আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াত-বিএনপির নাশকতায় উলুখাগড়ার প্রাণনাশ

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। ৯ ডিসেম্বর পুরনো ঢাকার দর্জি বিশ্বজিতের মৃত্যু আমাদের বিবেককে আন্দোলিত করেছে। চেতনাকে উজ্জীবিত করে দিয়েছে রাজনৈতিক সংঘাতের বিরুদ্ধে। সংবাদপত্রগুলো রাজনৈতিক বলি হিসেবে তার মৃত্যুকে সহানুভূতির সঙ্গে উপস্থাপন করেছে। বিবেকবান ব্যক্তিবর্গ এ ধরনের উলুখাগড়ার প্রাণবিনষ্টিতে অবরোধ-হরতালের বিরুদ্ধে তাদের মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করেছেন।

তার মৃত্যুর জন্য আসলে দোষী কে? এ প্রশ্নের পরিবর্তে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যে চক্রান্ত চলছে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালে মরিয়া হয়ে উঠেছে জামায়াত-বিএনপি জোট সেই তৎপরতার কথা সামনে আসছে বারবার। কারণ তাদের কর্মসূচি ও অস্থিরতার হুঙ্কারের কারণে এ ধরনের নিরীহ ব্যক্তির জীবন ঝরে যাচ্ছে। সংসারের কর্মক্ষম মানুষগুলো দিশাহারা হয়ে পড়ছে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার আছে কি বিএনপি-জামায়াতের? চলতি বছর (২০১২) বিজয় দিবসের মাসে এসব ভয়ানক ঘটনা আমাদের দুশ্চিন্তার মাত্রাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। ডিসেম্বরের ৪ তারিখে জামায়াত দেশজুড়ে হরতাল করেছে; আর বিএনপি তাদের নৈতিক সমর্থন দিয়েছে।

এ দুটি দলের দাবি জনগণের পক্ষে কোনো ন্যায্য দাবি নয়, কেবল নিজেদের দল ও মতের বোঝা সরকারের ওপর চাপিয়ে দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা। বিএনপিতে রয়েছে দলাদলি ও কোন্দল। আর জামায়াতের পেছনে জঙ্গি গোষ্ঠীর ইন্ধন। ৯ ডিসেম্বর বিএনপিসহ ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচিতে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে, গাড়িতে অগি্নসংযোগ ও নাশকতার ঘটনায় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর ব্যানারে জঙ্গিরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অবরোধের আগের দিন ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় যানবাহনে অগি্নসংযোগ এবং বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে।

এসব ঘটনার সঙ্গে জঙ্গিরা জড়িত বলে প্রমাণ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। রাজনৈতিক কর্মসূচির সুযোগে জঙ্গিরা মাঠে তৎপর বলেই দেশজুড়ে নাশকতার আশঙ্কা বাড়ছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় সরকার গঠনের দিক থেকে বিএনপির পাল্লা ভারি। ২০০১-০৬ সালের বিএনপির শাসনকাল বিবেচনা করলে এ ক্ষুদ্র পরিসরে তাদের কুকীর্তির মহিমা বর্ণনায় শেষ করা যাবে না। চারদলীয় জোট ও খালেদা-নিজামী সরকার রাষ্ট্রদ্রোহিতা, সংবিধান লঙ্ঘন, হত্যা, খুন, সন্ত্রাস, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, দুর্নীতি, দখল, অগি্নসংযোগ, অস্ত্র চোরাচালান, প্রতারণা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অপহরণ, মানি লন্ডারিং, অঙ্গীকার ভঙ্গ, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ, কালো টাকা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন শাস্তিযোগ্য অপরাধের জন্য দায়ী।

সে সময় বিএনপি-জামায়াত জোট রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে শাহ এ এম এস কিবরিয়া এমপি, আহসানউল্লাহ মাস্টার এমপি, অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম, মমতাজউদ্দিন আহমদ, কৃষক নেতা এস এম আজম, ছাত্রনেতা সাইফুল রসুল পলাশ, অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম বাচ্চু প্রমুখসহ হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা এবং লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে আহত ও পঙ্গু করে; লাখ লাখ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, লুট, অগি্নসংযোগ, বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, নির্যাতন এবং ছয় লক্ষাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ১ লক্ষাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করে এবং সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়ার অঙ্গীকার করেও জোট সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়। বিএনপি-জামায়াত জোটের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও সামাজিক সন্ত্রাসের ফলে পাঁচ বছরে ৪০ হাজার ৬৫৮ জন মানুষকে হত্যা এবং রাজনৈতিক নিপীড়নে ১ লাখ ৬১ হাজার ৭৬৭ জনকে আহত করা হয়। ওই সময়ে ৭৭ হাজার ৯৫০ জন নারী, শিশু-কন্যাকে বিএনপি-জামায়াত জোটের ক্যাডার ও সন্ত্রাসী কর্তৃক ধর্ষণ, গণধর্ষণ, নির্যাতন, অপহরণ ও পাচার করা হয়। দেশে গড়ে দৈনিক ৯টি করে হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে। (মানবাধিকার প্রতিবেদন, ইত্তেফাক-৩ মে, ২০০৬) ক্ষমতায় এসেই ৪০ হাজার সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে সাধারণ ক্ষমা প্রদান এবং ৭০ হাজার হাজতি সন্ত্রাসীকে মুক্তি দিয়ে সন্ত্রাসীদের লালন-পালন; বিএনপি ক্যাডার পলাতক ফাঁসির আসামি জিন্টুকে ২২ বছর পর প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুপারিশে রাষ্ট্রপতির সাজা মওকুফ করা ছিল আরো উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

তাদের আমলে ডাকাতি, লুট, দখল, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অপহরণের মোট সংখ্যা ছিল ২১ লাখ ৩৩ হাজার ২২৯টি। বাংলাদেশে জোট সরকার ও বিএনপি-জামায়াতের মদদে ৫৪টি উগ্র সামপ্রদায়িক জঙ্গি সংগঠন এবং ইসলামী এনজিওর আড়ালে বিদেশি জঙ্গি-মৌলবাদী সংগঠন দেশব্যাপী সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশকে অনিরাপদ রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে দেশের সুনাম, মর্যাদা ও ভাবমূর্তি নস্যাৎ করা; উগ্র সামপ্রদায়িক জঙ্গিগোষ্ঠী 'জেএমবি' ও 'জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ' সরকারের মদদদান, বাংলা ভাই সংবাদপত্রের সৃষ্টি বলে মন্তব্য করা এবং শরিক দল জামায়াতের ক্যাডারদের গ্রেপ্তার করেও ছেড়ে দেয়া; তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বিএনপি-জামায়াত জোট কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা, আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা, শত শত নেতাকর্মীকে আহত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ইচ্ছাকৃতভাবে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার না করা এবং আন্তর্জাতিক তদন্তে অস্বীকৃতি; বৃটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা ছিল ভয়াবহ ঘটনা। দুই বছর পরও অপরাধীদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করতে সরকারের ব্যর্থতা; সরকারের যোগসাজশে হত্যার উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি ও সিলেটের মেয়র কামরানের ওপর গ্রেনেড হামলা এবং আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপির ওপর আক্রমণ; ড. হুমায়ুন আজাদকে মারাত্মকভাবে আহত, তৎপরবর্তীতে রহস্যজনক মৃত্যু, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ও শাহরীয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার, আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকসহ অসংখ্য বুদ্ধিজীবীকে হত্যার হুমকি; ১৭ আগস্ট ২০০৫ দেশব্যাপী ৬৩টি জেলায় সাড়ে তিন শতাধিক স্থানে পাঁচ শতাধিক বোমা হামলাসহ উগ্র সামপ্রদায়িকগোষ্ঠীর পাঁচ বছরে বাজার, সিনেমা হল, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আদালতসহ ছয় শতাধিক স্থানে বোমা ও গ্রেনেড হামলা এবং ১৩৭ জনকে হত্যা ও ২০৩৮ জনকে আহত করার ঘটনা প্রতিরোধে ব্যর্থতা, প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করা এবং তাদের কর্মকা-ে সরকারি মদদদান; বিএনপির মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীদের জঙ্গিবাদীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে এমপি আবু হেনার অভিযোগের তদন্ত না করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা; শেখ হাসিনা হত্যা প্রচেষ্টার প্রধান আসামি ও অস্ত্র মামলার যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত হরকাতুল জেহাদ নেতা মুফতি হান্নানের সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সাক্ষাৎ, তাকে গ্রেপ্তার না করার আশ্বাস ও জঙ্গি তৎপরতা চালানোর সমঝোতা এবং তার মার্সি পিটিশনে প্রতিমন্ত্রী গৌতম চক্রবর্তী ও বিএনপি নেতাদের সুপারিশ; বাংলাদেশে আফগানিস্তানের মতো তালেবানি বিপ্লবের ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও জামায়াত ও ইসলামী ঐক্যজোটের আমিনীদের গ্রেপ্তার না করে বিএনপি কর্তৃক জঙ্গিবাদী কর্মকা-ে উৎসাহ প্রদান; সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে; কর্মকা-ে উৎসাহ প্রদান; হাওয়া ভবনের তত্ত্বাবধানে এবং সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক, বগুড়ায় ১ ট্রাকসহ অব্যাহত অস্ত্র, গুলি ও বিস্ফোরক চোরাচালানি এবং প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করে বাংলাদেশকে অস্ত্র চোরাচালানের রুটে পরিণত করা; রোহিঙ্গা জঙ্গিদের বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীকে বাংলাদেশের ভূ-খ- ব্যবহার করতে দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করা হয়।

এরই মধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে জোট সরকার তাদের আশ্রয়ে থাকা কয়েকজন জঙ্গি নেতা ও কর্মীকে গ্রেপ্তার নাটকের অবতারণা করে। ধৃত জঙ্গি নেতারা আদালতে সরকারের জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতার বিষয় ফাঁস করে দেয়ায় জঙ্গি গ্রেপ্তার বন্ধ হয়ে যায়। জেলা/উপজেলা কমান্ডার ও সার্বক্ষণিক (এহসার/গায়েবে এহসার) কর্মীসহ এখনো দুই সহস্রাধিক জঙ্গি জামায়াত-বিএনপির নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করছে। আগামী নির্বাচনে এ জঙ্গিদের দিয়ে আওয়ামী লীগ ও অসামপ্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তির ওপর হামলার পরিকল্পনা রয়েছে; যার আলামত এখনই শুরু হয়েছে। বর্তমানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্রে ও নাশকতার পরিকল্পনায় সমবেত জামায়াত ও ছাত্রশিবির নেতাকর্মীর অনেককেই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তাদের কাছ থেকে ধর্মীয় বই, প্রচারপত্র, ডায়েরি, ব্যানার ও সাংগঠনিক নীতিমালাসংবলিত খাতা উদ্ধার করা হয়েছে। আলাদা ভাড়া বাড়িতে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে সরকার উৎখাতের জামাতি প্রচেষ্টা নতুন নয়। ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে তারা তাদের জিঘাংসা চরিতার্থ করতে সদা সচেষ্ট। ইতোমধ্যে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি ও হুজিসহ দেশি-বিদেশি একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জামায়াতের গোপন যোগসাজশ রয়েছে বলে মন্তব্য প্রকাশ করেছে। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর দলের বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচিতে এসব জঙ্গি সংগঠনের নেতারাই মূলত নেতৃত্ব দিচ্ছে।

জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে মিশে তারা নাশকতায় অংশ নিচ্ছে। এজন্য জামায়াত-শিবির এখন জঙ্গি মৌলবাদী সংগঠনের অন্যতম হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরিসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে জঙ্গি সংগঠনের নেতাকর্মীদের দলে ভেড়ানো ও যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে জামায়াতের দেশ-বিদেশে বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয়ের খবর দেশের মানুষ অবগত হয়েছে। এজন্য গ্রেপ্তারকৃতদের হালকা করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে কারাগারে প্রেরণের পরে ১২ জানুয়ারি ঢাকা শহরে পুলিশের ওপর স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত-শিবির অতর্কিত হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করেছে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে, লুট করেছে পিস্তল।

ইতিপূর্বে ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাকরাইল এবং চট্টগ্রামসহ দেশের অনেক জায়গায় তাদের হামলায় পুলিশবাহিনীর অনেক সদস্য আহত হয়েছেন। এর ফলে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ঘৃণা তীব্রতর হয়েছে; কিন্তু বিরোধী দল বিএনপি এসব ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থেকেছে। কিন্তু কেন? স্বাধীনতা বিরোধীদের অপতৎপরতায় নির্লিপ্ত কেন তারা? দেশের মধ্যে জামায়াত-শিবির যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে তার সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কি নিবিড়? বর্তমান সরকারের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের পরও ধর্মীয় জঙ্গিবাদ পাকাপোক্তভাবে খুঁটি গেড়ে বসেছে দেশের মাটিতে। কারণ ২০০১ সালে জোট সরকারের আমলে ৭১-এর রাজাকার-আলবদরদের মন্ত্রিপরিষদ ও সংসদে আসন পেতে সাহায্য করেছিল বিএনপি। পাকিস্তানপ্রেমী গণধিক্কৃত যুদ্ধাপরাধীরা রাষ্ট্রপরিচালনায় অংশ নিয়ে ভিত আরো শক্ত করে নিয়েছে।

তারা কেউ কেউ আবার আত্মস্বীকৃতিতে ১৯৭১ সালে তাদের কর্মকা- প্রচার করেছিল। জঙ্গিদের জন্য জামায়াতের পক্ষ থেকে মাসিক নির্ধারিত বরাদ্দ প্রায় ২ কোটি টাকা। জামাতের বরাদ্দ করা অর্থ নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির ৫০ হাজার সদস্যকে জনপ্রতি ৪শ' টাকা করে দেয়া হয়। যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে জেএমবির জন্য বরাদ্দ করা হয় এ অর্থ। গোয়েন্দা সংস্থার কাছে জামায়াতের সাবেক কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও জেএমবি আমির মুফতি মওলানা সাইদুর রহমানের দেয়া জবানবন্দিতে জানা যায় এসব তথ্য।

জেএমবি জঙ্গি সংগঠনের দলীয় তহবিল, কর্মী কল্যাণ তহবিল ও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা তহবিল নামে তিন স্তরে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে জামায়াত। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতেও বিশেষ বরাদ্দ তহবিল রয়েছে জামায়াতের। বর্তমান সরকার ক্ষমতা লাভের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালে মাঠে থাকার শর্তে সমপ্রতি জেএমবির জন্য অর্থ বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়েছিল জামায়াত। সরকারের সব পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের মতো অনেক ঘটনাই ঘটতে পারে। কারণ জামায়াত-শিবির বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বিডিআর সদর দপ্তরে লোমহর্ষক ঘটনা, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়ার নামে জঙ্গি হামলা, সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সবকিছু একইসূত্রে গাঁথা। সব জঙ্গি কর্মকা-ের গডফাদাররা জামায়াতের হাতে। যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে দেশে বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে এ সন্দেহ থেকে তাদের ওপর নজরদারি বেড়েছে। আর সন্দেহের সত্যতা প্রমাণ করেছে তারা। নেতারা রয়েছে অন্তরালে; নাশকতার পরিকল্পনাকারী হিসেবে।

এদের অধিকাংশ গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য আত্মগোপন করে নির্দেশনা দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা এবং পুলিশকে আক্রান্ত করার জন্য যেমন স্বাধীনতাবিরোধীরা আমাদের কাছে ঘৃণ্য তেমনি বিএনপি-জামায়াতের কর্মসূচির মধ্যে পড়ে বিশ্বজিতের মতো নিরীহের প্রাণ বিনষ্টির বিরুদ্ধেও আমরা। সুত্র ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।