আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঙ্গালিনী উপাধি ‘সুফিয়া’কে আরো নিঃস্ব করেছে...

প্রত্যেক মানুষই কম বেশি কল্পনাবিলাসি। এমন একদিন ছিলো সেদিন আমি একটু বেশিই কল্পনাবিলাসি ছিলাম। আজ শুধু কল্পনা নয় স্বপ্ন দেখতেও ভয় পাই। আমি আবার স্বপ্ন দেখতে চাই........ কাঙ্গালিনী সুফিয়া রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি অর্ন্তগত রামদিয়া গ্রামে ১৯৬১ সালে হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। পিতা খোকন হালদার ও মাতা টুলু হালদার।

কাঙ্গালিনী সুফিয়ার পারিবারিক নাম ‘টুনি হালদার’। রাজবাড়ী তথা সমগ্র বাংলাদেশের ফোক সঙ্গিতের জনপ্রিয় এক সম্রাজ্ঞী। রাজবাড়ী জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সুফিয়া অতিপরিচিত এবং আদরণীয় একজন ব্যক্তিত্ব। অসাধারণ প্রতিভাবান এই শিল্পির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো তিনি উপস্থিত (Instant) গান তৈরি করেন এবং গান পরিবেশন করেন। গান তৈরি ও পরিবেশনের জন্য তাঁর কোন প্রকার পূর্ব প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না।

এটিই বাংলাদেশের অন্যান্য ফোক শিল্পির থেকে কাঙ্গালিনী সুফিয়ার প্রধান ব্যতিক্রম। কাঙ্গালিনী সুফিয়া মাত্র ১৪ বছর বয়সে তাঁর নিজ গ্রাম রামদিয়াতে একটি অনুষ্ঠানে গান শিল্পী হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে কাঙ্গালিনী সুফিয়ার `সুধির হালদার' নামের একজন বাউল এর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সুধির হালদারের সাথে বানিবনা না হওয়ায় অল্পকিছুদিনের মধ্যেই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের ৭ বছর পর কাঙ্গালিনী সুফিয়া উস্তাদ হালিম বয়াতির শিস্যত্ব গ্রহন করেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে ‘টুনি হালদার’ নাম পরিবর্তন করে ‘সুফিয়া খাতুন’ নাম ধারণ করেন।

পরবর্তীতে তিনি উস্তাদ হালিম বয়াতি ছাড়াও ফরিদপুর জেলার প্রখ্যাত বয়াতি ‘এনায়েত আলী’র কাছেও গান চর্চা করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী হিসাবে অর্ন্তভূক্ত হওয়ার পর তৎকালীন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর ডি.জি জনাব জনাব মুস্তফা মনোয়ার তাঁকে ‘কাঙ্গালিনী’ উপাধি প্রদান করেন। সেই থেকে ‘সুফিয়া খাতুন’ রাজবাড়ীসহ সমগ্র বাংলাদেশে ‘কাঙ্গালিনী সুফিয়া’ নামে পরিচিত। কাঙ্গালিনী সুফিয়া ইংল্যান্ড, দক্ষিন কোরিয়া, কাতার, ইটালি, হংকং, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, চিন ও ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গান পরিবেশন করেছেন। সঙ্গীতে তিনি এযাবৎ প্রায় ৩০টি জাতীয় ও ১০টি আন্তর্জাতিক পুরষ্কার লাভ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তী উজ্জ্বল করেছেন।

তাঁর সৃষ্ট ও পরিবেশিত বিখ্যাত কয়েকটি গান- ‘কোন বা পথে নিতাই গঞ্জে যাই’, ‘পরাণের বান্ধব রে, বুড়ি হইলাম তোর কারনে’, ‘নারীর কাছে কেউ যায় না’ ইত্যাদি। মূলত কাঙ্গালিনী সুফিয়া পাঁচ (৫) সদস্য বিশিষ্ট একটি দল নিয়ে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এই দলের অন্যান্যরা হলেন- বাউল জাহাঙ্গির, বাউল মান্দের ফকীর, পুষ্প (বোন), চুমকী কাঙ্গালিনী (বড় মেয়ে)। তার দ্বিতীয় স্বামী বাউল সেকম একজন দোতরা বাদক। কাঙ্গালিনী সুফিয়া বর্তমানে খুবই অসুস্থ্য।

তিনি চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রির শেখ হাসিনার নিকট সাহায্য প্রার্থণা করেছেন। একজন অসম্ভব প্রতিভাবান শিল্পী এবং রাজবাড়ী জেলা তথা বাংলাদেশের গর্ব, অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে মারা যাবেন এর থেকে দুঃখের আর কি হতে পারে?  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.