আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাম পরিবর্তন!!!!!...............?

আমি নিজের জন্য এবারে নাম পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে নির্বাচন কমিশনে। দীর্ঘ ৪০ বছর পরে নির্বাচন কমিশনের নাম পরিবর্তন করেছে কাজী রকিবউদ্দীন আহম্মদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন। ‘বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন’ নামটি পরিবর্তন করে ‘নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ’ করা হয়েছে। দীর্ঘ দিন থেকেই বাংলাদেশ শব্দটি শুরুতে থাকলে তা এখন শেষে দেওয়া হয়েছে। এদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নাম পরিবর্তন নিয়ে কমিশন এবং সচিবের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে।

নাম নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে ইসি সচিবালয়ে। কমিশন ও সচিবালয়ের মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্বেই নাম পাল্টানো হয়েছে বলে মনে করছেন ইসির কর্মকর্তারা। এমনকি এ নিয়ে কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিকের সঙ্গে এক নির্বাচন কমিশনারের বাদানুবাদও হয়েছে। এর জের ধরে সার্ভার স্টেশন দেখার কথা বলে নির্বাচন কমিশন সচিব গত মঙ্গলবার নিজ এলাকা সিলেটে গেছেন। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের দৈনন্দিন কার্যক্রমে পরিবর্তিত নাম না না লেখায় উপ-সচিব আনোয়ার হোসেনকে বদলী করা হয়েছে।

স্বাধীনতার পর থেকেই এই প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন’ হিসেবে ব্যবহারিত হয়ে আসছে। কিন্তু কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন এই নামকে যথাযথ মনে করছে না। ইসির দায়িত্ত্বশীল কর্মকর্তা এর কারণ হিসেবে বলেন, ‘ইসি সচিবালয়ের কাগজ-পত্র, ফাইল, প্যাডের সব জায়গায় লেখা থাকতো ‘বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়’। পরে লেখা থাকে নির্বাচন কমিশন, আগারগাঁও, ঢাকা। ’ তিনি বলেন, এতে বর্তমান কমিশনের এক কমিশনার প্রশ্ন তুলেছেন, কে বড় কমিশন না কমিশন সচিবালয়? কে কার অধীনে কাজ করে? নির্বাচন কমিশনকে প্রশাসনিক সহায়তা দেওয়ার জন্য যদি ইসি সচিবালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়ে থাকে তাহলে কেন কমিশনের নাম আগে লেখা হবেনা?’ আর এ থেকেই নির্বাচন কমিশনের নাম পরিবর্তন করে ‘নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ’ করা হয়েছে এবং আগে ‘নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ’ পরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা লেখা হচ্ছে।

নাম পরিবর্তনের যুক্তিতে কমিশন বলছে, এই প্রতিষ্ঠানের নাম ‘নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ’ হওয়া উচিত। কমিশনের যুক্তি হচ্ছে-সংবিধানের ৯৪(১) অনুচ্ছেদে শুধুমাত্র ‘বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট’ নামটিই নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের নাম কি হবে তা সংবিধানে বলা নেই। তাই কমিশন মনে করছে, সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে-‘বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে”। সেই হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ’ হওয়া যুক্তি সঙ্গত।

ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা কমিশনের এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন। একজন কর্মকর্তা জানান, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নাম সংবিধানে নিদিষ্ট করে দেওয়ার দরকার নেই। তিনি জানান, ‘সংবিধানের ৯৪ (১) অনুচ্ছেদে বলা আছে, বাংলাদেশের জন্য একটি সুপ্রীম কোর্ট থাকিবে, যার নাম হইবে ‘বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট’। অন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নাম যেহেতু সংবিধানে উল্লেখ্য নাই, তাই সংবিধানের স্পিরিট অনুযায়ী অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নাম ঠিক হয়। ’ তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, যেমন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ কর্ম কমিশন ইত্যাদি।

এ স্পিরিট থেকেই স্বাধীনতার পর ‘বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন’ নামটি প্রচলিত আছে। আর এই ‘বাংলাদেশ নির্বাচন কশিমন’ নামটিই সঠিক বলে মনে করছেন তারা। নাম পরিবর্তন করাকে অনেকে ব্যয়বহুল ও অযৌক্তিক বলে মনে করছেন। জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল মোবারক এ বিষয়ে স্পষ্ট করে বলেন, সংবিধানে যা আছে সে নামই ব্যবহার করা হচ্ছে। এতোদিন ভুল নাম ব্যবহার হচ্ছিল।

ছেলের আকিকায় এক নাম রাখছেন পরে অন্যনামে ডাকবেন তা তো হয় না। কোন ভুল সঠিক করতে গেলে কোন সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয় না। মোবারক বলেন, প্রতিষ্ঠান হলো নির্বাচন কমিশন। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় হলো একটা ঠিকানা। এটা সবাইকে বুঝতে হবে।

অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে যে নাম লেখা হচ্ছে তা পরিবর্তনে কোন যৌক্তিক কারণ নেই। তবে কমিশনের সাথে রাগারাগি করে ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে তিনি অস্বীকার করেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।