আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লোনলি এডাম এন্ড হেভেনলি ব্রায়ান....

একটা মেয়ের একটু কথা। মাম্মা তুমি আজ পাবে যেও না। আজ আমার সাথে ঘুমাও না মাম্মা! ডিয়ার আমাকে তো যেতেই হবে। আমি ওখানে জব করি যে। না গেলে কিভাবে হবে? নো মাম্মা প্লিজ ডোন্ট গো! মাম্মা লাভ ইউ ডিয়ার।

ঝুঁকে পড়ে ব্রায়ানের কপালে আলতো একটা চুমু খায় তার মা। লাভ ইউ টু মাম্মা। বলে অভিমানি ব্রায়ান ব্লাংকেটের নীচে মুখ লুকায়। প্রতিদিনের মতো মাম্মাকে গুডনাইট হাগ করে না আজ। তার মা বোঝে, কিন্তু তার কিছু করার নেই।

পাবের জবটা বেশ ভালো পোষাচ্ছে তার। এটা ছাড়লে নতুন জব পেতে পেতে কয় মাস যায় সেটা ক্রাইস্টই জানেন। দীর্ঘশ্বাস গোপন করে সে বাতি নিভিয়ে দেয়। পাবের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ব্রায়ানের খানিকটা খারাপ লাগে।

মাম্মাকে সে ভীষন ভালবাসে। গুডনাইট হাগ না করার জন্যে কাল মাম্মাকে স্যরি বলবে বলে সে ঠিক করে। সাথে একটা লেটার ও লিখবে মাম্মাকে। ছোট্ট ব্রায়ান ঘুমিয়ে পরে। ঘুমের মাঝে সে স্বপ্নে দেখে ক্রিসমাসে তারা খুব মজা করছে, মাম্মা তার জন্যে অনেক গিফট এনেছেন, ব্রায়ানকে পিঠে করে ছোটছুটি করছেন মাম্মা।

ব্রায়ান ঘুমের মধ্যে হাসে। শিশুর পবিত্র হাসি। এমন স্বপ্ন এডাম ও দেখে। সে দেখে সে আবার ছোট হয়ে গেছে। ক্রিসমাসের দিন ভাই রাইয়ান আর মাম্মার সাথে খুব মজা করছে।

সে ভাইয়ার গিফট নিয়ে ছুট দিয়েছে আর ভাইয়া তার পিছনে দৌড়াচ্ছেন। দুজনেই বেশ আনন্দ পাচ্ছে। কিন্তু এমন স্বপ্ন সে প্রতিদিন দেখে না। কারণ স্লিপিং পিল খেয়ে ঘুমানোর পর না ঘুম না জাগরণ জগতে তাকে চলে যেতে হয়। ওখানে দুঃস্বপ্ন তাড়া করে তাকে।

সে ভীষন আবেগী, অন্তর্মূখি এবং জেদি। সবাই তাকে ডাকে লোনলি এডাম। লোনলি এডামের খুব রাগ সবার উপর। মাম্মার উপর, ভাইয়ার উপর, ড্যাডির উপর সারা পৃথিবীর উপর। সে মাম্মাকে কখনও শান্তি দেয় না।

সে নিজে অশান্তিতে তাই সে ঠিক করেছে কাওকেই শান্তি দিবে না। অল দ্যা হিউম্যান আর সেলফিস সো হোয়াই নট মি? লোনলি এডামকে কেউ পছন্দ করে না। মানুষের ঘৃণার সাথে বসবাস করে সে অতিষ্ঠ। এডাম মাম্মার স্টাডি রুমে চলে আসে। এখানে মাম্মার সংগ্রহের পাঁচটি অস্ত্র আছে।

এডামের একমাত্র বন্ধু হলো এই গান গুলো। তার মন যখন খুব বিক্ষিপ্ত থাকে তখন সে এখfনে আসে। প্রতিটি গান ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে। সবচেয়ে ভাল লাগে হ্যান্ড গান আর অটোমেটিক রাইফেল। মায়ের সাথে শুটিং স্পটে গিয়ে গিয়ে সে হাত পাকিয়ে ফেলেছে।

সে প্রিয় অস্ত্র গুলোতে হাত বোলাতে থাকে। সাথে সাখে তা মাথায় যেন বিদ্যুত খেলে যায়। সে বুঝে যায় কি করলে তার মনের ক্ষোভ মিটবে। ম্যাজিকের মতো তার অশান্ত মন শান্ত হয়ে যায়। মুখের পেশী গুলো টানটান হয়ে আসে।

চোখে এক অন্য ধরনের দৃষ্টি চলে আসে। সে দৃষ্টি কিছুটা ক্রুর, কিছুটা আশ্চর্য ভাবে শান্ত। সে অনেক দিনে পর কিচেনে যায়। মাম্মার প্রিয় মিক্সডফ্রুট স্যালাড বানাতে থাকে। এর স্টাফিংটা এডাম খুব ভালো পারে।

রাইয়ানের কাছ থেকে শিখেছে। সে গভীর মনোযোগ দিয়ে স্যালাড সাজাচ্ছে। কিন্তু তার অবতেন মন অন্য এক পরিকল্পনায় লিপ্ত। ন্যান্সি এডামকে অবাক হয়ে দেখে। আনন্দে তার চোখে পানি আসার উপক্রম হয়।

এডাম ডিয়ার তুমি স্যালাড বানাচ্ছো! ইয়াপ্ মাম্মা। তোমার ফেভারিট। আই লাভ ইউ মাই চাইল্ড! এডাম শান্ত মুখে হাসে। ডিনারে ন্যান্সি এডামকে দেখে আরো খানিকটা অবাক হয়। এডাম শেভ করেছে, চুল আঁচড়েছে, ভালো কাপড় পড়েছে।

কিন্তু তার চোখের শিরা গুলো কিভাবে লাল হয়ে ফুলে উঠছে সেটা ন্যান্সির চোখে পড়ে না। ন্যান্সি ঠিক করে কাল এডামকে নিয়ে ড্রাইভে যাবে। মাম্ গুডনাইট এন লাভ ইউ। গড ব্লেস ইউ মাই সান। গুডনাইট।

এডাম দরজা লাগিয়ে দেয়। কিন্তু সে ঘুমায় না। সে দুটি হ্যান্ড গান আর অটোমেটিক রাইফেল তার ব্যাকপ্যাকে ঢোকায়। সাথে নাইফ, একটা নাইলনের রোপ ঢুকিয়ে সে ঠায় বসে থাকে বেডের উপর। অন্ধকার রুমে সে নিজেকে দেখলে নিজেই ভয় পেত।

তার মুখের পেশী শক্ত হয়ে আছে। চোখ দুটি বিস্ফোরন্মুখ। পুরো দেহ কিসের উত্তেজনায় যেন টানটান হয়ে আছে। সে শেষ রাতের দিকে রুম থেকে বের হয়। মাম্মা তার রুমের দরজা কখনই লাগায় না।

সে শব্দ না করে খোলে। মাম্মার ঘুম খুব পাতলা। সামান্য শব্দেও জেগে উঠেন। এবারও জেগে উঠলেন। কিছু বলতে গিয়েও এডামের ভয়ঙ্কর মুর্তি দেখে থেমে যান।

সে হ্যান্ডগানটা মাম্মার দিকে তাক করে। বুলেটের নিখুত নিশানা লাগে মায়ের কপালে। ন্যান্সি চিৎকারটুকু করার সময় পায়নি। সি মম ইওর সান ক্যান শ্যুট বেটার দেন ইউ! সে বেড়িয়ে পড়ে। তার দেহমনে এক অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে।

সে আরো মানুষকে মারতে চায়। মৃত্যুর আগে তার মা কেমন ভ্যাবাচেকা খেয়ে গিয়েছিল সেটা মনে হয়ে সে অসুস্থ এক আত্মতৃপ্তি পায়। কিন্ত সে সন্তুষ্ট না। আরো মৃত্যুভয়ে ভীত মুখ সে দেখতে চায়। ব্রায়ান ঘুম থেকে ওঠে দেখে মাম্মা তার ব্রেকফাস্ট সাজিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন।

ছোট্ট ব্রায়ান মাম্মার গালে আলতো করে চুমু খায়। তারপর ব্রেকফাস্ট করে নেয়। বোরিং কর্ণফ্লেকস মজা করে খায়। সে তারপর আপেল জুসটা খেয়ে নেয়। আজ মাম্মাকে সে জাগিয়ে দেবে না।

লক্ষী হয়ে থাকবে। সে গ্রান্ডমার সাথে স্কুলে যায়। যাবার আগের মাম্মার দিকে একপলক দেখে নেয়। স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুল। ব্রায়ান এখানে পড়ে।

সে ক্লাসে যায়। মাম্মাকে সে লেটার লিখতে বসে। কিন্তু গুছিয়ে লিখতে পারছে না। তবুও চেষ্টা করতে থাকে। এমন সময় এডাম স্কুলটিতে ঢোকার চেষ্টা করছে।

সে শান্ত ভাব নিয়ে স্কুলটিতে ঢোকে। অনেকে তাকে অবাক হয়ে দেখে। এডাম শান্ত ভাব ধরে রাখে। সে জানে তাকে কি করতে হবে। একজন টিচার তাকে জিজ্ঞেস করলেন হেই বয় তুমি এখানে কি করছো? আচমকা এডাম অটোমেটিক রাইফেলটি বের করে গুলি ছুড়তে থাকে।

টিচারটি মারা যান। এডাম পাগল হয়ে যায়। সে পাশের ক্লাসটিতে ঢুকে পড়ে। পাগলের মতো গুলি চালাতে থাকে। ব্রায়ান সে ক্লাসে ছিল।

ব্রায়ান সিটের নীচে লুকিয়ে পড়ে। তার পাশের টিমিয়ার গায়ে গুলি লেগে মেয়েটা একদম উড়ে গিয়ে পড়েছে। ছোট্ট জীবনে এই ঘটনা তার কাছে অস্বাভাবিক। কিন্তু সে নোটবুকে পাগলের মতো লিখতে থাকে। তার মাম্মার কাছে চিঠিটি।

এডাম এই ক্লাসের প্রায় ১৫ / ২০ জনের মতো হত্যা করে। তার মন তবুও শান্ত হয় না। এলোপাথারি গুলি ছুড়তে থাকে। হয়তো বাইরে পুলিশ এসে গিয়েছে। সে শেষবারের মতো এক পশলা গুলি ছুড়ে।

তারপর হ্যান্ডগানটি নিজের মাথায় ধরে একটি মাত্র গুলি চালায়। এই একটি বুলেটই তার অতৃপ্ত জীবনের সকল যন্ত্রনার অবসান ঘটায়। তার দেহটি লুটিয়ে পড়ে। প্রেস রিলিজ: ১৪ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটে নিউটাউন শহরে স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলে এডাম ল্যানজা নামক কুড়ি বছরের এক ছেলে এলোপাথারি গুলি চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করেছে। নিহতের মধ্যে ২০ জনই শিশু।

পরে এডাম নিজের মাথায় গান ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করে। ধারনা করা হচ্ছে স্কুলে হামলার আগে সে তার মা ন্যান্সি ল্যানজাকেও হত্যা করেছে। এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ঘটনাস্থল থেকে ব্রায়ানের চিঠিটা উদ্ধার করা হয়। এলোমেলো হাতে সে লিখেছিল ‘আই লাভ ইউ মাম্মা।

আই এম ফাইন। স্যরি ফর নট বি এ গুড সান। নাউ আই এম সো হ্যাপি দেন এভার। আই উইল লাভ ইউ ফ্রম হ্যাভেন। ব্রায়ান।

’  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।