আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যারা এই বছর উচ্চ শিক্ষার জন্য ইউরোপে আসছেন তাদের জন্য কিছু টিপস।

যারা এই বছর উচ্চ শিক্ষার জন্য ইউরোপে আসছেন তাদের ভিতর অনেকেই ইতিমধ্যে ভিসার জন্য আবেদন করে ফেলেছেন। অনেকে হয়তোবা ভিসা কনফার্মেশন ও পেয়ে গেছেন। ছাত্ররা একটু দ্বিধা-দ্বন্দে থাকেন কি কি জিনিস সাথে করে নিয়ে আসতে হবে সেগুলো নিয়ে। তাদের অবগতির জন্যই আমার এ লেখা। টিকেট বুক করা হয়ে গেলে একটা তালিকা করুন কি কি জিনিস আপনি সাথে নিবেন।

বেশীরভাগ এয়ারলাইন্স ২৩ কেজির উপর লাগেজ সাথে নেয়ার অনুমতি দেয়না। কিছু এয়ারলাইন্স যেমন কাতার এয়ারলাইন্স ৩০ কেজি পর্যন্ত বহনের অনুমতি দেয়। টার্কিশ এয়ারলাইন্সে ৪০ কেজির বেশি নেয়া যায় ছাত্র হিসেবে। তবে সেফ সাইডে থাকার জন্য ৩০ কেজির ভিতরে রাখাই ভালো। প্রথম বার দেশ থেকে বের হবার সময় সবারই দেখা যায় ২৩কেজির উপর হয়ে যায় লাগেজের ওজন।

এই ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। সবসময় চেষ্টা করবেন লাগেজের ওজন ২৩ কেজির ভিতর রাখতে। হ্যান্ড লাগেজে ও আপনি ৭/৮ কেজি নিতে পারবেন। হ্যান্ড লাগেজের ব্যাপারে একটা কথা মাথায় রাখবেন সেটা হলো কোনরূপ খাদ্যদ্রব্য, ১০০ মিলির উপর যেকোন তরল হ্যান্ড লাগেজে রাখবেন না। এছাড়া কিছু কাপড় চোপর, ল্যাপটপ ইত্যাদি রাখতে পারবেন।

চাইলে ল্যাপটপ আলাদা ব্যাগেও রাখতে পারেন। বিদেশে ২ বছরের জন্য আসবেন সেক্ষেত্রে আপনার অনেক দরকারি জিনিসই সাথে করে আনা লাগতে পারে। সেরকম কিছু দরকারি জিনিসের একটি তালিকা আমি নিচে দিয়ে দিলাম - ১। জিনস প্যান্ট - কমপক্ষে ৪টি। যেহেতু ইউরোপের সব দেশই শীতপ্রধান, একটু মোটা দেখে কিনবেন।

২/১টা পাতলা জীনস ও আনতে পারেন সামার এ পরার জন্য। ২। গ্যাবার্ডিন ও ফরমাল প্যান্ট - উভয় প্রকারের ১টা করে আনলেই যথেষ্ট। ৩। ট্রাউজার/থ্রি কোয়ার্টার/লুঙ্গি - আপনার পছন্দের উপর ভিত্তি করে মোট ৬/৭টা নিয়ে আসতে পারেন।

৪। টি শার্ট/পোলো শার্ট - যত বেশী সম্ভব। এগুলো পরা ও পরিষ্কার করা সহজ। ইস্ত্রী করার ঝামেলা ও নেই। ১০/১২ বা তার ও বেশী নিয়ে আসতে পারেন।

৫। ফরমাল শার্ট - ২টা ফরমাল শার্ট যথেষ্ট। না আনলেও চলবে। ৬। ইউরোপের সবদেশেই কম বেশী তুষার পড়ে।

তাই একজোড়া ভারী বুট নিয়ে আসবেন। এখানে এসেও কিনতে পারেন। দামের খুব একটা তফাৎ হবেনা। ৭। খেলা ধুলা, জগিং ইত্যাদির জন্য একজোড়া কেডস রাখবেন।

৮। চামড়ার স্যান্ডাল - ঈদ, বিভিন্ন পুনর্মিলনীতে পরার জন্য একজোড়া চামড়ার স্যান্ডাল সাথে রাখতে পারেন। আর ঘরের ভিতর পরার জন্য একজোড়া চপ্পল নিবেন। ৯। বেল্ট - ২/৩ টা।

১০। ওয়ালেট- ২টা। ১১। ভার্সিটিতে আসা যাওয়ার জন্য একটা ভালো স্কুল ব্যাগ। যে সমস্ত ব্যাগগুলো চেইন টেনে ছোটবড় করা যায় এরকম দেখে নিবেন।

বায়তুল মোকাররম একটা ভালো অপশন। ১২। কলম, পেনসিল, স্ট্যাপলার, ছোট কাচি, পান্চিং মেশিন, জেমস ক্লিপ ইত্যাদি। (অবশ্যই মেইন লাগেজে রাখবেন। ) ১৩।

শেভিং কিটস, টুথব্রাশ, টুথপেষ্ট। (অবশ্যই মেইন লাগেজে রাখবেন। ) ১৪। সায়েন্টফিক ক্যালকুলেটর (ভালো দেখে কিনবেন)। এখানে অনেক দাম।

১৫। নেইল কাটার, সুই সূতা, বোতাম ইত্যাদি। (অবশ্যই মেইন লাগেজে রাখবেন। ) ১৬। বিছানার চাদর, বালিশের কভার।

(২ সেট) ১৭। ২/১ টা অতি গুরুত্বপূর্ণ বই সাথে নিতে পারেন। না নিলেও সমস্যা নেই। এখানে ক্লাসের আগেই আপনি লেকচার ম্যাটেরিয়াল পেয়ে যাবেন। লাইব্রেরীগুলোও অনেক সমৃদ্ধ।

১৮। আপনার নিজস্ব ধর্মীয় গ্রন্থাবলী ও ধর্ম পালনের জন্য যা কিছু দরকার। ১৯। ভারী জ্যাকেট ১টা। ২০।

সামারে পরার জন্য সামার জ্যাকেট - ২/৩ টা। ( যেগুলো আমরা সচরাচর দেশে পরে থাকি, হুডি, ফুলহাতা মোটা টি শার্ট ইত্যাদি। ) ২১। সোয়েটার - ১টা ফুল ও ১টা হাফ সোয়েটার নিতে পারেন। ২২।

স্যুট/ব্লেজার - ১টা নিতে পারেন (ঐচ্ছিক) ২৩। হাতমোজা - ৪/৫ জোড়া। ২৪। উইন্ডব্রেকার - যখন তাপমাত্রা সহনীয় কিন্তু প্রবল বাতাসে পরার জন্য। ২৫।

মোজা - ৮-১২ জোড়া নিবেন। দিনের বেশীরভাগ সময় আপনাকে জুতা পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে তাই যত বেশী সাথে আনতে পারেন। ২৬। প্রবল শীতের প্যান্টের ভিতরে পরার জন্য ইনার - ৩/৪ টা। ২৭।

স্যান্ডো গেন্জি ও আন্ডারওয়্যার - ৫/৬টা নিয়ে আসবেন। ২৮। তোয়ালে - ২টা। ২৯। কানটুপি অবশ্যই আনবেন।

(মাংকিটুপি না আনাই ভালো) ৩০। পানজাবী-পাজামা - ১সেট (ঐচ্ছিক)। ৩১। মসলা - যতবেশী সম্ভব সাথে করে নিয়ে আসবেন। এখানে মসলার দাম অনেক বেশী।

এমনও হতে পারে আপনি যেখানে আসছেন সেখানে কোন ভারতীয় দোকান নেই, সেক্ষেত্রে আপনি সমস্যায় পড়বেন। আজকাল সব ধরনের মসলাই প্যাকেটে পাওয়া যায়, যেমন মুরগী মসলা, বীফ মসলা, মাছের মসলা, বিরিয়ানী মসলা। মুরগী মসলা/গরম মসলা সবথেকে বেশী আনবেন। এরপর মাছের মসলা, বীফ মসলা। ৩২।

আপনার সমস্ত ধরনের সার্টিফিকেট মূলকপি ও একসেট ফটোকপি রাখবেন। এগুলো স্ক্যান করে একটা সিডিও করে রাখবেন। ৩৩। ২০/৩০ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও ১০/১৫ কপি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি সাথে নিবেন। ৩৪।

আপনি দেশে চাকুরীরত থাকলে জব রিলিজ অর্ডার সাথে রাখবেন। ৩৫। কিছু ঔষধ যেমন, প্যারাসিটামল, এন্টাসিড, ফ্লাজিল ইত্যাদি সাথে রাখবেন। ৩৬। আপনি যদি চশমা ব্যাবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে ২টা অতিরিক্ত চশমা সাথে নিয়ে নিবেন।

৩৭। লাগেজ ব্যাগ কেনার ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। একটু বেশী দাম দিয়ে হলেও ভালো দেখে কিনবেন। লাগেজের ব্যাপারে ট্রলি একটা ভালো অপশন হতে পারে। নিচে চাকা ও উপরে লম্বা হাতল থাকার কারনে এগুলো টানা সহজ।

ট্রলি চেন টেনে ছোট বড় করা যায় এরকম দেখে কিনবেন। ট্রলি যেন অবশ্যই শক্ত ও মজবুত হয় এরকম দেখে কিনবেন। নাহলে যদি এয়ারপোর্টে কোনরূপ সমস্যা দেখা দিতে পারে। কাপড়ের ব্যাগ এভয়েড করার চেষ্টা করবেন। ৩৮।

নিজ দেশের কিছু কারেন্সী নোট সাথে রাখবেন। কিছু ছোট স্যুভানির রাখতে পারেন ঐ দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের জন্য। আপনার প্রফেসরের জন্যও কোন উপহার সাথে নিতে পারেন। ৩৯। পাৎলা সোয়েটার নেবেন ৩/৪টা এগুলো পরতে পরতে পরলে হিটটা ভাল ভাবে থাকে।

ওখানে গিয়ে অবশ্যই ওভার কোট কিনবেন। ৪০। নারীরা মোজা নেবেন অ্যাঙ্কল আর নি হাই, আর নেবেন টাইটস। যদি সম্ভব হয় ওখানে গিয়ে ভেড়ার লোম দিয়ে বোনা মোজা কিনে নেবেন। এগুলা খুব গরম হয়।

৪১। প্রথমেই গিয়ে দোকান পাটের হদিস নিশ্চয়ই পাবেন না। তাই ৭/৮ প্যাক নুডুলস নিন। ৪২। যত বেশী সম্ভব অন্তর্বাস নিন।

ওখানে ভীষণ দাম এসবের। ৪৩। হাটু পর্যন্ত লম্বা উইন্টার জ্যাকেট আনার দরকার নেই। আমার পরামর্শ থাকবে এইখানে এসে কেনার। দেশ থেকে কিনতে চাইলে স্মার্ট দেখে কিনবেন।

৪৪। প্যান্টের ভিতরে পরার জন্য থার্মাল ভেস্ট (প্রচলিত ভাষায় ইনার কিনবেন অবশ্যই)। আশা করি আমার এই লেখাটি আপনাদের জন্য কাজে আসবে। ধন্যবাদ সবাইকে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।