আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সস্তার ঠেঙ্গো ধুতির আড়ালে গান্ধীজির অপকর্ম

ভারত বর্ষ চিরকালই ধর্মভীরু দেশ। তাই ধর্মের নামে এ দেশে অনেক অপকর্ম করা যায়। বুদ্ধিমান গান্ধীজি সেটা বুঝতে পেরে প্রথমেই আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। অঙ্গে ধারণ করেন সস্তার ঠেঙ্গো ধুতি ও এক চিলতে চাদর। অতি সাধারণ ভাবেই জীবনযাপন শুরু করেন তিনি।

এভাবেই গান্ধীজি জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজেকে দারুণ জনপ্রিয় করে তোলেন। জনসাধারণ দেখল গান্ধিজির মধ্যে কোনো বিলাসিতা নেই। তিনি গরিব দেশের গরিব মানুষেরই সত্যিকারের প্রতিনিধি। ভারতের মূর্ত প্রতীক। দেখতে দেখতে তাই আপামর ভারতবাসী তাঁকে দেশনেতা হিসেবে বরণ করে নিল।

বসাল দেবতার আসনে। এটাই চেয়ে ছিলেন তিনি মনেপ্রাণে, তাই হল। এ ভাবেই তিনি হয়ে উঠলেন কংগ্রেসের সর্বেসর্বা, ভারতের একনম্বর নেতা ও স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্ণধার। এ ব্যপারে তার কথাই শেষ কথা। অহিংস সাধক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ঘোষণা করলেন হিংসা নয় অহিংসায় তিনি ভারতের স্বাধীনতা এনে দেবেন।

তারপরই শোনা গেলো গান্ধী দর্শনের কথা। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হল ‘গান্ধী মিথ’। সেই মিথের কথাই এখন বলব। যে সব মিথ তার সম্বন্ধে শোনা যায় তা একটার পর একটা তুলে ধরা হচ্ছে। আসলে সেই অতিকথাকে সত্যে পরিণত করার চেষ্টা চলেছিল।

(এক) গান্ধীজি দেশ বিভাগ চাননি। এ বিষয়ে তাঁর বিখ্যাত উক্তি ‘দেশভাগ হলে আমার মৃত দেহের উপর দিয়েই হবে। আমি জীবিত থাকতে দেশভাগে রাজি হব না’। বেশিরভাগ দেশের মানুষই গান্ধীজির এই উক্তিটা জানে। অথচ এটাই তাঁর সবচেয়ে বড় ধাপ্পা—সত্যের পূজারীর সবচেয়ে বড় মিথ্যা।

দেশভাগের প্রায় তিন বছর আগেই জিন্নার মালাবার হিলের বাড়িতে এক গোপোন বৈঠকে পাকিস্তান মেনে নেন গান্ধীজি। ভারতের অখণ্ডতা শেষ করেন আগে তিনি। এখানেই শেষ নয়, আরো আছে। কংগ্রেস ওয়র্কিং কমিটির অধিবেশনে দেশ বিভাগের প্রস্তাব গৃহীত হলে তিনি তা সমর্থন করেন। অথচ প্রায় সবাই জানে গান্ধীজির অমতে জিন্না, প্যাটেল, নেহেরু চক্রই দেশভাগ করেছিল।

আসলে গান্দীজিই দেশভাগের মূলে। (দুই) গান্ধীজি সত্যের পূজারী। তাই আদালতে তাঁর ছবি টাঙ্গানো হয়েছে। অথচ গান্ধীজি সত্যের চেয়ে মিথ্যে বলেছেন বেশি। তিনি মোটেই সত্যবাদী নন।

(তিন) সারা দুনিয়ায় এটা তাঁর বড় পরিচয় যে তিনি ছিলেন অহিংস। গান্ধীজি কোনো দিনও অহিংস ছিলেন না। তিনি ছিলেন সহিংস এবং সুবিধাবাদী। অহিংসার মুখোশ পরে থাকতেন। মুখোশের অন্তরালে অনেক অন্যায় কাজ করে গেছেন তিনি দিনের পর দিন।

(চার) গান্ধীজির দ্বিচারিতার অন্ত ছিল না। এই দ্বিচারিতার জন্যি বহু দেশপ্রেমিক ঠিকমত দেশের কাজ করতে পারেননি। এই দ্বিচারিতার নাম গান্ধী দর্শন। (পাঁচ) জনসাধারণের চোখে গান্ধীজি ছিলেন দেবতা। পাঁচ সন্তানের জনক হয়েও তিনি ব্রহ্মচারী।

একটি সন্তান অবশ্য অকালেই মারা যায়। নিজে নগ্ন হয়ে যুবতী মহিলাদের নগ্ন করে একসংগে রাত্রীযাপন করতেন। অন্ধ ভক্তরা ভাবতেন এটা দেবতার লীলাখেলা। (ছয়) আগেই বলেছি মানুষের কাছে গান্ধীজি দরিদ্র ভারতের প্রতীক। এখানে অধিকাংশ মানুষের বলতে গেলে লজ্জা ঢাকার মত বস্ত্র মেলে না।

চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটে, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এই অবস্থায় কী করে তিনি ভালো পোশাক পরেন? কী করেই বা ভালোমন্দ খান? পোশাকের কথা তো বলা হয়েছ এবং সবাই তা দেখতেও পান। এবার আমি তাঁর যৎসামান্য খাদ্য তালিকার কথা বলব- প্রার্থনার সময় তিনি হাততালি দিতেন। তিনি আখরোট এবং বাদাম খেতেন। সকালে সাড়ে পাঁচটার সময় তিনি ১৬ আউন্স লেবু অথবা মুসাম্বির রস খেতেন।

সকাল সাতটার সময় ১৬ আউন্স ছাগলের দুধ এবং ৮ আউন্স লেবু অথবা মুসাম্বির রস খেতেন। বারটার সময় ১৬ আউন্স ছাগলের দুধ জ্বালিয়ে এবং চার আউন্স তৈরি করে খেতেন। ৫ থেকে ৮ আউন্স রান্না করা সবজি খেতেন। কাচা সবজি খেতেন যেমন— টমেটা, গাজর, ইত্যাদি ৮ আউন্স। সবুজ পাতার সালাদ খেতেন যেমন—পালং অথবা ধনে পাতা ২ আউন্স।

দুটার সময় তিনি এক গ্লাস ডাবের জল খেতেন। বিকেল পাঁচটার সময় ১৬ আউন্স ছাগলের দুধ জ্বালিয়ে চার আউন্স তৈরি করে খেতেন। ১৯ আউন্স খেজুর দুধে জ্বাল দিয়ে খেতেন। কিছু ফল খেতেন তাঁর মধ্যে নারকেলের শাঁসও ছিলো। প্রায়ই তিনি আধঘন্টা শুয়ে থাকতেন তলপেটে মাটির আস্ত্ররণ দিয়ে এবং কপালে ন্যাকড়ায় জড়ানো ঠাণ্ডা মাটির পুল্টিস দিয়ে।

গান্ধির একজন সহযাত্রী তাঁর দৈনিক খাদ্য তালিকা দেখে তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন তাঁর খাবারের মূল্য কি ৬ পয়সা? তিনি গান্ধীর কঠর সমালোচনা করে বলেছেন তিনি কেন গরিবের মত জীবনযাপন করছেন না। খাবার সময় তিনি এক সেট নকল দাঁত ব্যবহার করতেন। তিনি দীর্ঘ দিনের আমাশায়ের রোগে ভুগছিলেন। তাঁর উচ্চ রক্ত চাপ ছিল এবং কপালের নাড়ী ধড়ফড় করত যা তাঁকে খুব কষ্ট দিত। শ্রী প্রকাশ একজন ঘনিষ্ট গান্ধীভক্ত, তিনি লিখেছেন- গান্ধীজি যখন কাছের কোন অঞ্চলে যেতেন তখন অতিথি সেবকদের তাঁর জন্য ছাগলের দুধ সংগ্রহ করতে বেশ অসুবিধ হত।

কারণ ছাগলের দুধের দাম বেশি ছিল। আমি যদি ঠিক মত স্মরণ করতে পারি, তাঁর জন্য প্রতিদিন তিন সের দুধ লাগত এবং আমি আরো স্মরণ করতে পারছি যে, আমাকে প্রতি সের দুধের দাম দিতে হত তিন টাকা করে। গান্ধীজির জীবনযাত্রা সাদাসিধে মনে হলেও, ব্যয়বহুল ছিল এবং সরজীনি নাইডু একদিন গান্ধীজিকে বলেছিলেন ‘বাপু, আপনাকে দারিদ্র্যের মত রাখতে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে’। উপরোক্ত তালিকার বাইরে তিনি প্রতিদিন মধু খেতেন এবং গুজরাটি রুটি খেতেন। ঘি দিয়ে পা মালিশ করাতেন।

এই হচ্ছেন গরিবের প্রতিভূ গান্ধী মহারাজ। অনেক জিনিসেরই আসল সত্য ধীরে ধীরেই প্রকাশ পায়। গান্ধীজির অপকর্মও এখন এই ভাবে একের পর এক প্রকাশিত হচ্ছে। গান্ধী মিথ ভেঙ্গে যাচ্ছে। (সাত) মৃত্যুর সময় গান্ধীজির মুখে নাকি ‘রাম’ নাম শোনা গিয়েছিল।

এটা তাঁকে দেবতা বানানোর আরেকটি প্রচার। গুলি লাগার পর তাঁর মুখ থেকে ‘আঃ’ শব্দ বেরিয়ে এসেছিল। প্রচার করা হয়ে ছিল এই কথা ‘হে রাম! হে ঈশ্বর’। এই কথাটা মনু গান্ধীই রটিয়েছিলেন। পিস্তলের তিন তিনটি গুলি লাগার পর এত কথা বলা অস্বাভাবিক।

বলতে পারেননি। এ রকম অনেক মিথই আছে গান্ধীজির জীবনে। মিথ মিথই, তা সত্য নয়। এই সব অতিকথা গান্ধী শীষ্যরাই প্রচার করেছিল। এবং চতুর গান্ধীজির দ্বিচারিতাই এর জন্য বেশি দায়ী।

এমন কথাও প্রচারিত আছে যে দেশ বিভাগের সময় গান্ধীজি শিশুর মত অসহায় ছিলেন। তাঁর কথা প্যাটেল, জওহরলাল নেহেরু প্রমুখ কেউ মানতে চাননি। এমনকী তাঁর চোখে জল এসে পড়েছিল। এ সবই মিথ্যা। এটা চতুর গান্ধিজির চালাকি।

কিন্তু মানুষ একে সত্য বলেই জানে। তাই এই মিথ ভাঙ্গার জন্য একই কথার পুনরাবৃত্তি করব আমি। (অলোককৃষ্ণ চক্রবর্তী এর ‘গান্ধীজির অপকর্ম’ বই থেকে গৃহিত) কপিপেষ্ট ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।