আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাপাতিই আমার প্রিয় (বিশ্বজিত হত্যাকান্ডের অন্যতম কিলার চাপাতি শাকিলের বক্তব্য)

ছুরি, পিস্তল ভাল লাগে না। চাপাতিই আমার প্রিয় অস্ত্র। এটি হাতে নিলেই গায়ে শক্তি আসে। লোকজনও বেশি ভয় পায়। গতকাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়েছে রফিকুল ইসলাম শাকিল ওরফে চাপাতি শাকিল।

এদিকে বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও চারজনকে শনাক্ত করে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরা হচ্ছে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের কাইয়ুম মিয়া টিপু, রসায়ন বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের রাজন তালুকদার, ইতিহাস বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের সাইফুল ইসলাম ও জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন। অন্যদিকে বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডস্থলে পুলিশের গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার। বুধবার রাতে তিনি একটি ফ্যাক্স বার্তায় ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদকে এ নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। ওই নির্দেশনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে।

বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের গাফিলতি এবং নিহতের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে দায়িত্বে অবহেলা ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, আইজিপির নির্দেশনা পেয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত (গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা) তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। কমিটি গঠন হওয়ার পর জানিয়ে দেয়া হবে। এদিকে গতকাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বিশ্বজিৎ দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১২ই ডিসেম্বর সাবেক ও বর্তমান ৫ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে সাবেক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান নাহিদ ও ইমদাদুল হকের সনদ বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে রফিকুল ইসলাম শাকিল, মীর মো. নূরে আলম ও ওবাইদুল কাদেরকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। বর্তমানে মাহফুজুর রহমান নাহিদ, রাশেদুজ্জামান শাওন, কাইয়ুম মিয়া টিপু, সাইফুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম শাকিল ওরফে চাপাতি শাকিল গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। বাকিরা পলাতক।

বহিষ্কৃত কাইয়ুম মিয়া টিপু সাভারের শোভাপুর গ্রামের মো. মিজানুর রহমানের ছেলে। রাজন তালুকদারের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কেশবপুর গ্রামে। তার পিতার নাম সুষেণ চন্দ্র তালুকদার। সাইফুল ইসলামের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদীর চন্দনবাড়ী গ্রামে। তার পিতার নাম মো. আবদুল হাই।

আর শাওন খুলনার পাইকগাছার নাছিরপুর গ্রামের জি এম লুৎফর রহমানের ছেলে। গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, হেফাজতে থাকা আসামিদের সবাই বিশ্বজিতের ওপর হামলার কথা স্বীকার করেছে। আজ-কালের মধ্যেই তাদের আদালতে হাজির করা হবে। গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল জানায়, জবিতে ভর্তির আগে কোন ছাত্র রাজনীতি করতো না। রাজধানীর ইমপেরিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে।

এরপর ছাত্রলীগ নেতাদের মাধ্যমে তদ্বির করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তখন থেকেই ছাত্রলীগের গ্রুপ পলিটিক্সে জড়িয়ে পড়ে। প্রথম বর্ষ অতিক্রম করার পরই তার হাতে পিস্তল দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই অস্ত্র তার ভাল লাগেনি। রড, চাকুতেও মন বসেনি।

কেবল চাপাতিই তার মন কেড়েছে। এটি নিয়ে ঘুরে বেড়াতে তার ভীষণ ভাল লাগে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদারক কর্মকর্তা ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, শাকিলের মানসিকতা হিংস্র প্রকৃতির। নৃশংসতার প্রতি প্রবল আকর্ষণ রয়েছে তার। এটি মানসিক সমস্যার কারণে হতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ৯ই ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর জজকোর্টের সামনে নিরপরাধ পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে চাপতি দিয়ে কুপিয়ে, ছুরিকাঘাত করে এবং রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গণমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র পর্যবেক্ষণ করে এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে ১৪ জন হামলাকারী শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বাকিরা এখনও আত্মগোপন করে আছে। সূত্র জানায়, পলাতক সকল আসামি রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন সীমান্তবর্তী জেলা শহরে লুকিয়ে আছে।

পলাতকরা দেশ ছেড়ে যাতে পালাতে না পারে সেজন্য সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় কর্মরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে। দৃষ্টি আকর্ষণ: আজকের বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সকল প্রধান সংবাদ, কলাম, ফিচার, খেলাধুলা, বিনোদন ও প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদগুলো একসাথে দেখতে এখানে ক্লিক করতে পারেন  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।