আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেনার ভয়ে ঘরছাড়া সহস্রাধিক আলুচাষি

লালমনিহাটে আলু আবাদ করে সর্বস্বান্ত হয়েছেন প্রায় সহস্রাধিক আলু চাষি। ধার-দেনা পরিশোধ করতে না পেরে এখন তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এর মধ্যে দেনার ভার সইতে না পেরে জেলার দোলাপাড়া গ্রামের আবদুল করিম (৪৬) নামের এক কৃষক আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিন হাজার ৪০০ হেক্টর বেশি জমিতে আলু আবাদ হলেও দাম কমের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, লালমনিরহাটের সবচেয়ে লাভজনক ফসল হচ্ছে আলু আবাদ।

এ কারণে অনেক বেকার যুবক প্রতি বছরই ধার-দেনা করে অন্যের জমি লিজ নিয়ে আলু আবাদ করেন। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আলুর দাম কম হওয়ায় লাভ তো দূরের কথা তারা খরচের টাকাও তুলতে পারেননি। পাওনাদারের ভয়ে এখন অনেক যুবক বাড়িছাড়া। কথা হয় লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা এলাকার যুবক শান্তর সঙ্গে।

তিনি জানান, গত বছর আলু আবাদ করে লাভের জমানো ৫০ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন জনের কাছ থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা ধার করে এবার লিজ নেওয়া অন্যের ৬ দোন (এক দোন ২৪ শতক) জমিতে আলু আবাদ করেন। তিনি প্রতি দোন জমি শুধু এক সিজনের আলু আবাদের জন্য লিজ নেন পাঁচ হাজার টাকায়। ৬ দোন জমিতে তার জমি নেওয়া, বীজ, সার, পানি দেওয়া, ওষুধসহ আলু তোলা পর্যন্ত সব মিলে খরচ পড়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ওইসব জমিতে তিনি আলু পান ১৮০ বস্তা। প্রতি বস্তা (৮৪ কেজি) আলু বিক্রি করেছেন ১৫০ টাকা থেকে ২১০ টাকা করে।

এতে তার লোকসান হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। এখনো সার এবং ওষুধের দোকানে তার নামে বকেয়া রয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। আলু তোলার সময় দাম ছিল প্রতি বস্তা ৫৪০ টাকা। এ কারণে সে সময় আলু বিক্রি না করে বাড়িতেই রেখেছেন বেশি দামে বিক্রির জন্য। কিন্তু এখন প্রতি বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।

তাও বিক্রির লোক পাওয়া যাচ্ছে না। জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলায় এবার ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আলু আবাদ হয়েছে প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে। ফলন ভালো হলেও দাম কমের কারণে মার খাচ্ছেন কৃষক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা গতকাল এ প্রতিবেদককে জানান, যারা ধার করে টাকা নিয়ে আলু চাষ করেছেন, তাদের অনেকেরই ব্যাপারে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। একজনের আত্মহত্যার খবরও তাদের কাছে রয়েছে বলে নাম না প্রকাশ করার শর্তে ওই কর্মকর্তা স্বীকার করেন।

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।