আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আঁঁকিয়ে বুশ এক নির্ভেজাল নকলনবিশ!

ছবি এঁকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ শিল্প-মাধ্যমের মানুষসহ অনেককেই তাক লাগিয়ে দিলেও এ নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন শিল্প সমালোচকেরা। তাঁদের দাবি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, বুশ বিশ্বনেতাদের যে ৩০টি পোর্ট্রেট করেছেন সেগুলোর বেশির ভাগই গুগল ও উইকিপিডিয়া থেকে নেওয়া ছবির নকল-নবিশি। সমালোচকেরা এ-ও বলছেন, বুশের ছবি আঁঁকার হাত যেমনই হোক, ইন্টারনেট ব্যবহারে তিনি খুবই দুর্বল। দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

শিল্প সমালোচকেরা বলছেন, বুশের আঁঁকা ছবি দেখে এটা স্পষ্ট যে, তিনি যেসব বিশ্বনেতার মুখচ্ছবি এঁকেছেন, তাঁরা ছবি আঁঁকার সুযোগ দিতে বুশের সামনে বসেননি বা বুশ নিজ উদ্যোগে তাঁদের কোনো ছবিও তুলে রাখেননি।

বরং ওই বিশ্বনেতাদের নাম লিখলে গুগলে প্রথম যে ছবিগুলো আসে, সেগুলো থেকেই ছবি এঁকেছেন বুশ। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, গুগল সার্চে ভেসে ওঠা প্রথম ছবিটিই এঁকেছেন তিনি।

শিল্প সমালোচক গ্রেগ অ্যালেন তাঁর নিজের ব্লগে বুশের ছবি আঁঁকা নিয়ে এক লেখায় দেখিয়েছেন বিশ্ব নেতাদের অনেকের ছবিই উইকিপিডিয়ায় তাঁদের সম্পর্কে লেখার সঙ্গে থাকা ছবির হুবহু নকল আর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার এবং অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ডের ছবিগুলো গুগল থেকে নেওয়া।

গ্রেগ অ্যালেন লিখেছেন, ‘আট বছর ধরে দুনিয়ার এত এত জায়গায় ঘুরে ঘুরে আলোকচিত্রীরা বিশ্ব নেতাদের যে শত শত ছবি তুলেছেন, সেগুলোতে বুশের বিশাল সংগ্রহশালা ভরা থাকার কথা। কিন্তু সেখান থেকে ছবি না নিয়ে বুশ সার্চ ইঞ্জিন থেকে ছবি নিয়েছেন এবং সেটাও এত নির্বিচার বাছাইয়ের মাধ্যমে যে সার্চে আসা প্রথম ছবিটিই তিনি ব্যবহার করেছেন।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বুশের স্টুডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট খুবই অলস। ’

গুগল এবং উইকিপিডিয়ার ছবির সঙ্গে বুশের আঁঁকা বিশ্ব নেতাদের মুখচ্ছবির এত বেশি মিল যে, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বুশ ছবিগুলো বড় আকারে প্রিন্ট করে নিয়ে সরাসরি ট্রেসিং করে পোর্ট্রেটগুলোর আউটলাইনের ছাপ নিয়েছেন ক্যানভাসে। তারপর রংতুলি নিয়ে ছবি দেখে দেখে সেগুলো রং দিয়ে ভরিয়েছেন মাত্র। ব্যস, এটাই বুশের চিত্রকর্ম!

৪৩তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের চিত্র প্রতিভার বিষয়ে অবশ্য এত দিন ধরে অনেকটাই নিশ্চুপ মূলধারার শিল্প সমালোচকেরা। কেউ কেউ অবশ্য বুশের এই ছবি আঁঁকাকে ‘অপরিশীলিত’ বলে মন্তব্য করেছেন।

আর কেউ কেউ বলেছেন, বুশের ছবিগুলো ‘নিষ্প্রাণ’।

অবশ্য, নিউইয়র্ক টাইমস-এর শিল্প ভাষ্যকার রবার্টা স্মিথ যথেষ্টই উদার হয়ে লিখেছেন, ‘আলোকচিত্রকে চিত্রকর্মে পরিণত করার বিষয়ে মিস্টার বুশের একটা অস্বাভাবিক সক্ষমতা আছে, কিছুটা অপটু ব্রাশের কাজের মাধ্যমে বাস্তবতাকে ভেঙে দিয়ে অন্যরকমভাবে ছবিকে জ্যান্ত করে তুলেছেন তিনি। ’

কিছুদিন আগে প্রকাশিত নিউইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে রবার্টা স্মিথ আরও লিখেছেন, ‘তাঁর এই দক্ষতা হয়তো যাঁরা চিত্রকর্ম ভালোবাসেন কিন্তু সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশকে অপছন্দ করেন তাঁদের বিব্রত করছে। কিন্তু তবুও সবারই উচিত এগুলোতে একবার নজর বুলান। বিশেষত শিল্প-জগতের যাঁরা এমনকি একবার না দেখেও এগুলো বাতিল করে দিচ্ছেন তাঁদের।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.