আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিন ওসির দাপটে ভোটারশূন্য ভোটকেন্দ্র

আজ বেলা পৌনে ১১টায়। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাঁড়ি কামিল মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে শ দুয়েক নারী লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় পুলিশের দুটি গাড়ি এসে থামে মাদ্রাসার গেটে।

গাড়ি থেকে নামলেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক, কালীগঞ্জ থানার ওসি গোলাম রহমান, শালিখা থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ। তাঁদের সঙ্গে নামলেন লাঠি-রাইফেল হাতে ১০ জন পুলিশ কনস্টেবল।



ভোটারদের সামনে গিয়ে তিন ওসি জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোরা ৫ জানুয়ারি ভোট দিয়েছিস। ’ উত্তরে ভোটাররা বলেন, ‘না’। সঙ্গে সঙ্গে ওসিদের পাশে থাকা কনস্টেবলরা লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যান ভোটারদের দিকে, আর চিত্কার করে বলেন, ‘ভাগ, ৫ জানুয়ারি ভোট দেয়নি। এখন আইসে ভোট দিতি। ’

কয়েকজন কনস্টেবল আবার রাইফেলের বাঁট দিয়ে পেটাতে লাগলেন ভোটারদের।

এ সময় শুরু হয় তাঁদের দিগ্ব্বিদিক ছোটাছুটি। কেন্দ্রে থাকা সাংবাদিকদেরও ধমক দেন পুলিশ সদস্যরা। বাধা দিয়ে তাঁরা বলেন, ‘তোরা ছবি তুলবি না। ’

ধাওয়া খেয়ে খানিকটা দূরে গিয়ে সংগঠিত হন ভোটাররা। চিত্কার করতে থাকেন।

পালপাড়ার করুণা রানী সিংহ, সুরাইয়া খাতুন অসহায় ভঙ্গিতে বলতে থাকেন, ‘ভোট দিতি দিবে না, তো আসতি বললি ক্যান? রাজার ভোটে (৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন) জামাতিরা ভোট দিতি দেয়নি। আর এবার দিল না পুলিশ। ’

গত ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে আগরদাঁড়ি কামিল মাদ্রাসার এই কেন্দ্রে একটি ভোটও পড়েনি। তবে ভোটারদের তাড়িয়ে দেওয়া হলেও আজ বেলা ১১টায় দুই হাজার ৩৪৯ ভোটের মধ্যে ৬০০ ভোট পড়েছে।

কয়েকজন ভোটার অভিযোগ করেন, গতকাল রাতেই পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলা হয়েছে।



জামায়াতে ইসলামীর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই এলাকায় তাই সকাল থেকেই আতঙ্ক ছিল। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় দেওয়ার পর এই আগারদাঁড়ি থেকে পুরো সাতক্ষীরা জেলার সহিংস কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ করা হতো। এ কারণে ভয়ে কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং অফিসার আবদুল মালেক হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁর বদলে দায়িত্ব পালন করছেন সারওয়ার হোসেন।

পাশের আগরদাঁড়ি মহিলা মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকেও একইভাবে ভোটারদের তাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।



প্রথম অলো... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।