আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এককশক্তির দাবীদার এবং তার দোসর পশ্চিমাদের চ্যালেঞ্জ।



"গনতন্ত্র" বা জনগনের শক্তি বা শাসন যাই বলি না কেন, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই(বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বে) দাতাদেশসমুহ সহ পরাশক্তির ভারসাম্যের উপর। প্রমান নুতন করে সামনে নিয়ে এলো ইউক্রেন। EU,আমেরিকাসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলি চাচ্ছে একে EUর অনর্ভুক্ত করে রাশিয়ার ঘরের দুয়ারে ঠাই নিতে। কিন্তু বর্তমান রাশিয়া আর ১৪/১৫বছর আগের মিখাইল গর্ভাচেভর দুর্বল সন্তান নেই। এরমাঝে সে হারিয়েছে অনেক মিত্র।

মধ্যপ্রাচ্যসহ আফ্রিকায় তার পা রাখারও স্থান নেই। ফ্রান্সের কারনে লিবিয়াও গেলো। এই কারনেই সিরিয়া এবং ইরানকে একতরফা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে চীনকে সাথে নিয়ে। আর খোদ যুক্তরাষট্রও বুঝে গেছে তথাকথিত "সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের" শ্লোগানএর প্রভাব কমে গিয়ে ধীরে ধীরে তা ব্যর্থতায় পর্যবশিত হচ্ছে। এর মাহাত্য আর বিশ্বে অজানা নেই।

এখন শুরু হয়েছে ই ইউতে নেয়াসহ ন্যাটোতে অন্রভুক্তির ব্যাপার বা খেলা যাই বলি না কেন। যা তার সামরিক শক্তিরই পরিব্যাপ্তি। যাক যা বলছিলাম সেই ইউক্রেনের কথাতেই ফিরে যাই।
ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তিসহ বিভিন্ন চুক্তি স্বাভাবিক ভাবেই রাশিয়া সমর্থিত প্রসিডেন্ট ইউঙ্কোভিচ বাতিল করে দেয়। ফলাফল রাজধানী কিয়েভে প্রচন্ড গনআন্দোলন ও ব্যাপক গনহত্যার পর ইউঙ্কোভিচের রাশিয়া সমর্থিত অঞ্চলে পলায়ন।

এই ক্রিমিয়া এবং দক্ষিনে রাশিয়ার বিশাল সংখ্যাগরি্ষ্ঠতাসহ ব্যাপক প্রভাব। । এখানে একটা ব্যাপারও আছে,এই ক্রিমিয়া আসলে রাশিয়ারই একটা অংশ। যা ১৯৫৪ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নিকিতা ক্রুশ্চেভ ইউক্রেনকে উপহার হিসাবে দান করেছিলো। আজ সেই হিসাবেই রাশিয়া তা ফেরত চাচ্ছে এবং ক্রিমিয়ার পার্লামেন্টেও তা অনায়াসে পাশ হয়ে যাবে।

এবং এ নিয়ে গনভোটের তারিখ ও নির্ধারিত হয়ে গেছে ১৬ই মার্চ ( যা নিয়ে পশ্চিমাদের মাথাব্যাথা শুরু হয়েছে। ) এখন আমেরিকাসহ তার মিত্ররা বলছে, এটা ইউক্রনের এবং আন্তর্জাতিক আইনের বরখেলাপ। তারা বলছে যেকোন দেশের সীমারেখা বদল এই ২০১৪ সালে অসম্ভব কল্পনা। জবাবে রাশিয়া বলছে তাহলে কেন তৎকালীন যুগোশ্লাভিয়া এবং কিছুদিন আগেও সুদানকে বিভক্ত করতে উৎসাহ ও শক্তি প্রয়োগ করে বিভক্ত করা হলো? আর এখানে যোগাচ্ছে ইউক্রেনিয়ানদের জীবনযাত্রার উন্নতিসহ দেওলিয়া ব্যাংকগুলিকে ব্যাপক র্থ সাহায্য। আমেরিকা ১ বিলিয়ন ডলার সহ ই ইউ আগামী ২ বছরের মাঝে ১৫ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সাথে অবশ্যই আই এম এফও থাকছে। হয়তো গ্রীকের মত "অষ্টারিতি" শর্তও থাকতে পারে। কিন্তু এতে বিশেষজ্ঞদের ধারনা বাহ্যিক দৃষ্টিতে উন্নতির ধানা হলেও পরবর্তীতে এর সুদুরপ্রসারী প্রভাব পড়বে, এইসব লোনের পিছনের চুক্তির ফলে। যার উদাহরন ইতালী এবং গ্রীক। শিক্ষাব্যাবস্থার অবমুল্যায়ন, অর্থের পুনর্মুল্যায়ন,গ্যাস-বিদ্যুৎসহ প্রতিটি পন্যের মুল্যবৃদ্ধি ঘটবে উচ্চহারে্।

ট্যাক্সসহ বেকার সমস্যাই শুধু বাড়বে। তারপরও কেন কিয়েভবাসীরা এপথে হটতে চাইছেন? কারন নগদ অর্থসহ ই ইউতে অন্তর্ভুক্তি তাদের আলোর দিশা দেখাবে বলে। কিন্তু আমরাতো আফ্রকাসহ মধ্যপ্রাচ্র থেকে জর্জিয়াতে যা দেখেছি তাতা কি আলোর দিশায় চারদিক উজ্জল হয়ে উঠেছে? আসলে বিশ্বকে আরেক যুদ্ধ অথবা অনেক রক্তক্ষয়ের অপেক্ষায় থাকতে হবে।
চলছে হুমকি পাল্টা হুমকি। আমেরিকাসহ মিত্রদেশগুলি বানিজ্য ও অর্থনৈতিক অবরোধের পাল্টা ব্যাবস্থা নিতে রাশিয়ার পার্লামেন্টেও বিল আনা হচ্ছে পশ্চিমা ব্যাবসা সহ অরথ "ফ্রিজ" করার।

এটা মাথাব্যাথার কারন হয়ে দাড়াবে অনেক দেশের। তারা যে শুধু রাশিয়ার এনার্জির উপরই নিরভশীল তা নয় ব্যাবসা-বানিজ্যের প্রায় ৪১%ভাগ এর সাথেই জড়িত। ।
জার্মানীর মার্কেল যত কথাই বলুক না কেন তার ৬০%গ্যাসের যোগানদাতাসহ ২০বিলিয়ন ইউরো খাটছে এই রাশিয়াতেই। ইংল্যান্ডের রাজধানী লনডনর প্রপার্টি ব্যাবসায় ৫০০মিলিয়ন পাউন্ডের অংশিদারও এই রাশিয়া।

বিশেষজ্ঞদের মতে এই বানিজ্য অবরোধে ইংল্যান্ডের যোগ দেয়া ঠিক হবে না। তাহলে প্রায় অচল হয়ে পড়বে প্রোপার্টি ব্যাবসা।
বর্তমান রশিয়া সেই গরভাচভের রাশিয়া নয় আর। বিভক্তির পর থেকেই দেশটি ধীরে ধীরে নিজের শক্ত-সামর্থ বাড়িয়ে তুলছে। মিত্রও আছে।

বিশেষ করে ল্যাটিন আমেরিকায়। সাথে যোগ দিয়েছে বিভিন্নভাবে পর্যুদস্ত চীনও। ফলে পশ্চিমাদের প্রবল বরোধীতা সত্বেও শায়েস্তা করা যায় নি সিরিয়া বং ইরানকে। বরং হাটতে হচ্ছে সন্মানজনক পশ্চাদাপসারনের। আর আসাদ সরকার তার ডিফেন্সিভ রোল থেকে বেড়িয়ে আক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে প্রকাশ করেছে।

মাঝখান থেকে রক্ত ঝড়ছে,ভুগছে নারী ও শিশুরা।
তাই বলে পাঠকগন ভেবে বসবেন না যেন আমি রাশিয়া,সিরিয়া বা ইরানের গুনগান গাইতে বসছি। আমি শুধু এটাই জানাতে চাই যে,দ্বিমুখীনীতি নিয়ে বেশীদিন চলা যায় না। আর আমদের দাবার গুটি বানিয়ে পরাশক্তিগুলি ব্যস্ত তাদের প্রভাব বিস্তারের যে মহরা দিচ্ছে তা প্রমান করা। আমাদের নাকের সামনে ধরা আছে মুলার আটি।

ফলে শোষন-শাসন আর নির্যাতিত হওয়াই আমাদের লিখন। আমরা কি আমাদের উত্তরপুরুষদের জন্য একটু নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যাবস্থাও করে যেতে পারবো না??াযারা পড়ে যেন বলতে না পারে আমাদের পূর্বপুরুষরা ছিলো গাধা। যাদের সামান্যতম দেশপ্রেম ও রাজনৈতিক জ্ঞানও ছিলো না।
ইতিহাস কিন্তু কোনকিছুকেই ক্ষমা করে না আর করবেও না।



বিদ্রঃ পরিসংখ্যানগুলি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা থেকে সংগৃহিত।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.