আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলাদেশ

উৎসবের আমেজ চারিদিকেই। স্টেডিয়ামের ভেতরে কী বাইরে, সর্বত্রই একটা অন্যরকম উচ্ছ্বাস! কাল মিরপুরের চিত্র দেখে বোঝার উপায়ই ছিল না যে ফাইনালে লড়াই করলো দুই ভিন্ন দেশ। ছক্কা-চার কিংবা প্রতিটি উইকেট পতনে গ্যালারির উš§াদনা দেখে মনে হচ্ছিল, মাঠে যেন টাইগাররা খেলছেন। মুশফিকরা হতাশাজনক থেকে বিদায় নেওয়ায় সমর্থকরা কষ্ট পেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তারপরেও বিশ্বকাপের উত্তেজনায় কোনো ভাটা পড়েনি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত টি-২০ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরকে নেচে গেয়ে দর্শকরা যেন অবিস্মরণীয় করে রাখলেন।

ক্রিকেটপাগল বাংলাদেশি দর্শকদের উম্মাদনা দেখে অভিভূত আইসিসি। ম্যাচ কাভার করতে আসা বিদেশি সাংবাদিকেরাও মুগ্ধ। একদিন আগে মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেছেন, ‘ক্রিকেট বিশ্বে এমন দেশ আর নেই, যেখানে নিজের দল না থাকার পরও গ্যালারি ভর্তি এবং তারা প্রতিটি ছক্কা-চারে উৎসবে মেতে ওঠে। বাংলাদেশে এমন উৎসব মুখর পরিবেশ দেখে মুগ্ধ আইসিসি।

সফলভাবে আয়োজন করতে সহযোগিতা করার জন্য দর্শকরা আমাদের দারুণ সহযোগিতা করেছেন। সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। ’ সফল আয়োজনের জন্য বিসিবিকে অভিনন্দন জানিয়েছে আইসিসি। কাল প্রকৃতিও যেন অভিনন্দন জানাল বাংলাদেশকে। দুপুরে যখন মেয়েদের ফাইনাল চলছিল তখন ভ্যাপসা গরম।

ঠিক ম্যাচ শেষ হওয়ার পর পরই বৃষ্টি। তারপর আবার ছেলেদের ফাইনাল শুরুর আগেই থেমে যায়। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির পর দারুণ এক শীতল পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো ফাইনাল। পর্দা নামল সফল এক টুর্নামেন্টের। অথচ মাস তিনেক আগেও বাংলাদেশে টি-২০ বিশ্বকাপ হবে কিনা তা নিয়ে ছিল ঘোর অনিশ্চয়তা।

রাজনৈতিক অস্থিরতায় চারিদিকে যখন পেট্রোল বোমা, ককটেল ফুটছিল খুবই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন ক্রিকেটপাগল সাধারণ মানুষ। টিম হোটেলের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ হওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূর্ধ্ব-১৯ দল যখন দ্রুত বাংলাদেশ সফর বাতিল করে চলে যায় তখন যেন শোকে মুহ্যমান হয়ে যায় দেশবাসী। তারপর এশিয়া কাপ হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আর এশিয়া কাপ বাতিল হওয়া মানে টি-২০ বিশ্বকাপও শেষ! তাছাড়া পাকিস্তানের না আসার সিদ্ধান্ত দেশবাসীর হতাশা বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গত ৪ জানুয়ারি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল বাংলাদেশে এশিয়া কাপ আয়োজনের সিদ্ধান্তে অটল থাকে।

সেই ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল টি-২০ বিশ্বকাপ। আর কাল ফাইনাল ম্যাচের মধ্য দিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসের নতুন অধ্যায়ে জায়গা করে নিল বাংলাদেশ। এর আগে কখনো এতো বড় কোনো প্রতিযোগিতার ফাইনাল হয়নি এদেশে। ২০১১ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েছিল বাংলাদেশ। জমকালো উদ্বোধন করে ক্রিকেটবিশ্বকে তাক লাগিয়ে ফাইনাল হয়েছিল ভারতে।

এর আগ পর্যন্ত সেটিই ছিল সবচেয়ে বড় ঘটনা। কিন্তু এবার এককভাবে সফলতার সঙ্গে উৎসবমুখর পরিবেশে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের মধ্য দিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে নাম লিখল বাংলাদেশ। ক্রিকেটের বড় ইভেন্টের ফাইনাল বলতে ১৯৯৮ সালের নক-আউট ট্রফির কথা আসে সবার আগে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এছাড়া চার চারবার এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচের কথাও আলোচনায় আসে।

১৯৮৮ সালে এশিয়া কাপ দিয়ে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনে অভিষেক হয়েছিল। আর গতকাল টি-২০ বিশ্বকাপের সফলভাবে পর্দা নামাতে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে আরও একবার সুনাম কুড়ালো বাংলাদেশ।  

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.