আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিজ্ঞাপন বিড়ম্বনার খপ্পরে জাতি, দেখার কেউ নেই ।। রেজা ঘটক

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা... বাংলাদেশে কী বিজ্ঞাপন বানানোর কোনো রীতি নীতি আছে? যদি থেকেও থাকে, তা মানা কী বাধ্যতামূলক? মোটেও না। প্রমাণ চান, তো আপনার বাসার টেলিভিশনটি অন করুন। আপনার পছন্দ মতো কোনো একটি দেশী চ্যানেলে কিছুক্ষণ বসে থাকুন। কী কিছু দেখতে পেলেন? বিজ্ঞাপন দেখতে পেয়েছেন তো! এবার বলুন তো এই বিজ্ঞাপন যারা বানিয়েছে তাদের কেউ কী আইনের ধার ধেরেছে? যদি তারা আইন মেনে বিজ্ঞাপন বানায়, তাহলে সেই আইন কী বাংলাদেশে চালু আছে? আমি নিশ্চিত, আপনি এবার রিমোট চেপে অন্য চ্যানেলে চলে যাবার ফন্দি করছেন। কিন্তু সেখানেও কী একই বিজ্ঞাপনের খপ্পরে পড়বেন না, ভাবছেন? অপেক্ষা করুন, আসছে বিজ্ঞাপন।

বিজ্ঞাপনে আপনি আপনার প্রোডাক্টের যতোখুশি গুনগান করুন। কিন্তু আপনি মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু বাস্তবে সবই অলীক। মিথ্যা গল্প ফেঁদে ভোক্তা আহরণের চেষ্টা করছেন আপনি। কারণ, আপনার চাই মুনাফা।

আপনার চাই বেশি বিক্রি। আপনার চাই বেশি ক্রেতা। কারণ, আপনার আছে ক্রেতা ঠকানোর অসৎ কৌশল। আপনি মিথ্যা বললেও একশ্রেণীর ক্রেতা ঠিকই আপনাকে বিশ্বাস করছে। আপনার খপ্পরে পরে ঠিকই আপনার পন্য কিনছে।

আপনি আসলে পন্য বিক্রির নামে মিথ্যা বিক্রি করছেন। মিথ্যার বেসাতি করে আপনি মুনাফা করছেন। আপনি একজন অসাধু ব্যবসায়ী। কারণ, আপনি সত্য আড়াল করছেন। আপনি একজন অপরাধী।

আপনি বিজ্ঞাপনের নামে বাংলা ভাষাকে বিকৃত করছেন। ভাষা বিকৃত করে আপনি রাষ্টদ্রোহীর সমান অপরাধ করছেন। আর সেই অপরাধ আপনি করেই ক্ষান্ত হননি। আপনি এটা আবার খুব দুঃসাহস নিয়ে জাতীর উদ্দেশ্যে প্রচার করছেন। কারণ, আপনি আইনকে তোয়াক্কা করেন না।

আপনি আইনের ধার ধারেন না। আপনি বাংলা ভাষা বিকৃত করে মুনাফা করার ব্যবসায়ে নেমেছেন। আপনি তো বাংলাদেশের শত্রু। আপনার তো বাংলাদেশে বসবাস করার কোনো অধিকার নাই। কিন্তু আপনি বাংলা ভাষা বিকৃত করে ব্যবসা করছেন, মুনাফা লুটছেন, আবার ঘি খেয়ে আরাম আয়াসে এই দেশেই বসবাস করছেন।

বাংলাদেশের আইন আপনার কিছুই করতে পারছে না। কারণ, আপনি একজন ক্ষমতাশালী। আপনার টাকার জোড় আছে। তাই আপনি আইনের ধার ধারেন না। সংস্কৃতি বিকৃতি করে আপনি বিজ্ঞাপন বানাচ্ছেন।

সংস্কৃতি বিকৃতি করলে কার কী যায় আসে? আপনার বিজ্ঞাপন বানানোর নামে সংস্কৃতি বিকৃত করার কোনোই অধিকার নাই। কিন্তু আপনি টাকার জোড়ে সংস্কৃতি বিকৃতি করে বিজ্ঞাপন বানাচ্ছেন। সেই বিজ্ঞাপন আপনি টেলিভিশানে কোনো যাচাই বাছাই ছাড়াই প্রচার করছেন। আপনি তো মহা অপরাধী। অথচ বাংলাদেশে আপনার কিছুই হচ্ছে না।

কারণ, আপনার টাকা আছে। আপনার টেলিফোন আছে। আপনার মিডিয়া আছে। আপনার নিজের টেলিভিশন চ্যানেল আছে। আপনার নিজের নিউজপেপার আছে।

আপনার ফ্যাক্টরি আছে। আপনার অনেক টাকা আছে। আপনার তো আইন মানার কথা নয়। তাই আপনি আইনের তোয়াক্কা করেন না। তাই আপনি সংস্কৃতি বিকৃতি করেও রেহাই পান।

তাই আপনি সংস্কৃতি বিকৃতি করেও তা আবার প্রচার করার মতো দুঃসাহস দেখান। আপনি একজন সংস্কৃতি হত্যার ঘাতক। বিজ্ঞাপনের নামে আপনি গোটা জাতীকে বুদ্ধি প্রতিবন্দী ভাবছেন। আপনি মনে করছেন, গোটা জাতীই মুর্খ। কেবল আপনি জ্ঞানী।

তাই আপনি বিজ্ঞাপনে বোবা-কালা-অন্ধ-বধির-ন্যাঙ্গা-খোড়া সবাইকে ইচ্ছে মতো ব্যবহার করছেন। আপনার তো ভাই রুচি সমস্যা আছে। আপনি ব্যবসায়ে হ্যানো জিনিস নাই যা ইউজ করেন না। আপনার সমস্যাটা আসলে কী? আপনি ব্যবসা করেন, কিন্তু স্বাভাবিক মানুষের সমান মর্যাদা পাবার অধিকার সকল মানুষের আছে। আপনি সেই মর্যাদায়ও ব্যবসার মুনাফা লুটতে হাত দিছেন।

আপনি তো ভাই শুধু ব্যবসায়ী না, আপনি তো একজন মানুষ খেকো হায়ানা। আমাদের বক্তব্য খুব পরিস্কার। আপনি ব্যবসা করেন। কিন্তু দেশের প্রচলিত আইন মেনে ব্যবসা করুন। আপনি যতো খুশি বিজ্ঞাপন বানান।

কিন্তু আপনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রাখুন। আপনি মানুষের সমান মর্যাদার প্রতি সম্মান রাখুন। আপনি সত্য তথ্য প্রচার করুন। আপনি ভাষার মর্যাদা ঠিক রাখুন। আপনি আপনার পন্যের যতো খুশি রঙ করেন।

কিন্তু অসৎ বিষয়টা দয়া করে ব্যবহার করেন না। কারো অধিকার হরন করার দায়িত্ব আপনাকে কেউ দেয় নাই, ভাই। আমরা বিজ্ঞাপনের জন্য কঠোর আইন চাই। সেই আইন সবাই মেনে চলুক, তাও নিশ্চিত হতে চাই। পাশাপাশি বিজ্ঞাপন আইন কেউ লঙ্ঘন করলে তার সকল ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি চাই।

সেই আইন ও তার ব্যবহার কীভাবে রক্ষা করা হবে, তা যার যার অবস্থান থেকে একটু চেষ্টা করলেই, একটু সচেতন হলেই করা সম্ভব। আপনি যদি টেলিভশন চ্যানেলের মালিক হয়ে থাকেন, কোনো বিজ্ঞাপন আপনার দপ্তরে জমা পড়লে তা কী আইন মেনে বানানো হয়েছে কীনা সহজেই বাছাই করতে পারেন। বিজ্ঞাপনে কী শিশু অধিকার মানা হয়েছে? মানুষের সমান অধিকার মান হয়েছে, ভাষার সঠিক ব্যবহার মানা হয়েছে, কোনো জাতী-গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কোনো বিকৃত বিষয় আছে কীনা, সহজেই আপনি তা যাচাই করে, সবকিছু সঠিক হলেই প্রচারের দায়িত্ব নেন। আপনি যদি সংবাদপত্রের মালিক হোন, বিজ্ঞাপন নেবার আগে এসব বিষয়ে খোঁজখবর নেন। তারপর ওই বিজ্ঞাপনটি তালিকাভুক্ত করুন।

বা ছাপানোর জন্য রাখেন। আর যারা বিজ্ঞাপন বানানোর জন্য টাকা খরচ করছেন, তাদের বলবো, জেনে শুনে আপনি বিজ্ঞাপন বানান। যে কোনো আইডিয়াকেই চালিয়ে দেবার লোভ সংবরণ করুন। আপনার পন্যের বিজ্ঞাপনের কারণে আপনি আইনের আওতায় জেলেও যেতে পারেন। আপনার স্বপ্নের ব্যবসা এক ভুল বিজ্ঞাপনের কারণে চুকে যেতে পারে।

আপনার বাকী জীবন ঘি-র বদলে জেলের ভাতে পূরতে পারে। আপনি আপনার পন্যের বিজ্ঞাপন যথাযথ আইন মেনে করা হয়েছে কীনা তা সংশ্লিষ্ট যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে তারপর প্রচারের দায়িত্বে নামুন। অসৎ উপায়ে অনুমোদন নেবার ফন্দি ছেড়ে দিয়ে যথাযথ নিয়ম পালন করুন। নইলে আপনার বিজ্ঞাপনই একদিন আপনাকে জেলের ভাতের জন্য নিমন্ত্রণ জানাবে। আর যারা বিজ্ঞাপন নির্মাতা, এবার তাদের বলছি।

আপনারা কী বাস্তব জগতের মানুষ? নাকী আপনারা ভীন গ্রহ থেকে উদয় হয়েছেন? নিজেদের আপনারা কী মনে করেন? খুব জ্ঞানী? খুব খুব ভণ্ড? ভণ্ডামী আর কতোকাল করবেন? কর্পোরেটের নামে আপনাদের ভণ্ডামী সাধারণ জনতা যেদিন টের পাবে, সেদিন আর এসি গাড়িতে চড়ার সুযোগ থাকবে না। জনতা আপনাদের এসি গাড়িতে হিসি করবে। আর আপনাদের মুখে থু থু দেবে। আপনিও মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারেন না। নইলে আপনি অমানুষ হয়ে গেছেন।

তাই আপনার মনুষত্ববোধের জন্য বড়োই করুণা হচ্ছে। ধিক আপনাদের মিথ্যা রুচি কৌশল আর প্রলাপকে। ধিক আপনাদের অসৎ মতলবকে। আর ধিক আপনাদের কর্পোরেটগিরি আর ধোকাবাজীকে। আমরা বিজ্ঞাপন খপ্পরের দুঃসহ নির্যাতন থেকে বাঁচতে চাই।

আমরা আইন অমান্যকারী বিজ্ঞাপনদাতা, বিজ্ঞাপন নির্মাতা ও বিজ্ঞাপন প্রচারকারীরদের ধিক্কার জানাই। আর তাদের প্রচলিত আইনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে অনুরোধ জানাই। নতুবা বিজ্ঞাপনের জন্য একটি আলাদা মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর চাই, যেটি বিএসটিআই মার্কা কিছু নয়, সত্যি সত্যি বিজ্ঞাপন আইন দেখাশুনা করবে। সবার উপরে মানুষ সত্য, বিজ্ঞাপনে আমরা যেনো তা সবাই মানতে বাধ্য হই। এটাই সরকার, সকল প্রতিষ্ঠান, বিজ্ঞাপনদাতা, বিজ্ঞাপন-নির্মাতা, বিজ্ঞাপন-প্রচারকারী ও সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে প্রত্যাশা করি।

নিচে বাংলাদেশে প্রচলিত টেলিভিশন বিজ্ঞাপন নীতিমালা ও আইনটি সম্পূর্ণ তুলে দেওয়া হল। এই নীতিমালা প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনগুলোতে কীভাবে ভঙ্গ করা হচ্ছে তা পাঠক সহজেই অনুমান করতে পারবেন। আর আমার বক্তব্যে কতোটুকু বলতে পেরেছি, তাও বুঝতে সক্ষম হবেন, আশা করি। ২.১৫ সংশোধিত টেলিভিশন বিজ্ঞাপন নীতিমালা (প্রস্তাবিত) টেলিভিশন একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম। সংবাদ, অনুষ্ঠান ইত্যাদির পাশাপাশি টেলিভিশনে প্রচারিত বিজ্ঞাপন জনসাধারণকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে।

টেলিভিশন বিজ্ঞাপন কোন একটি পণ্য বা সেবার খবর অগণিত দর্শক-শ্রোতার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে পণ্য ও সেবার বাজার সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেশের প্রচলিত আইন, রীতি-নীতি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে বিজ্ঞাপন সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে, যাতে শ্রোতাগণ বিভ্রান্ত না হন। বিজ্ঞাপনের ভাষা ও উপস্থাপনা হবে শ্রুতিমধুর, শোভনীয় (decent), পরিমার্জিত ও নান্দনিক। সরকারী ও বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলী অনুসরণ করতে হবেঃ ১। টেলিভিশন বিজ্ঞাপন দেশের প্রচলিত আইন, রীতিনীতি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

বিজ্ঞাপনে রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা বা সংহতি বিনষ্ট হয়, এমন কোন মনোভাব প্রদর্শন করা যাবে না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কোন বিদ্রোহ, নৈরাজ্য এবং হিংসাত্মক ঘটনা প্রদর্শন করা যাবে না। আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে বা আইন অমান্য করার পক্ষে সহানুভূতি সৃষ্টি করে এমন কিছু দেখানো যাবে না। ২। বিভিন্ন ধর্ম বা মতাবলম্বীদের মধ্যে বিদ্বেষ বা বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে, এমন বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না।

৩। বন্ধু রাষ্ট্রসমূহের সাথে মতবিরোধ সৃষ্টি করতে পারে, এমন বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। ৪। দর্শক-শ্রোতাকে শুধুমাত্র পণ্যের ক্রেতা মনে না করে তাঁকে সৎ, চিন্তাশীল, জ্ঞানী, দূরদর্শী এবং মুক্তমনা মনে করতে হবে। ৫।

টেলিভিশন বিজ্ঞাপন শোভনীয়, সুন্দর, সুরুচিপূর্ণ ও পরিমার্জিত হতে হবে। পরিবারের সকল সদস্যসহ একসাথে বসে উপভোগ করতে বিব্রতবোধ করতে হয় অথবা দৃষ্টিকটু মনে হয়, এমন বিজ্ঞাপন পরিহার করতে হবে। ৬। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, বিদেশী কূটনীতিক এবং জাতীয় বীরদের পণ্যের বিজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। গণসচেতনতা ও সমাজ সংস্কারমূলক বিজ্ঞাপনে দেশের স্বনামধন্য নাগরিকদের (Prominent Citizens) বিজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

৭। বিজ্ঞাপনের ভাষা, দৃশ্য কিংবা নির্দেশনা কোন ধর্মীয় বা রাজনৈতিক অনুভূতির প্রতি পীড়াদায়ক হবে না। ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্যের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে মসজিদ, মাজার, মন্দির, গীর্জা ইত্যাদি ধর্মীয় উপাসনালয়ের স্থির চিত্র কিংবা চলমান চিত্র প্রদর্শন করা যাবে না। তবে বিজ্ঞাপন চিত্রে ব্যবহৃত বিষয়বস্তুর প্রয়োজনে ধর্মীয় অনুভূতিকে আহত না করে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের চিত্র প্রদর্শন বিবেচনা করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপঃ কোন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসের দৃশ্যে অন্যান্য দৃশ্যের সাথে একই স্থানে অবস্থিত একটি মসজিদের দৃশ্য দেখানো যেতে পারে।

৮। টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ বাহিনী অথবা দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত অন্য কোন বাহিনীর প্রতি কটাক্ষ, বিদ্রুপ বা অবমাননা করা যাবে না। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নির্মিত কোন একটি পণ্যের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসাবে প্রতিরক্ষা বাহিনী, পুলিশ বা অন্য কোন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রদর্শন করা যাবে না। তবে, জনস্বার্থে জনসচেতনতা ও সমাজ সংস্কারমূলক বিজ্ঞাপনে প্রয়োজনবোধে এসব বাহিনীর লোকদের বিজ্ঞাপনচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিজস্ব কোন ঘোষণা বা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিজ্ঞাপন হিসাবে প্রচার করা যেতে পারে।

৯। বিজ্ঞাপনে প্রতিযোগী পণ্যের তুলনা বা নিন্দা করে শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করা যাবে না। বাজারে একই জাতীয় পণ্যের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনদাতা রয়েছে। তাঁদের পণ্য সম্পর্কে বিজ্ঞাপনে অমর্যাদাকর বা তাচ্ছিল্য বা খাটো করে কোন উক্তি করা যাবে না। ১০।

সংবাদের আকারে বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। অনুষ্ঠান হতে বিজ্ঞাপন ভিন্নতর হতে হবে। নাটক বা যে কোন অনুষ্ঠানের ভিতরে বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে প্রচার করা যাবে না। ১১। বিজ্ঞাপনের অডিও মানসম্মত এবং শ্রুতিমধুর হতে হবে।

অতি কোলাহলপূর্ণ ও কর্ণপীড়াদায়ক হবে না। বিজ্ঞাপনে নোংরা ও অশীল শব্দ, উক্তি, সংলাপ, জিংগেল ও গালিগালাজ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। ১২। জ্ঞাতসারে নকল পণ্যের কোন বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না এবং কোন ধরনের নকল বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। ১৩।

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বি.এস.টি.আই)-এর তালিকাভুক্ত পণ্য সামগ্রীর বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে বি.এস.টি.আই প্রদত্ত মান নিয়ন্ত্রণ সনদপত্র উপস্থাপন করতে হবে। এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে (যেখানে প্রযোজ্য) সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের মান নিয়ন্ত্রণ সনদপত্র উপস্থাপন করতে হবে। পণ্য বা সেবার নিশ্চয়তা (Warranty/Guaranty) সম্পর্কিত তথ্য সঠিক এবং তা ক্রেতার আদায়যোগ্য হতে হবে। বিজ্ঞাপনে প্রচারিতব্য প্রশংসাপত্র/সনদপত্র (Certificates) এর মূলকপি সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখাতে হবে এবং সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে। ১৪।

ঔষধপত্র ও ঔষধ জাতীয় পণ্য, হাসপাতাল, কিনিক, ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ইত্যাদির বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অথবা তার অধীনস্থ অধিদপ্তরের অনুমোদন/ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে এবং ছাড়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে। ১৫। বিজ্ঞাপনচিত্রে পেশাগত পরামর্শ পরিহার করতে হবে। ঔষধপত্র, চিকিৎসা বিষয়ক পণ্যের বিজ্ঞাপনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসকদের বিশেষজ্ঞ হিসাবে পরামর্শ প্রদান করা যাবে না এবং তাদের পরিচয় প্রচার করা যাবে না। অনুরূপভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রেও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত পণ্যের বিজ্ঞাপনে পেশাগত পরামর্শ পরিহার করতে হবে।

তবে, সচেতনতামূলক (Motivational) বিজ্ঞাপন যেমন-এইডস, ডায়েরিয়া, ডেঙ্গু, যক্ষ্মা, মহামারী ইত্যাদি প্রতিরোধ, মাদক নিয়ন্ত্রণ, এসিড নিপে প্রভৃতি ক্ষেত্রে পরিচয়সহ সংশিষ্ট বিশেষজ্ঞের পেশাগত পরামর্শ দেখানো যেতে পারে। ১৬। বিজ্ঞাপনে এমন কোন বর্ণনা বা দাবী প্রচার করা যাবে না- যাতে জনগণ প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে প্রতারিত হতে পারে। যেমনঃ বিজ্ঞাপনে প্রদর্শিত পণ্যটি বা পণ্যের কাঁচামাল সম্পর্কিত কোন গুণের কথা দাবী করা হলো অথচ উক্ত দাবী প্রমাণ করা সম্ভব নয়। বিজ্ঞাপনে প্রদর্শিত পণ্য/সেবা (Goods/Services) সর্বোৎকৃষ্ট বা বাজারের একমাত্র পণ্য/সেবা এমন দাবী করা যাবে না।

তবে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশিষ্ট সরকারী দপ্তরের প্রমাণপত্র উপস্থাপন সাপেক্ষে বিজ্ঞাপন দেয়া যেতে পারে। ১৭। কোন দেশী-বিদেশী গান বা গানের অংশ বা গানের সুর সংশিষ্ট গানের সুরকার ও স্বত্বাধিকারীর অনাপত্তি নিয়ে বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা যেতে পারে। মূল গানের সুরকার ও স্বত্বাধিকারী না পাওয়া গেলে গান বা গানের সুর ব্যবহারের কারণে ভবিষ্যতে সৃষ্ট জটিলতার দায়-দায়িত্ব বহনের নিমিত্তে সংশিষ্ট বিজ্ঞাপনদাতাকে অঙ্গীকারপত্র প্রদান করতে হবে। ১৮।

বৈজ্ঞানিক শব্দাবলী, পরিসংখ্যান, উদ্ধৃতি ইত্যাদি বিজ্ঞাপনে ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে, যেন সাধারণ দর্শকদের নিকট বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়। এ ধরনের দাবীর সপে প্রমাণাদি থাকতে হবে। বিজ্ঞাপনদাতার পণ্যের এ ধরনের বর্ণনা/উক্তি/প্রমাণের সপে যথাযথ কর্তৃপরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করতে হবে। পরবর্তীতে সৃষ্ট কোন জটিলতার জন্য বিজ্ঞাপনদাতাকে দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে। ১৯।

বিজ্ঞাপনে জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত ও রণসঙ্গীত অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তবে গণসচেতনতা সৃষ্টি কিংবা সমাজ সংস্কারমূলক (Motivational) বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে বিষয়বস্তুর চাহিদা অনুযায়ী যথাযথ সম্মান এবং মর্যাদার সাথে জাতীয় পতাকা ও রণসঙ্গীত অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। ২০। স্যানিটারী ন্যাপকিন, কনডম প্রভৃতিসহ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর বিজ্ঞাপন প্রচারকালে বিজ্ঞাপনের দৃশ্য ও সংলাপ মার্জিত ও শোভনীয় হতে হবে। এ জাতীয় পণ্যের নামসহ প্যাকেটের রুচিশীল দৃশ্য দেখানো যেতে পারে।

এ সকল পণ্যের দৃষ্টিকটু দৃশ্য দেখানো যাবে না। ২১। জনসচেতনতা বা উদ্বুদ্ধকরণ (Motivational) বিজ্ঞাপনে বিজ্ঞাপনদাতা বা বিজ্ঞাপনদাতার কোন পণ্য/সেবার গুণাগুণ/বর্ণনার উলেখ করা যাবে না। তবে, এসকল বিজ্ঞাপনের শেষ দৃশ্যে (টেলপ) সৌজন্যকারী হিসাবে কিংবা অর্থায়নকারী হিসাবে কিংবা জনস্বার্থে সংশিষ্ট বিজ্ঞাপনদাতা বা পণ্যের নাম দেখানো যেতে পারে। ২২।

বিজ্ঞাপন প্রচারের ফলে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হলে সংশিষ্ট বিজ্ঞাপনদাতা দায়-দায়িত্ব বহন করবে। ২৩। বিজ্ঞাপন বাংলা অথবা ইংরেজী ভাষায় হতে হবে। কোন আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করতে হলে তা দেশের সাধারণ জনগণের নিকট বোধগম্য হতে হবে। তবে, অন্যান্য বিদেশী ভাষায় নির্মিত বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে বাংলা বা ইংরেজী ভাষায় সাব-টাইটেল থাকতে হবে।

২৪। টেক্সট বই, নিবন্ধীকৃত সাময়িকী/ম্যাগাজিন ব্যতীত অন্যান্য পুস্তক বা প্রকাশনার বিজ্ঞাপন বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারের ক্ষেত্রে মহাপরিচালক, বাংলাদেশ টেলিভিশন- এর পূর্বঅনুমোদন গ্রহণ করতে হবে এবং অন্যান্য বেসরকারী চ্যানেলে প্রচারের ক্ষেত্রে তথ্য মন্ত্রণালয়ের পূর্বঅনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। ২৫। ওয়াজ মাহফিল, ওরশ, পূজা, বড়দিন, বৌদ্ধ পূর্ণিমা ইত্যাদি ধর্ম বিষয়ক বিজ্ঞাপন প্রচারের পূর্বে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে। ২৬।

নিম্নে বর্ণিত পণ্য ও সেবার বিজ্ঞাপন টেলিভিশনে প্রচারযোগ্য বিবেচিত হবে নাঃ (১) বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাড়পত্রবিহীন/অননুমোদিত অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান, (২) পত্র মিতালী কাব, নাইট কাব, বার (ইধৎ), পাব (চঁন), সামাজিকভাবে স্বীকৃত নয় এমন কাব বা সমিতি, (৩) ভাগ্য গণনাকারী ও এতদসংক্রান্ত, (৪) মৃত্যু বা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সংক্রান্ত, (৫) লাইসেন্সবিহীন কর্মসংস্থান প্রতিষ্ঠান/সার্ভিস/রেজিস্ট্রার/ব্যুরো, (৬) বাজি ধরা, জুয়া খেলা বা এতদসংক্রান্ত সংস্থা/কোম্পানী/ব্যক্তি, (৭) পুরুষ ও মহিলাদের ফাউন্ডেশন গার্মেন্টস (Foundation Garments) যেমনঃ ব্রেসিয়ার, আন্ডারওয়্যার ইত্যাদি, (৮) সিগারেট, বিড়ি, চুরুট ইত্যাদি তামাকজাত পণ্য, (৯) মদ, গাজা, চরস, হেরোইন ইত্যাদি মাদক/নেশাজাতীয় পণ্য, (১০) অ্যালকোহল মিশ্রিত পণ্য (অ্যালকোহলের পরিমাণ যাই হোক না কেন), (১১) মহিলাদের বক্ষ বর্ধন, পুরুষ ও মহিলাদের বা শিশু কিশোরদের স্লিমিং, ওজন হ্রাস অথবা সীমিতকরণ, ফিগার নিয়ন্ত্রণ- এর জন্য ব্যবহৃত ঔষধপত্র অথবা চিকিৎসা, (১২) যৌন দুর্বলতা, অকাল বার্ধক্য ইত্যাদি বিষয়ক বিশেষ চিকিৎসা, (১৩) স্বপ্নে প্রাপ্ত ঔষধ, মাদুলী, কবজ, যাদু ইত্যাদি, (১৪) চাঁদা বা চাঁদা সংক্রান্ত, (১৫) ব্যবসা বা শিা প্রতিষ্ঠানের বিবাদ সংক্রান্ত ইত্যাদি। ২৭। শিশুদের নৈতিক, মানসিক বা শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এমন কোন বিষয় বিজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। শিশুদের স্বাভাবিক বিশ্বাস ও স্বভাব সুলভ সরলতার সুযোগকে প্রতারণাপূর্ণ ও চাতুর্য্যের সাথে কাজে লাগিয়ে কোন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য হাসিলের প্রয়াস গ্রহণযোগ্য হবে না। ২৮।

গুঁড়ো দুধের বিজ্ঞাপনে ৫ (পাঁচ) বছরের কম বয়সের শিশুদের মডেল হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না কিংবা ছবি প্রদর্শন করা যাবে না। এছাড়া গুঁড়ো দুধের বিজ্ঞাপনে নিম্নলিখিত দুইটি শোগান পৃথকভাবে সুপার ইম্পোজ করে স্পষ্টারে দেখাতে হবেঃ (১) ‘‘শিশুদের জন্য মায়ের দুধের বিকল্প নেই’’। কমপক্ষে ৩ সেকেন্ড এবং ‘‘এই গুঁড়ো দুধ অনূর্ধ্ব এক বছর বয়সের শিশুদের জন্য প্রযোজ্য নয়” কমপক্ষে ৫ সেকেন্ড। ২৯। বিজ্ঞাপনে শিশুদের দ্বারা বিপদজনক কোন দ্রব্য যেমনঃ বিস্ফোরক, দিয়াশলাই, পেট্রোল বা দগ্ধকারক দ্রব্য, যন্ত্র বা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, ঔষধপত্র ইত্যাদি ব্যবহারের দৃশ্য দেখানো যাবে না।

অথবা এসব দ্রব্য শিশুদের নাগালের মধ্যে আছে তাও দেখানো যাবে না। যে কোন পরিস্থিতিতে শিশুদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। যেমনঃ শিশুদের রাস্তা পারাপার, রাস্তার উপর খেলাধুলা, উদাসীনভাবে রাস্তায় চলাফেরা, জানালা বা ওভারব্রীজে বিপদজনকভাবে ঝুঁকে পড়া, উঁচু পাহাড়ে আরোহণ ইত্যাদি ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্য বিজ্ঞাপনে দেখানো যাবে না। ৩০। বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তুর সাথে চিত্রায়ন সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

বিজ্ঞাপনে পণ্য বা সেবা সম্পর্কিত তথ্য সঠিক হতে হবে। ৩১। বিজ্ঞাপনচিত্রে ভয়-ভীতি সৃষ্টিকারী কোন কিছু প্রদর্শন করা যাবে না। ফাঁসি, শ্বাসরোধ, আত্মহত্যা, অঙ্গ বিচ্ছেদ ইত্যাদি বীভৎস দৃশ্য দেখানো যাবে না। শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ বা অসুস্থ ব্যক্তির স্নায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এরূপ দৃশ্য দেখানো যাবে না।

৩২। বিজ্ঞাপনে ধর্ষণ, ব্যাভিচার, অশীল জড়াজড়ি/ধরাধরি/ভঙ্গি ইত্যাদি দৃশ্য প্রদর্শন করা যাবে না। ৩৩। নারী নির্যাতন, কিশোরী ও মহিলাদের উত্যক্তকরণ (Teasing) এবং তাঁদের প্রতি অশোভন অঙ্গভঙ্গী বিজ্ঞাপনচিত্রে প্রদর্শন করা যাবে না। ৩৪।

বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণকারী মডেলের পোষাক-পরিচ্ছদ শালীনতাপূর্ণ ও প্রচলিত পোষাক- পরিচ্ছদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। ৩৫। দেশে উৎপাদিত তথা দেশীয় পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনে দেশীয় মডেল ব্যবহার করতে হবে। তবে, দেশীয় পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনে সীমিত সংখ্যক বিদেশী মডেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বিদেশী মডেল ব্যবহারের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে।

৩৬। বিদেশে উৎপাদিত তথা বিদেশী পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনে বিদেশী মডেল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনে দেশীয় মডেল ব্যবহার করতে হবে। ৩৭। বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণকারী কোন মডেলের মৃত্যু ঘটলে তাকে আর বিজ্ঞাপনচিত্রে দেখানো যাবে না।

৩৮। পরিবেশ বিনষ্টকারী বা বন্ধুসুলভ নয় এমন দৃশ্য বিজ্ঞাপনে দেখানো যাবে না। ৩৯। রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ ভবন, স্থাপনা, কার্যালয়, যেমনঃ জাতীয় সংসদভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, কোর্ট বা আদালত ও আদালতের কার্যক্রম, সেনানিবাস এলাকা, শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ ইত্যাদি কোন পণ্যের বিজ্ঞাপনচিত্রে প্রদর্শন করা যাবে না। ৪০।

মহান স্বাধীনতা দিবস, মুক্তিযুদ্ধ, গণঅভ্যুত্থান, ভাষা আন্দোলন ইত্যাদি জাতীয় পর্যায়ের বিষয়গুলোর মর্যাদা ও সম্মান সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে এ বিষয়গুলো প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে বিজ্ঞাপনচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। ৪১। কোন বিজ্ঞাপন শোভনীয়, সুন্দর, সুরুচিপূর্ণ ও পরিমার্জিত কিনা এ বিষয়ে কোনরূপ দ্বিধা/সন্দেহ দেখা দিলে সংশিষ্ট টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। ৪২। এ নীতিমালায় উলেখ নেই এমন বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দেবে।

তাছাড়া বিজ্ঞাপনদাতা এবং টিভি চ্যানেল (সরকারী ও বেসরকারী)-এর মধ্যে বিজ্ঞাপন বিষয়ে মতবিরোধ হলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। ৪৩। সকল টিভি চ্যানেলকে (সরকারী ও বেসরকারী) নিজ দায়িত্বে যথাযথভাবে টেলিভিশন বিজ্ঞাপন নীতিমালা অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র প্রদান করতে হবে। ছাড়পত্র প্রদানের ক্ষেত্রে ‘টেলিভিশন বিজ্ঞাপন নীতিমালা’ সঠিকভাবে অনুসরণ না করা হলে তথ্য মন্ত্রণালয় সংশিষ্ট টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ৪৪।

উপরোক্ত শর্তাবলী প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে সংশিষ্ট টেলিভিশনের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.