আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আর কত বিশ্বজিতকে অসহিষ্ণু রাজনীতির বলি হতে হবে?

নীল সাগরের ঢেউ প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত বিশ্বজিতের মৃত্যুর খবরটা পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। বিমান বন্দরের কাছে বাস চাপায় মারা গেছে একজন। কিশোরগঞ্জ এবং সিরাজগঞ্জের একজন করে নিহত হয়েছে। এরা সবাই আমাদের অসহিষ্ণু রাজনীতির বলি। রাজনীতি যদি দেশ ও জনগণের মঙ্খলের জন্য হতো তাহলে ক্ষমতা আকড়ে থাকার জন্য কেউ ফন্দি আটতো না, বিরোধীদল্ও ক্ষমতার সিড়ি না খোজে দেশের জন্য কাজ করার সময় পেত।

বিশ্বজিতের মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতি দায়ী কে? খোজো হচ্ছে। অথচ তাকে কারা মেরেছে টিভির ভিডিও ফুটেজে তাদের ছবি আছে? সেদিকে না গিয়ে পুলিশ বসে আছে অভিযোগ পাওয়ার আশায়। নিরীহ এ পরিবারটি খুনীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সাহস পাবে? কেউ কেউ বলছেন বিরোধী দলের কর্মসূচির দিন সরকার দলীয় কর্মীরা মাঠে না নামলে এমন ঘটনা ঘটতো। এ বাক্য শুনতে তো সমস্যার সমাধান অনেক আগেই জাতীয় সংসদে হয়ে যেত, হয় তো সমস্যাই হতো না। অবরোধ চলাকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার জজকোর্ট এলাকায় আজ রোববার সকালে চাপাতির আঘাতে বিশ্বজিৎ কুমার দাস (২৪) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।

পরিবারের দাবি, ছাত্রদলের কর্মী সন্দেহে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিশ্বজিতের ওপর এ হামলা চালিয়েছে। বিশ্বজিৎ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বজিৎ বিএনপির কর্মী। এদিকে ছাত্রলীগ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৮ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ কর্মসূচির সমর্থনে আজ সকাল নয়টার দিকে ঢাকার জজকোর্ট এলাকা থেকে বিএনপি ও জামায়াত-সমর্থিত আইনজীবীরা একটি মিছিল বের করেন।

মিছিলটি ভিক্টোরিয়া পার্কের কাছে গেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আইনজীবীদের ধাওয়া দেন। এ সময় ভিক্টোরিয়া পার্ক-সংলগ্ন একটি তেলের পাম্পের কাছে তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। তখন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পাম্পের দিকে ধাওয়া দিয়ে যেতে থাকলে আতঙ্কে পথচারী বিশ্বজিৎ দৌড়ে সেখানকার একটি ডেন্টাল ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় আশ্রয় নেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে গিয়ে তাঁকে জাপটে ধরে এলোপাতাড়ি রড দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।

গুরুতর আহত হয়ে পালাতে দৌড় দেন বিশ্বজিৎ। দৌড়ে শাঁখারীবাজারের একটি গলিতে গিয়ে ঢলে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় এক রিকশাচালক বিশ্বজিৎকে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কিছুক্ষণ পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার আবু তানভীর সিদ্দিক বলেন, আঘাত ও প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে বিশ্বজিতের মৃত্যু হয়েছে। পারিবারিক সূত্র জানায়, দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে বিশ্বজিৎ সবার ছোট। বড় ভাই উত্তম কুমার দাসের পরিবারের সঙ্গেই পুরান ঢাকার হূষিকেশ দাস লেনের এক বাসায় থাকতেন তিনি। পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে তাঁর একটি দর্জির দোকান আছে। তাঁর গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার মসুরা গ্রামে।

হাসপাতালের মর্গে বড় ভাই উত্তম প্রথম আলো ডটকমকে জানান, প্রতিদিন হেঁটেই দোকানে যান বিশ্বজিৎ। আজ সকাল নয়টার দিকে দোকানের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। ১০ মিনিট পর দুর্ঘটনার খবর পান তিনি। তিনি বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, ছাত্রদলের কর্মী ভেবে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। অথচ শুধু বিশ্বজিৎ নয়, তাঁর পরিবারের কেউই কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।

’ তবে অবরোধ শেষে বিকেলে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেন, বিশ্বজিৎ বিএনপির একজন কর্মী। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নন। ’ রাজধানীর সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।