আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শীতার্থদের মুখে সাময়িক হাসি

আমারও লিখার অধিকার আছে......... বিগত দুই বছর শীতার্থদের মুখে সাময়িক হাসি ফোটাতে কাজ করেছি। এক-দের মাস পরিশ্রম করে শীতবস্ত্র সংগ্রহ করে অপেক্ষা করেছি ঐ দিনটির জন্য। খুব কাছে থেকে দেখেছি মানুষ কত সামান্যতেই খুশি হয়। একটুকরো কাপড়ের বিনিময়ে যে মানুষের মুখে এই হাসি এনে দেওয়া যায়, তা আগে কখনোই ভাবিনি। ঘটনা ১ রাত ১২ টার কাছাকাছি হবে।

আমাদের শীতবস্ত্র ভর্তি গাড়ি আজিমপুর কবরস্থানের কাছে। আমরা পৌছানো মাত্রই আমাদের পিক-আপ ঘিরে ধরলো কিছু বৃদ্ধ ও রাস্তার ধারে জীবন পার করা কিছু মানুষ। অর্ধশত মানুষকে লাইনে দার করিয়ে শীতবস্ত্র বিতরন করলাম। তাদের মুখে হাসি ফোটানোর একটু চেষ্টা হয়তো। ঘটনা ২ কণকণে শীতের মধ্যে রাস্তার ল্যম্পপোস্টের নিচে জড়সড় হয়ে শুয়ে আছে মা তার দুই বছরের মেয়ে কে নিয়ে।

রাত তখন পৌনে একটা হবে হয়তো। মা তার মেয়েকে একটু উষ্ণতা দিচ্ছে তার পড়নের কাপড় দিয়ে। কাছে যেতেই ঘুমিয়ে থাকা বাচ্চাটি জেগে গেলো। তার হাতে তুলে দিলাম কিছু শীতের কাপড়। কাপড় গুলো পেয়েই খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল বাচ্চাটি।

কি যে আনন্দ মেয়েটির চোখে মুখে! ক্ষনিকের জন্য কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম আর ভাবছিলাম এত অল্পতেই কিছু মানুষ এত খুশি হয়!! ঘটনা ৩ রাত দুইটা। কণকণে শীত। আমাদের শীতবস্ত্র ভর্তি গাড়ি শাহবাগ পার হয়ে মৎস ভবনের সামনে। চোখে পড়লো কিছু মানুষ ফুটপাতের ধারে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছে। গায়ে সামান্য একটা ব্যানারের কাপড় জরানো।

লোকটা ঘুমিয়ে আছে। কাছে গিয়ে তার গায়ের উপর একটা কম্বল জরিয়ে দিলাম। ঘুম ভেঙ্গে গেল তার, দেখলাম লোকটা বৃদ্ধ। আমি ফিরছি, ঠিক তখনই সে আমাকে ডেকে আমার হাত ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দিল। ঠিক ঐ মুহুর্তের ভালোলাগা যে কি পরিমান ছুয়ে গেল আমায় বলে বোঝানো যাবে না।

বৃদ্ধের চোখের পানি আমাকে ভুলিয়ে দিল শীতবস্ত্র সংগ্রহ সময়ের পরিশ্রম ও কষ্টের কথা। হয়তো আমাদের এই ছোট ছোট সাহায্য একটু একটু করে হাসি ফোটাতে পারে ঐ মানুষগুলোর মুখে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।