আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমারদেশ আবার বন্ধ হচ্ছে..

বিচারপতির স্কাইপে সংলাপ প্রকাশের অভিযোগে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও প্রকাশক হাসমত আলীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেটের (সিএমএম) আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সাইবার অপরাধ আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সাইদুর রহমান। মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আশিকুর রহমান মামলাটি এজাহার হিসাবে গণ্য করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। সূত্র: বাংলা নিউজ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌত্ব ও গণতন্ত্রের পক্ষে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর দৈনিক আমার দেশ আবার সরকারের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। পত্রিকার বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নিতে গতকাল সারাদিন সরকারের বিভিন্ন বিভাগ মরিয়া তত্পরতা চালায়।

সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, মহানগর হাকিমের আদালতে গতকাল সন্ধ্যার পর একটি মামলা রুজু করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তেজগাঁও থানাকে নির্দেশ দিয়েছে। জানা গেছে, পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করা যায় কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। হাইকোর্টের একটি রুলের পরপরই সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগুলো গতকাল বিকাল থেকে জোর তত্পরতা শুরু করেছে। ব্রাসেলসপ্রবাসী আহমদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে বিচারপতি মো. নিজামুল হকের স্কাইপি কথোপকথন হ্যাকিং ও তা প্রকাশে দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং গ্রেফতারের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে গতকাল শেষ বিকালে রুল জারি করেছে হাইকোর্টের বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।

স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টদের দু’সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকাটি মুদ্রণ ও প্রকাশনা আইনের কোনো ধারা লঙ্ঘন করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ঢাকার জেলা প্রশাসককে বলা হয়েছে। প্রয়োজন হলে বিষয়টি প্রেস কাউন্সিলের বিবেচনার জন্যও পাঠাতে বলা হয়েছে। বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী এবং বিচারপতি ফরিদ আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ রুল জারি করে। রুল নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় এ ধরনের আক্রমণাত্মক সংবাদ প্রকাশ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে বিচারপতি মো. নিজামুল হকের স্কাইপি সংলাপ প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারপতি এম ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল প্রসিকিউশনের এক আবেদনে এ আদেশ দেয়া হয়। প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত দৈনিক আমার দেশ ও দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় স্কাইপি কথোপকথন প্রকাশের কথা উল্লেখ করে এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চান। স্কাইপি কথোপকথন প্রকাশে সৃষ্ট বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন বিচারপতি মো. নিজামুল হক। এরপর ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

এদিকে স্কাইপি হ্যাকিং এবং তা প্রকাশের জন্য আমার দেশ-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে গতকাল দুপুরে হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী আজহার উল্লাহ ভূঁইয়া। তার পক্ষে শুনানি করেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের ছেলের ল’ চেম্বারের সদস্য ব্যারিস্টার এ কে এম শফিউদ্দিন। তিনি বলেন, প্রকাশিত সংবাদে গোপনীয়তার শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে। সংবিধানের লঙ্ঘন হয়েছে। এ সময় বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, এখানে তো ফৌজদারি অপরাধও হয়েছে।

আইটি আইনের লঙ্ঘন হয়েছে। আদালত আবেদনটি সংশোধন করে দিতে বলে এবং একই সঙ্গে আইটি অ্যাক্ট দেখতে চায়। এর কিছু সময় পর আইনজীবী আইটি অ্যাক্ট নিয়ে আসেন। আদালত জানতে চায়, হ্যাকিংয়ের শাস্তি কী? এ সময় আইনজীবী বলেন, সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর কারাদণ্ড। এরপর হাইকোর্ট রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য জানতে চায়।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদারকে উদ্দেশ্য করে সামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, এত বড় ঘটনার পরও সরকার নির্বিকার কেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, যে কেউ এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করতে পারে। তাছাড়া ট্রাইব্যুনালও ব্যবস্থা নিতে পারে। এ সময় শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ওটা তো আদালত অবমাননা। ওখানে তো সাজা মাত্র ছয় মাস।

পরে হাইকোর্ট রুল জারি করে। একই সঙ্গে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকলে তা ৭ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয় আদালত। ৮ জানুয়ারি এ মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। আবেদনকারী আইনজীবী আমার দেশ সম্পাদকসহ পত্রিকাটির ১২ জন সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করেছে। আমার দেশ-এর প্রকাশক, সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে ওই আবেদনে।

স্কাইপি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রধানের কথপোকথন আমার দেশ-এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের পর সৃষ্ট তোলপাড়ের প্রেক্ষাপটে আবেদনকারী আজাহার উল্লাহ ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, আমার দেশ-এর প্রকাশক, সম্পাদকসহ ১২ জনকে এ মামলায় বিবাদী করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দৈনিক আমার দেশ এর আগে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে বিচারপতি তথ্য গোপন করে লন্ডনে বাড়ি কেনাসহ সম্পদের তথ্য প্রকাশ করা হয়। পরে মাহমুদুর রহমান বিচারপতির বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে তাকে অভিশংসনের জন্য রাষ্ট্রপতি বরাবর আবেদন জানান। রাষ্ট্রপতি সে আবেদন বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন।

আবেদনটি বিবেচনায় নেয়ার বিষয়টি গত ৮ নভেম্বর ভঙ্গভবন থেকে চিঠি দিয়ে মাহমুদুর রহমানকে জানানো হয়েছে। সূত্র: আমারদেশ আবার তাহলে জেলে যাচ্ছে মাহমুদুর রহমান!আমি ভেবেছিলাম সরকার শেষ সময়ে এই রিস্ক নিবে না। কিন্তু সরকার কোন কিছুই কেয়ার করছে না। শেষ পর্যন্ত পত্রিকাও বন্ধ করবে বুঝা যাচ্ছে। তাহলে সাংবাদিকতার মূল নীতি অনুসন্ধনী সাংবাদিকতা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.