আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যে কথা বলতেই হবে---গুন্টার গ্রাস

"আমরা জিতবো , আমরা বাঁচবো"-"জোরদার কংক্রিট , ভেনেজুয়েলান বিপ্লবের নায়ক , সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াইয়ের প্রবাদপুরুষ , গণমানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা , ভেনেজুয়েলার পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ" (গুন্টার গ্রাসের এই কবিতাটি আলোড়ন তুলেছে সারা বিশ্বেই । পশ্চিমা পণ্ডিতদের ইসরায়েল প্রশ্নে অপরাধমূলক নীরবতার বিরুদ্ধে এই কবিতাটি এক সোচ্চার প্রতিবাদ । তবে অনুমিতভাবেই ইহুদীবিদ্বেষ তো নয়ই এমনকি ইহুদীবাদের বিরোধিতা না করেও ইহুদীবিরোধী গালি শুনতে হয়েছে গুন্টার গ্রাসকে এই কবিতা লেখার কারনে । ) কেন আমি চুপ করে থাকি , লুকিয়ে রেখেছি এতকাল যা পরিস্কারভাবে ছিল ও আছে সেই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা , যার শেষে আমরা বড়জোর বেঁচে যাওয়া পাদটীকা । এ হলো আগে হামলার অবিসংবাদিত অধিকার যে হামলা গুঁড়িয়ে দেবে চিহ্ন ইরানী জনতার- এক হামবড়ার অনুগত করে যাদেরে বিকৃত উল্লাসে করা হয়েছে মাতোয়ারা- কেননা শোনা গেছে তাদের দেশে বোমা নাকি বানাচ্ছে তারা ।

তাহলে কেন আমি সেজে আছি বোবা কালা সেই ভাসুরের নাম কেন করছি না শালা গোপনে গোপনে যে দেশ বহু বছরে বাড়াচ্ছে পারমাণবিক ক্ষমতার লীলা আর তার পুরোটাই নিয়ন্ত্রণের অতীত কেননা সেখানে যাওয়া মানা অনুমতি ব্যতীত । এই সার্বজনীন চুপ মেরে যাওয়া যাকে মেনে নিয়ে আমারও নীরব হওয়া , মিথ্যার এই অপরাধমূলক বেসাতি আর বলপ্রয়োগ আমি বুঝতে পারি ; আর এও পারি বুঝতে-তাকে অবজ্ঞার পরিণাম ইহুদী বিদ্বেষীর খাতায় উঠবে তোমার নাম । কিন্তু এখন আমার দেশ বহুবার যাকে দাঁড়াতে হয়েছে কাঠগড়ায় তার নিজেরই অপরাধের জন্য অপরাধ তার তুলনাবিহীন , বিনিময়ে পয়সার খাতিরে যদিও তার চপল তীক্ষ ঠোঁটে ক্ষতিপূরণের অঙ্গীকার , ঘোষণা করেছে ইসরায়েলের কাছে ডুবোজাহাজ বেচবে আবার যার বিশেষত্ব হলো সবকিছু ধ্বংস করা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ক্ষমতা সেই দেশের দিকে-এখনও যেখানে প্রমাণ হয়নি একটিও এটম বোমা থাকার নিশ্চয়তা কিন্তু থাকতে পারে এই ভয়ই কি নয় যথেষ্ঠ ? তাই বলছি কথা , বলতেই হবে জেনো । কেন আমি কথা বলিনি এতদিন ? কেননা ভেবেছি আমি আমার জন্ম অমোচনীয় যে দাগে বেঁধেছে আমাকে ইসরায়েলের সাথে , তাতেই আমি বাঁধা আর থাকবোও বাঁধা চিরকাল । তার সোচ্চার উচ্চারণে সত্য কেবল ।

তাহলে কেবল এখনই কেন মুখ খুলছি আমি এই বুড়ো বয়সে , যখন ফুড়িয়ে এসেছে কলমের কালি এই ভাঙ্গাচোরা বিশ্বশান্তিকে ইসরায়েলের পরমাণু শক্তি মরণের দিকে ঠেলে দেবে বলে ? কেননা একথা আজই বলতেই হবে কাল বড্ড হয়ে যেতে পারে দেরি আর আমরা জার্মানরা যারা বহু বছর বয়ে বেড়াচ্ছি পাপের ভার হতে যাচ্ছি নতুন দোজখের খড়ি আগে থেকেই যা যাচ্ছে পরিস্কার বোঝা আর বৃথা তাই নানা খোঁড়া অজুহাত খোঁজা । আর স্বীকার করতেই হবে আমি আর চুপ নই পশ্চিমের ভণ্ডামির আমি অবসান চাই । আর আশা করি এই আপনাদেরও পাবো এই কাতারেই , নীরবতার অবসান করে আসুন করি চিত্‍কার যাতে কমে আসে জ্ঞাত এক অভিশাপের বিপদের ভার বলপ্রয়োগ নয় ব্যবস্থা হোক অন্য বরং একই ব্যবস্থা নেয়া হোক ইসরাঈলী পরমাণু শক্তি আর ইরানী পরমাণু ক্ষেত্রের জন্য স্বীকৃত আন্তর্জাতিক সংস্থার নজরদারি হোক উন্মুক্ত উভয় দেশের সরকারের জন্যই একই নীতি প্রযোজ্য । এই পথই ইসরায়েলী , ফিলিস্তিনি সকলের শুধু তাদেরই নয় , উন্মত্ততার ঘেরাটোপে বন্দি সকল মানুষ এই অঞ্চলের শত্রুর নিষ্ঠুর থাবার নিচে যাদের বসবাস এবং আমাদেরও , এছাড়া পথ নেই আর । তথ্যসূত্র : *লেখক : গুন্টার গ্রাস সাহিত্যে নোবেল-জয়ী জার্মান ঔপন্যাসিক , কবি , নাট্যকার , ভাস্কর , গ্রাফিক ডিজাইনার ও বামপন্থী বুদ্ধিজীবী ।

*অনূবাদ : আবুল হাসান রুবেল সদস্য , গণসংহতি আন্দোলন , কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটি । আহ্বায়ক , প্রতিবেশ আন্দোলন । *গণসংহতি আন্দোলনের মুখপত্র "গণসংহতি" পত্রিকা থেকে নেওয়া । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।