আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যন্ত্র মানবী[প্রথম পর্ব]

রাতে বারবার ঘুম ভাইঙা যাইতাছে। নাড়িভূড়ি বেবাক বাইর অইয়্যা যাইব মনে অইতাছে। অত রাইতে ফিরনের পথে কোন দোকান কি খোলা থাকে?এই রহম কাম করতে করতেই একদিন পরাণ মনে অয় খাঁচাছাড়া অইয়া যাইব। পেটের যন্ত্রনাটা আরো বারতাছে। একসময় গা গুলাইতে গুলাইতে বমি হইয়া গেল।

এহন একটু আরাম বোধ করতাছি। চোখের পাতায় একটু একটু কইরা ঘুম নামল। বাবার কাছে সুন্দর চকচকা একটা ছুরি। আমার কাছে পাঁচশ টাকা চায়। না দিলে আমারে মাইরা ফালাইব।

এই পাঁচশ টাকার লাইগা বাবায় আমারে মাইরা ফালাইব?উত্তরে কইল তোর কাছে অল্প অইতে পারে কিন্তুক আমার ঠায় মেলা টেকা। আমি পাঁচদিন মদ খাইতে পারুম। আমি হন্তদন্ত হইয়া এইখানে ,অইখানে টেকা খুঁজতাছি । কোনহানে টেকা পাইতাছিনা। বাবারে কত অনুনয় করতাছি।

তবু থামেনা। ছুরিটা আমার বুকের মধ্যে ঢুকাইয়া দিল । চিৎকার করতে করতে আমার দেহটা মাটিতে লুটাইয়া পরতাছে। চারিদিকে রক্ত আর রক্ত। গোঙরাতে গোঙরাতে দুইচোখে পানি গড়াইতাছে।

ঘড়িতে ছয়টা বাজে ,সত্যি সত্যি বুকের মধ্যে অনেক ব্যাথা করতাছে। ক্ষুধাও লাগছে জমছের। সাতটায় বাইরাইয়া পড়তে অইব। বাসা তনে বাইর অইয়া প্রায় একমাইল হাটন লাগে। বাসে চড়লে তাড়াতাড়ি যাওন যায় কিন্তুক মাসে ছয়শ টেকা লাগে।

বেতনের পনেরশ বাবারে পাঠাইন লাগে। খাইয়া না খাইয়া জীবণটারে পার করতাছি। ভাত চুলায় দিয়া গোছলের জন্য লাইন ধরলাম। এই বাসায় আমরা দশজন থাকি। বেবাকই গার্মেন্সে চাকরী করি।

অনেক্ষন খাড়াইয়া ফেরত আইলাম। আইজ আর গোছল অইবনা। আমার উঠতে দেরী অইছে এমনিতেই। আবার যাইতে দেরী হইলে দাড়োয়ান ঢুকতে দিবনা। হাজিরা কাঁটা যাইলে চলুম কেমনে।

চুলার ভাত যাওভাত হইয়া গেছে। তরকারীও নাই যাহইছে তাই কোন রকমে লবণ দিয়া খাইয়া বাকীটুক বাটিতে ভইরা লইয়া হাটতে থাকলাম। কাইল বেতন অইব। বেতন যেদিন দেয় হেইদিন ভালই লাগে কিন্তু ঘরে নিয়া গিয়া বাড়ি ওয়ালারে দিয়া ,বাড়িতে পাঠাইনের পরই মনডা খারাপ হইয়া যায়। হারাডা মাস কেমনে যাইব হেই চিন্তা।

সবচেয়ে খারাপ লাগে যখন মানুষ ইজ্জত না দেয়। গতকাইল যহন বমি অইছে তহন বাড়ীওয়ালী কইতাছিল আবিয়াত্য মাইয়া বমি করে কেন?বিউটি বুঝাইয়া কইল ওর পেটে ব্যাথা হয়,মনে কয় গ্যাস হইছে। -ডাক্তরের কাছে লইয়া যাইচ। কোন ঝুট ঝামেলা আমার বাসায় চলবনা। রাতে সাড়ে দশটায় অফিস ছুটি অইল।

আইজও অষুধ আনা গেল না। ডাক্তরের কাছে যামু শুক্রবারদিন। হেইদিন ডাক্তরের ফিস দেয়া লাগে না। তারাম্যাডিকেলে ফ্রি চিকিৎসা দেয়। হাটতে হাটতে শরীর চলেনা তবু হাটন লাগে।

মাঝেমধ্যে পাখির দিকে তাকাইয়া মনে হয় যদি আমারও দুইডা পাখা গজাইত। যদি ঘুমতন উইট্যা দেখতাম আমারও দুইটা পাখা হইছে!দূ-র কিযে ভাবতাছি। চোখ কান খোলা রাইখ্যা রাইতে হাটন লাগে। ছেলে মানুষের কোন জটলা দেখলে সামনে আগাইতে ভয় লাগে। গেছে সপ্তাহে বিলকিছরে কারা জানি ধইরা নিয়া গেল।

লগে যারা আছিল তাগ মানা করছে-চিল্যাইলে সবডিরে খতম কইরা ফেলুম। কেউ কোন শব্দ করলনা ভয়ে। পরদিন ওর লাশ পাওয়া গেল একমাইল দূরে ব্রিজের নীচে । সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। দেইখা আইয়া সারারাইত ভয়ে চোখের পাতা এক করতে পারি নাই।

---চলবে---- ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।