আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিষয়: পাত্রী দেখা

সত্য অথবা মিথ্যা দুটোই হতে পারে। বিশ্বাস করা আর না করা আপনার ব্যপার। ভার্সিটি থেকে ফিরতেই আম্মা হঠাৎ খুব আদর করে ভাত খেতে দিলেন। পাশে বসে আছেন। আমি ভাবছি ব্যপারটা কি? এত আদর দেখে একটু সন্দেহ হল।

মা কে জিগেস করলাম কাহিনী কি, এত আদর যত্ন কেন??? মা বলেন, কেন আমি কি তোকে আদর করি না? আমি বল্লাম তা না। তবে আদরের মাঝে একটু ভেজাল ভেজাল লাগতেসে। মনে মনে ভাবি বাসায় আসলে আগে ২টা বকা না খাইলে তো আমার ভাত হজম হয় না। আজকের আদরের অবস্থা দেখে ঠিকমত খাইতে পারতেছি না। যাই হোক একটু পর আম্মা পাশে এসে বসেন তারপর বলেন, আজ আসলে একটা ব্যাপারে বলব তোকে।

তুই রাগ করিস না। আর কিছু বলার আগেই আমি জানতে চাইলাম দেখতে আসবে? মা বাচ্চাদের মত মাথা নাড়লেন। তারপর বল্লেন এবার কিছু উল্টাপাল্টা করিস না। ঠিক সেই মুহুর্তে মাকে দেখে খুব হাসি পাচ্ছিল। তাই আর কিছু বল্লাম না।

যখন রেডি হচ্ছি তখন ভাইয়ার কাছে কল আসলো যে অপরপক্ষ চলে এসেছে। অথচ আমাদের আরও এক ঘন্টা পর যাওয়ার কথা। আমি মাকে বল্লাম, মা দেখছো তোমার মেয়ের ডিমান্ড কত?? একঘন্টা আগেই আইসা বসে আছে মায়ের দিকে তাকায়ে দেখি আমার দিকে অগ্নিমূর্তি হয়ে তাকায়ে আছেন। আর কথা বাড়ানোর সাহস হলো না। মনটা খারাপ হয়ে গেল সময়মত গেলাম মা আর ভাইয়ার সাথে।

একটা রেস্টুরেন্টে। গিয়ে দেখি তেনারা এক রাউন্ড খেয়ে ২য় রাউন্ড খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেখে হাসি পাচ্ছিল অনেক,কিন্তু আম্মাজানের ভয়ে বহু কষ্টে হাসি পেটের মদ্ধেই রেখে দিলাম। গিয়ে যতটা সম্ভব ভদ্র একটা চেহারা নিয়ে বসলাম। তবে আমি দেখছিলাম সবাইকে।

এবার বিচারকগনের একটা বর্ননা দেই। সম্মানিত ভাবি(আমার সন্ধ আছে):: মাশাআল্লাহ মেকাপ ভালমতই করছে। দেখে মনে হয় পাত্রী আমি না পাত্রী তিনি। দেখতে সুন্দর। আর ভাবি সম্প্রদায়ের মদ্ধে তিনি খুব চালু মানুষ।

ভয় পাইছি দেখে পাত্র মশাই:: প্রথমেই নিয়ত করে গেছি শাহরুখ আসলেও না করে দিব। তাই পাত্র দেখে পছন্দ হবার কোন কারনই নাই। তবে কিছু কথা না বল্লেই না। সেটা হল পাত্র কিছুটা মুটাসুটা। পাত্র থাকে ভাবির বাসায়।

সেখানেই থেকে এই অবস্থা আর শ্বশুড় বাড়ির খাবার পেটে পড়লে যে কি হবে কে জানে??? যাইহোক পরিচয় পর্ব হলো। আমাকে ভাবি তার কথা বলতে থাকলেন। তার কথা মানে নিজের গুনের কথা। আমি ভাবলাম একবার বলি যে ভাবি আমরা তো আপনারে দেখতে আসি নাই। আমাকে দেখতে আসছেন তাই আমার আম্মারে একটু সুযোগ করে দেন আমার গুন গান করতে।

পাশে আম্মা বসা। মাকে বল্লাম আস্তে আস্তে, মা এত কথা বলে কেন মহিলা??মা আবার সেই ভাবে তাকালেন । আর কিছু না বলে চুপ করে বসে আছি আর ভাবির নানির গল্প শুনছি। আর পাত্র একটু পর পর তাকায় আর একটা লজ্জা পাইসে এমন হাসি দেয়। আজব লজ্জা আমি পাবো কি বেচারা .... একটু পর ভাবি জিগেস করেন, রান্না পারো?আমি সুন্দর করে হেসে বল্লাম, আমি রান্না কখনো করি নাই আর করার ইচ্ছাও নাই।

ভাবি চুপ । এবার খাওয়ার কথায় আসি। আমি বাইরের খাবার পছন্দ করি না। কিন্ত একগাদা খাবার এনে দিল সামনে। একটু একটু নিচ্ছিলাম।

৫মিনিটের মদ্ধে দেখি আমি ছাড়া আর সবার খাওয়া শেষ। সবার আগে পাত্র বেচারা সব খানা খতম করে ফেলেছেন। ভাবছিলাম আমি বলি যে আর লাগবে আমারটাও খান। আপনার মনে হয় কম হইছে আম্মার ভয়ে কিছু বলতে পারলাম না। অনেক কথা হলো।

তরপর বিদায় নিলাম। বাসায় আসার পথে সবচেয়ে ভাল খবরটা ভাইয়া আমাকে দিল যে তার পাত্র পছন্দ হয় নাই এতখন যা যা দেখলেন সবই সত্য ঘটনা এবং এসবই কিছুদিন আগে আমার মত অবলা মেয়ের সাথে ঘটেছে । ইচ্ছা হলো সবার সাথে শেয়ার করি। যদিও ভয়ে আছি আমার ভাইয়া কখন যে এই কাহিনি পরে ফেলে ঠেক নাই কারন সেও এই সামুর একজন ভক্ত। দেখলে আমি শেষ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।