আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরাগ অপহরণ, উদ্ধার এবং অতঃপর...

আটক আমিরকে নিয়ে একের পর এক নাটক! কেরাণীগঞ্জে শিশু পরাগ অপহরণের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত আমীরকে আটকের দাবি করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তবে অভিযানের পরপরই বন্দুকযুদ্ধে আমির নিহত হয়েছে ডিবি পুলিশের এমন ঘোষণা আর আটক ব্যক্তি নিজেকে আমির নয় মোক্তার হোসেন দাবি করায় পুরো ঘটনা নিয়ে সৃষ্টি হয় ধুম্রজাল। ডিবি পুলিশ বলছে, নিজেকে বাঁচাতেই আমীর এসব বিভ্রান্তিকর কথা বলছে। গত ১১ নভেম্বর কেরাণীগঞ্জ সুভাড্যা পশ্চিম পাড়া থেকে মা-বোন ও গাড়ি চালককে গুলি করে অপহরণ করা হয় ছয় বছরের শিশু পরাগকে। অপহরণের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত করা হয় আমির হোসেনকে।

অভিযুক্তকে আটক করতে আমিরের সহযোগীর তথ্যের ভিত্তিতে টঙ্গীর কনসেপ্ট গার্মেন্ট-এর সামনে মনির হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। এ বাড়িতে এক সপ্তাহ আগে বাসা ভাড়া নেয় আমীর ও তার স্ত্রী বিউটি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রাত তিনটার দিকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে আমির। গোয়েন্দা পুলিশের দাবি, পুলিশ গুলি ছুড়লে এক পর্যায়ে আহত হয় আমির। গোয়েন্দা পুলিশের বক্তব্য ডিবি'র এসি সানোয়ার হোসেন বলেন, ‌'গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকাতে আমরা একটি অপারেশন পরিচালনা করি।

এবং সে পর্যায়ে রাত প্রায় তিনটার দিকে এই এলাকার কনসেপ্ট গার্মেন্ট-এর সামনের বাড়িটি চারিদিক দিয়ে ঘিরে ফেলি। যখন আমরা নিশ্চিত হই যে এই বাসার ভিতরে যদি সেই অপহরণকারী আমীর থেকে থাকে সে যাতে কোনোভাবেই এ বাসার ভেতর থেকে বের হতে না পারে। এবং আমাদের আরো তথ্য জানা ছিলো যে সে সব সময়ই একটি অস্ত্র লোডেড অবস্থায় রাখে এবং সে গুলি করবেই। এবং সে প্রস্তুতি সাপেক্ষে আমাদের অফিসাররা বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরিহিত অবস্থায় যারা ছিলেন তারা গেটটা খোলার জন্য তাকে অনুরোধ করে। পরবর্তীতে যে বাড়িওয়ালা একজন ভদ্রমহিলা আছেন ওনি তাকে দরজা খোলার জন্য অনুরোধ করে।

এ অবস্থায় প্রায় ঘন্টা খানেক পরে সে যখন আস্তে করে দরজাটা খোলে এবং দরজা খোলার সাথে সাথে সে গুলি শুরু করে দেয়। এবং এ ধস্তাধস্তি অবস্থায় আমার অফিসাররা পড়ে যায় ও তিনজন অফিসার আহত হয়। এবং আপনারা দেখতে পাবেন যে দরজার মধ্যে গুলির চিহ্ণ লেগে আছে। এর পরবর্তীতে পাল্টা যখন আমার অফিসাররা গুলি ছোঁড়ে, কিছুক্ষণ পর আর কোনো শব্দ না হলে আমাদের অফিসাররা ভিতরে ঢোকে। তখন দেখে আমীর নিচে পড়ে আছে।

' গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির স্ত্রীর বক্তব্য তবে গোলাগুলির কোনো শব্দ শুনতে পায়নি বলে জানিয়েছেন আমীরের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার মৌ। সুমাইয়া আক্তার জানান, পুলিশ আসার পর কি হয়েছে সেটা তিনি জানেন না। তিনি জানান তার দরজা লাগানো ছিলো, আমি কোনো আওয়াজ পাইনি। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ কথিত আমীরকে টঙ্গি হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতলে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি নিজেকে মোক্তার হোসেন হিসেবে দাবি করেন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাকে ঘরের ভেতর গুলি করা হয়েছে আমার বউ বাচ্চার সামনে। ' এ সময় গুলিবিদ্ধ আমির মারা গেছেন বলে গুজব সৃষ্টি হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। কথিত বন্দুক যুদ্ধ ও গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ডিবি কর্মকর্তারা। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি আশঙ্কামুক্ত নিজেকে মোক্তার হোসেন হিসেবে পরিচয়দানকারী আহত কথিত আমির এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিনি এখন আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান। গুলিবিদ্ধ আমিরকে দেখতে গিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, আমিরের শরীরে দুটো গুলি দেখা যাচ্ছে। এরপরেও ডাক্তার আমাকে বলেছে, পুরোপুরি নিরাপদ, তবে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে। এক্সরে'র যে রিপোর্ট এসেছে, সে রিপোর্টে ভেতরে এখনো গুলির অবস্থান পাওয়া যাচ্ছে না।

তবে সিটিস্ক্যানে সেটা আসতে পারে ধারণা করছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। ডিবি পুলিশের দাবি, মুক্তারই আমির দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিবি পুলিশ দাবি করে, মোক্তার হোসেনই পরাগ অপহরণের মূল হোতা আমীর। নিজেকে বাঁচাতে সে এখন আবোল-তাবোল বকছে। মুক্তিপণের জন্য পরাগকে অপহরণ করা হলেও, কোনো ধরনের লেনদেন ছাড়াই তাকে হোস্টেজ নেগোসিয়েশন পদ্ধতিতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়। ব্রিফিং-এ অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার আমিরের মোটর সাইকেলের চালক আল-আমিন ও ব্যবসায়ীক অংশিদার মামুনকে হাজির করা হয়।

তারা অপহরণের সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন। ডিবি পুলিশ সাংবাদিকদের জানিয়েছে, বন্দুকযুদ্ধে আহত আমীরকে সুস্থ করে তুলতে সর্বাধুনিক চিকিৎসা নিশ্চত করা হচ্ছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.