?? আবার কেউ যদি আপনাকে ধাক্কা দেয় তবে তার চেয়ে অন্ধই বা কে আছে এই পৃথিবীতে? তাই থেমে যান। এমন অনেক বিষয় আসবে যা আপনাকে করবে রাগান্বিত। তবে সেসব বিষয়ের জন্য প্রস্তুত রাখুন একটি শব্দ – ‘থামুন’ ।

২।

লক্ষ্য করুনঃ
আপনার রেগে যাবার কারণ জানেন? ভালো করে লক্ষ্য করুণ তো। যদি শুধু শুধু রেগে যান তবে তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কি? আর যদি তা না হয় তবে অবশ্যই কোনো বিষয় আপনার পছন্দ হয়নি। ভুল তো হতেই পারে। এবার লক্ষ্য করুণ তো পছন্দ না হওয়া বিষয়টা কিভাবে পছন্দের করে নেয়া যায়। রেগে গিয়ে নয় নিশ্চয়ই!!

৩।

বুঝিয়ে দিনঃ
কেউ জুতা পরে আপনার ঘরে ঢুকলে আপনার ভীষণ রাগ হয়। মনে হয় সাথে সাথে তাকে একটা চড় মারতে। তবে তা না করে কখনো বুঝিয়ে বলেছেন কি? দেখুন না সে কি বলে। হয়তো সে খালি পায়ে হাঁটতে অভ্যস্ত নয়। আপনি চাইলে বিষয়টি দরজায় লিখে রাখতে পারেন।

আবার বিকল্প হিসেবে সবার জন্য একটি পরিষ্কার স্যান্ডেলের ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে এসব না করে আপনি রেগে গিয়ে আপনার ঘর নোংরা হতেও দেখতে পারেন!

৪। চিন্তা করুনঃ
আপনি অতি দ্রুত রেগে যান এবং রেগে গিয়ে হাতে যা থাকে ছুড়ে ফেলে দেন। সেটা আপনার মুঠোফোনও হতে পারে আবার হতে পারে কাচের গ্লাস। তবে ছুড়ে ফেলার আগে একবার চিন্তা করে দেখুন তো।

আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন সেই সময় চিন্তা করা যায় না। তবে আপনার চিন্তা ভুল। আমাদের মস্তিস্ক চিন্তা ছাড়া থাকে না। আপনি হাত থেকে ছুড়ে ফেলার আগেও আপনার মস্তিস্ক তা নিয়ে চিন্তা করে দেখে যে তা ছুড়ে ফেলা যাবে কিনা! আরও নিশ্চিত হবার জন্য বলতে পারি কাউকে দেখবেন না রেগে গিয়ে পানিতে ঝাপ দিতে কিংবা দলিল আগুনে ফেলে দিতে! তাই রাগান্বিত হলেও আপনার সব সময় সক্রিয় মস্তিস্ক দিয়ে চিন্তা করুণ!

৫। সমাধান করুনঃ
আপনার রাগ হবার যদি কারণ থাকে তবে তার সমাধানও থাকবে।

তাই সমাধান খুঁজে বের করে রাগ পরিহার করুন। আপনি বা আমি কেউই বেশি দিন এই পৃথিবীতে নেই। তাই ক্ষণিকের এই যাত্রায় রেগে গিয়ে সময় নষ্ট করে লাভ কি বলুন?? তাই চেষ্টা করবেন দ্রুত এর সমাধান করতে।

৬। মনোযোগ সরিয়ে নিনঃ
যে সব বিষয় নিয়ে আপনি রেগে যান সেই সব বিষয় থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিন।

যেমন কেউ চিৎকার করছে বলে আপনার ভীষণ রাগ হচ্ছে, তাহলে আপনি চাইলেই স্থানটি ত্যাগ করে রাগ কমাতে পারেন। আবার কারো কোনো কাজ আপনার পছন্দ হচ্ছে না কিংবা কারো কথায় আপনি বিরক্ত তথা রেগে যাচ্ছেন, তবে সেই ক্ষেত্রে অন্য কাজে মনোযোগ দিন। এমন কিছু করুন যা আপনার ভালো লাগে। প্রিয়জনের সাথে কথা বলতে পারেন কিংবা চলচ্চিত্র দেখতে পারেন। দেখবেন রাগ কমে যাবে।



৭। ক্ষমা করুনঃ
মানুষ যেমনি মরণশীল তেমনি ভুলশীল। যদিও এরকম কোনো শব্দ ডিকশনারি’তে নেই তবুও মানুষ ভুল করতে ভোলে না। মানুষ সব সময়ই কিছু না কিছু ভুল করে। তাই বলে সব ভুলের জন্য রেগে যাওয়া মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ না।

রেগে না গিয়ে তাকে ক্ষমা করে দিন। দেখবেন তৎক্ষণাৎ না হলেও পরবর্তীতে আপনার ভালো লাগবে। আর তাছাড়া রেগে গিয়ে কি আপনি তার ভুল শুধরে দিতে পারবেন? ধরুন একজন রিক্সাচালক আপনার গাড়িতে স্ক্রাচ ফেলে দিয়েছে। এবার আপনি তার সাথে রাগ করলেই কি তা ঠিক হবে? তা না করে আপনি যদি তাকে ক্ষমা করে দেন তাহলে পরবর্তীতে সে সতর্ক থাকবে।

৮।

পরিস্থিতিঃ
সবার পরিস্থিতি সব সময় এক রকম হয় না। আজ আপনি যার উপর রেগে যাচ্ছেন কাল হয়তো তার জায়গায় আপনি থাকবেন! তাই রাগ উঠলে পরিস্থিতিটা একটু বুঝে নিন। কেউ আপনাকে ইচ্ছে করে রাগিয়ে তুলবে না। তাই পরিস্থিতির কথা ভেবে দেখুন। দেখবেন আপনার রাগ কমে যাবে এবং আপনি বিষয়টা দ্রুত বুঝে যাবেন।



৯। স্থির থাকুনঃ
আমরা যখন স্থির থাকতে পারি না তখন যেকোনো বিষয় নিয়েই আমরা রেগে যাই। তবে রাগ ওঠার জন্য তখন পারিপার্শ্বিক অবস্থার চেয়ে বেশি দায়ি থাকি আমরা। কেননা মানসিক অস্থিরতার কারণে সব কিছু আমাদের ভুল মনে হয়। যার ফলে আমরা রেগে যাই।

তাই আমাদের উচিত স্থির থাকা। আপনি যদি মানসিকভাবে স্থির থাকেন তাহলে মানসিক ভারসাম্যের বিপর্যয় ঘটবে না। ফলে আপনার রাগ কমে যাবে।

১০। যোগ-ব্যায়াম করুনঃ
যদি রাগ আপনার নিত্য সাথী হয় এবং যদি আপনি কিছুতেই তা কমিয়ে আনতে না পারেন তাহলে যোগ-ব্যায়াম করুন।

দেখবেন কিছু দিনের মধ্যেই আপনার আচরণে পরিবর্তন আসবে এবং আপনি রাগ কমাতে পারবেন। ।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।