আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বালিয়াটি জমিদারবাড়ীতে একদিন............ (ছবি ব্লগ)

হুট করেই প্ল্যান, আর তারপর বেরিয়ে গেলাম কাউকে কিছু না বলে, গন্তব্য মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া। সকাল সাড়ে আটটায় গাবতলী থেকে এসবি লিঙ্ক বাসে ষাট টাকার টিকেট কেটে নেমে পড়লাম সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে, সময় লাগলো আড়াই ঘণ্টা। পেট চো চো করছে, কিছু খাওয়া অতি আবশ্যক। সামনেই পাওয়া গেল লোকনাথ মিষ্টান্ন ভান্ডার, সেখানে আরেক চমক। চমৎকার ভূনা খিচূড়ি, প্লেট বিশ টাকা।

ঢাকা ভার্সিটির বাইরেও যে বিশ টাকায় খিচুড়ি খাওয়া যায় সেটা জানা ছিলো না। দুর্দান্ত সেই খিচুড়ি আর অমলেট সেঁটে আমরা বেরিয়ে আসলাম। সেই দোকানে আবার চা হয় না, কফি আছে......... প্রতি কাপ সেই বিশ টাকাই! ঠেলে ঠেলে চলছে গাড়ি......... এবার বালিয়াটি জমিদার বাড়ীর খোজ। একটা ভ্যান টাইপের রিকশা ঠিক করে উঠে গেলাম। (সিএঞ্জি বা অটো নিলেই সবচেয়ে ভালো, আমরা একটু পাকনামী করেছিলাম ) চন্দ্রপৃষ্ঠের মত রাস্তায় মুন রোভারের মত উল্টেপাল্টে ঝাকি খেয়ে খেয়ে পৌছলাম বালিয়াটি বাজারে।

বেচারা ভ্যান চালকের অবস্থা কাহিল, বেশ ক’বার নেমে গিয়ে ঠেলে ধাক্কিয়ে অবশেষে জমিদার বাড়ীর সিংহদুয়ারে নামা গেল। দশ টাকার টিকেট কেটে যাত্রা শুরু.......... জমিদারবাড়ির সিংহদুয়ারে থমথমে দালানগুলো দাঁড়িয়ে আছে একা একা এটি মূলত এখন জাদুঘর............... দোতলায় ছিলো রঙমহল বিশাল পুকুর আর বাধানো ঘাট দেখলেই বোঝা যা, বহু নাটকের সাক্ষী জলে তাহার ছায়া ভেতর বাড়ী হরর বা সাসপেন্স মুভির সেট হিসেবে মন্দ হবে না সিংহ মামা দেয় হামা............... চারটে দরজায় চার সিংহ দাঁড়িয়ে বাড়ীর ছাদে ওঠা নিষেধ............... কারণ, ভেঙ্গে পড়ে যেতে পারে সেখান থেকে আরও কিছু দূরে আরো একটা জমিদারবাড়ির কথা শুনেছিলাম, পাকুটিয়া। সেখানে সম্ভবত এখন কলেজ বানানো হয়েছে। সময় স্বল্পতায় সেদিকে যাওয়া গেলনা। যতটুকু জানলাম, পাকুটিয়া পড়েছে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে, বালিয়াটি তো মানিকগঞ্জে, আবার সাটুরিয়ার অনেক দোকানেই লেখা - ধামরাই, ঢাকা।

ভালোই............ !!! যারা যেতে চান - গাবতলী থেকে এসবি লিঙ্ক বা জনসেবা বাসে ষাট টাকার টিকেট কেটে উঠুন, ধামরাই হয়ে আপনাকে নামিয়ে দেবে সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে। সময় লাগবে আড়াই ঘণ্টা। সেখান থেকে জনপ্রতি দশ টাকায় অটো বা সিএঞ্জিতে বালিয়াটি। যারা মানিকগঞ্জ হয়ে আসতে চান, প্রথমে গুলিস্তান বা গাবতলী থেকে মানিকগঞ্জ আসুন, এরপর মানিকগঞ্জ থেকে সাটুরিয়ার বাসে উঠে পড়ুন। ঢোকার সময় দশ টাকার টিকেট কাটা লাগবে।

বালিয়াটিতে খাবারের জায়গা বা দোকান নেই ভালো, খাওয়াটা সাটুরিয়ায় সারতে পারেন, বা মানিকগঞ্জে। তবে হ্যা, দয়া করে পুরাকীর্তির গায়ে আপনার আগমন কিংবা ভালোবাসার নিদর্শন ("বলদ+গাভী" টাইপের জিনিস) বা অটোগ্রাফ লিখে দিয়ে আসবেন না। বাঙ্গালী জাতির বদঅভ্যাসগুলো আমাদের ইতিহাস আর ঐতিহ্যকে ধ্বংস করতে যথেষ্ট শক্তিশালী। হ্যাপি ট্র্যাভেলিং  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.