আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিরপুরঃ এ কোন মগের মুল্লুক!!

আমি কিছু বলতে চাই ঘটনা-১ নিজেদের পিতৃভূমিতে ভালোই ছিল চাকুলী এলাকার হিন্দু পরিবার গুলো। সব মিলিয়ে শতাধিক পরিবার। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নিজেদের বাড়ী-ঘর, জায়গা জমিতে সুখেই বসবাস করছিল তারা। তেমন কোন অভাব ছিলনা, ছিল সচ্ছলতার ছোঁয়া। কিন্তু তাদের এই সুখ সইলো না বেশি দিন।

শুরু হলো চেনা অচেনা নানা রাক্ষসের আনাগোনা। লোলুপ দৃষ্টি পড়লো সহজ সরল হিন্দুদের বাড়ি ঘর, জায়গা জমির উপর। জনৈক জহিরুল ইসলাম নামক কোন একজন ব্যক্তি তার ভিতরের বীভত্স রূপ সযত্নে ঢেকে দয়ালুর মুখোশ পরে হাজির হলো। শুরু হলো নানা প্রলোভন, সাহায্য এবং সহায়তার আশ্বাস আর দিনের দিন, রাতের রাত গাড়ি ভরে অচেনা লোকদের নিয়ে আনাগোনা। ভীতসন্ত্রস্ত এই সকল হিন্দুরা এদের কাওকেই চিনেনা, শুধু চিনে জহিরুল ইসলাম সাব কে।

নানা প্রলোভন আর সহায়তার আশ্বাস দিয়ে তাদের বোঝানো হোল এসব পেতে হলে এর জন্য দস্তখত দিতে হবে। অবশেষে এলাকার তৎকালীন চেয়ারম্যান এর সহায়তায় শুরু হলো সাদা কাগজে দস্তখত আর টিপসই নেয়া। তারা যত না সাহায্যের আশায় তার চেয়ে বেশি ভয়েই সাদা কাগজে টিপসই দিয়ে দেয়। আর এভাবেই রাতের অন্ধকারে তাদের বাপদাদার ভিটা, জায়গা জমিন সব হাতছাড়া হয়ে গেল, লেখাপড়া না জানা অভাগারা সেটা জানতেও পারলো না। নিজেদের জায়গায় নিজেরা হয়ে গেল অবৈধ।

পরবর্তীতে সরকার ওই সব জমি এ্যাকোয়ার করলে তারা উচ্ছেদ হয় তাদের ভিটা থেকে। হয়ে যায় বাস্তুহারা। আজ তারা সহায় সম্বলহীন, মাথা গোঁজার ঠাই নেই। কোথাও কুঁড়ে বানিয়ে থাকা শুরু করলে কিছুদিন পর উঠিয়ে দেয়া হয়, আবার অন্য কোথাও কুঁড়ে বানিয়ে থাকে, সেখান থেকেও আবার উঠিয়ে দেয়া হয়। এভাবেই পার হচ্ছে তাদের দিন, মাস, বছর এবং যুগ।

এখন তারা যেখানে আছে, শুনলাম নোটিশ দেয়া হয়েছে, সামনে জানুয়ারি তে তাদের আবার উচ্ছেদ করা হবে। আজ তাদের বুক ভরা হাহাকার, এরপর কোথায় যাবে তারা! ঘটনা-২ স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মিরপুরে এই হিন্দুদের জমি যেভাবে দখল হল, আজ স্বাধীনতার ৪১ বছর পর এখনও অবৈধ ভাবে জমি দখল প্রভাবশালী মহলের নিয়মে পরিনত হয়েছে। শুধু ধরনটা একটু ভিন্ন। আগে নিয়েছে ছল চাতুরী করে , এখন তার জায়গায় যোগ হয়েছে প্রভাব আর গায়ের জোর। মিরপুরের বাউনিয়া এলাকা।

এখনো অনেক খানি এলাকা জুড়ে পানি জমে থাকে, অনেকটা বিল এর মত। সেই জায়গার উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে একটি মহল এর। আশেপাশে সামান্য কিছু জমি কিনে পুরো এলাকা জবর দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে বি এন পি এবং আওয়ামী লীগ উভয় সরকারের সময়ই অত্যন্ত ক্ষমতাশালী একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। মিরপুরে যাদের ব্যবসায়িক এবং পারিবারিক প্রভাব ও আধিপত্য অত্যন্ত প্রবল, শুধু মাত্র অর্থ ও রাজনৈতিক কারনে। বড় দুই দলেই রয়েছে তাদের শক্ত খুটি।

আমি নাম বললেই সবাই চিনতে পারবেন। সেই জায়গার যারা আসল মালিক, তাদের জন্য সেখানে জমি ক্রয় বিক্রয় কিংবা মাটি ভরাট করে বাড়ি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। এই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান টি বিভিন্ন ঝামেলা সৃষ্টি করে, ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তাদের কে বাধা প্রদান করে। কেউ পাইপ দিয়ে বালু ভরাট করতে চাইলে রাতের অন্ধকারে তা খুলে চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এমন কি লোকজন নিয়ে এসে মারধর করা হয়।

কিন্তু কেউ এ ব্যাপারে মামলা করা তো দূরের কথা, থানায় জিডি করারও সাহস পায়না। কিন্তু ইতোমধ্যে তারা নিজেদের জমির সাথে আশেপাশের অন্যান্য জমি ভরাট করে অবৈধ দখল করে ফেলেছে। আমার কথাঃ উপরের ঘটনা দুইটি আমার কোন অনুমান নির্ভর লেখা নয়। হিন্দুদের দূরাবস্থার কথা আমার তাদের নিজেদের মুখে শোনা ও বর্তমান অবস্থা নিজের চোখে দেখা, পরবর্তী টাও তাই। কোন সাংবাদিক ভাই যদি লেখাটা পড়ে থাকেন, খোঁজ নিয়ে দেখবেন, এগুলো সত্য নাকি মিথ্যা।

পারলে মিডিয়া তে প্রচার করবেন। আমার ব্যর্থতা, আমি নাম উল্লেখ করা সহ ঘটনার বিষদ বিবরন দিতে পারলাম না, হোক সেটা ভয়ে কিংবা ব্লগের নিয়মের কারনে। এই ঘটনা দুটিই শেষ নয়, প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা এখন সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে, এমন কি গ্রাম-গঞ্জেও ঢুকে পড়েছে। গ্রামের মানুষেরও আজ নিস্তার নাই। আর সব কিছুর সাথে জড়িয়ে আছ রাজনীতির প্রভাব।

সবাই জানে এরা কারা, কিন্তু কেউ কিছু বলছে না। রাজনীতির এমনই খেলা, এসব দেখার কেউ নেই। এই হল স্বাধীন বাংলাদেশ। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.