আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

~~~~ বাংলার অনিন্দ্য সুন্দর দশটি নদী নিয়ে মেগা পোস্ট ( ছবি সহ ) ~~~~

কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :) কীর্তনখোলা বাংলাদেশের দক্ষিণাংশে অবস্থিত একটি নদী। এই নদীর তীরে বরিশাল শহর অবস্থিত। কীর্তনখোলা নদীর শুরু হয়েছে বরিশাল জেলার শায়েস্তাবাদ হতে। গজালিয়ার কাছে গিয়ে এটি পতিত হয়েছে গাবখান খালে। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার।

শায়েস্তাবাদ হতে নলছিটি অবধি নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২১ কিলোমিটার। এ জায়গায় নদীটির প্রস্থ প্রায় আধা কিলোমিটার। ব্রিটিশ আমলে এটি আরো বেশি প্রমত্তা ছিলো, সেসময়ে এর প্রস্থ ছিলো ১ কিলোমিটারের মতো। গত ১ শতাব্দী ধরে চর পড়ে কীর্তনখোলার প্রস্থ কমে গেছে। এর পাশাপাশি পলি পড়ে নদীটির নাব্যতাও হ্রাস পেয়েছে।

কীর্তনখোলা নদীর উপরে বরিশাল নৌ বন্দর অবস্থিত, যা বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম নদী-বন্দর । কীর্তনখোলা এ শব্দটি উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উজ্জ্বল নারীর মতো এক নদীর দৃশ্য ভেসে ওঠে চোখের সামনে। এই নদীর সঙ্গে বরিশালের মানুষের নাড়ির সম্পর্ক বিদ্যমান। কীর্তনখোলা আর বরিশালের মানুষ যেন এক সুতায় গাঁথা। একটি বাদে অপরটি চলে না।

বরিশাল আর কীর্তনখোলা এ যেন অবিচ্ছেদ্য। কীর্তনখোলা এমনই এক নদী, যে নদী নিয়ে প্রচুর কবিতা, গান লেখা হয়েছে। বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেছেন, বড় হয়েছেন কিন্তু কীর্তনখোলার জলে স্নান করেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। বরিশালের মানুষ যারা দূর-দূরানত্মে থাকেন, তাদের কাছে এই নদী এক স্মৃতি বিলাস। দেশ বিভাগের পর যারা বরিশাল ছেড়ে ভারতের বিভিন্ন প্রানত্মে বসতি স্থাপন করেছেন, তাঁরাও বরিশালের মানুষের দেখা পেলে এই নদী সম্পর্কে খোঁজখবর জানাতে চান।

বস্তুত কীর্তনখোলা শব্দটি বরিশালের মানুষের জীবনের সঙ্গে দ্রবীভূত হয়ে গেছে। কিন্তু কীর্তনখোলা আজ বিপন্ন। বিভিন্ন স্থানে জেগে উঠেছে চর। প্রায়শ লঞ্চ আটকে পড়ে। জেগে ওঠা চর নিয়ে শুরম্ন হয়েছে তুঘলকি কা- যে যেভাবে পারছে কীর্তনখোলা দখল করে নিচ্ছে।

কীর্তনখোলা নদীর নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানান রহস্য। সরকারী কাগজপত্রে এই নদীর নাম কখনই কীর্তনখোলা স্বীকার করা হয়নি। সিএস ও আরএস খতিয়ান ও অন্যান্য ম্যাপে নদীর নাম বলা হয়েছে বরিশাল নদী। বরিশালের ইতিহাস লেখক এক সময়ের ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরেট হেনরি বেভারিজ এই কথায়ই বলেছেন, তিনি তাঁর দ্য ডিস্ট্রিক্ট অব বাকেরগঞ্জ, ইটস হিস্ট্রি এ্যান্ড স্ট্যাটিকস গ্রন্থে লিখেছেন, জেলার সবচেয়ে বড় শহর বরিশাল এবং এখানে প্রধান আদালতগুলো অবস্থিত। বরিশাল নদীর পশ্চিম তীরে এর অবস্থান।

তিনি আবার ফুটনোট দিয়ে লিখেছেন, আমি বিশ্বাস করি, নদীর প্রকৃত নাম কীর্তনখোলা। কিন্তু এ নাম কখনও উচ্চারিত হতে শুনিনি। পরবর্তী ইতিহাস লেখকরা একথাই বলে গেছেন। জেলার যেসব সার্ভে ম্যাপ রয়েছে, সেখানে কীর্তনখোলা নদীর অসত্মিত্বের কথা স্বীকার করা হয়নি। বলা হয়েছে, বরিশাল নদী।

স্থানীয়ভাবে নদীর নামকরণ নিয়ে দু/তিনটি বক্তব্য শোনা যায়। নদীর পার ঘেঁষেই শহরের সবচেয়ে পুরনো হাট রয়েছে। প্রচলিত রয়েছে, সেখানে কীর্তনের উৎসব হতো। সেই থেকে এই নদীর নাম হয়েছে কীর্তনখোলা। কেউ কেউ হাটখোলায় স্থায়ীভাবে কীর্তনের দল বসবাস করার কারণে এর নাম কীর্তনখোলা হয়েছে বলে মনে করেন।

তবে নদীর নামকরণের সঙ্গে কীর্তনের কিংবা কীর্তনীয়দের যে একটা সম্পর্ক রয়েছে তা নিশ্চিত। কৃষ্ণলীলার কাহিনী নিয়ে কীর্তনীয়রা গানে মেতে থাকতেন। কৃষ্ণ রাধাকে নিয়ে যমুনা নদীতে লীলায় মেতে উঠতেন। বরিশালে যমুনা না থাকলেও কীর্তনখোলা নদীই যেন রাধা-কৃষ্ণের অমর প্রেমের গাথা হয়ে আছে। কীর্তনখোলা মূলত আড়িয়াল খাঁ নদের একটি শাখা।

আড়িয়াল খাঁর উৎপত্তি পদ্মা থেকে। বরিশাল ঘেঁষে কীর্তনখোলা নদী পশ্চিমে এগিয়ে নলছিটি থানার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। সেই সঙ্গে পরিচিতি পেয়েছে নাম। একটি অংশ ধানসিড়ি নাম নিয়ে কচা নদীতে গিয়ে মিশেছে। অপর অংশ মিলেছে বিষখালী নদীতে।

দেিণ কীর্তনখোলা রানীহাট বাকেরগঞ্জ গিয়ে মিশেছে। কীর্তনখোলা নদীতে ব্রিটিশ স্টিমার কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে চলত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা জ্যোতিন্দ্রনাথ ঠাকুরের জাহাজ। রবীন্দ্রনাথ সেই জাহাজে করে বরিশালে এসেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ পানসীঘাটে পানসীতে রাতযাপন করেন। কীর্তনখোলার বুকে সে সময় জমিদারদের পানসী ভাসত নানান চমক নিয়ে।

জাতীয় কবি কাজী নজরম্নল ইসলাম কীর্তনখোলার বুকে পদচিহ্ন এঁকে ছিলেন। কীর্তনখোলা নদীর কারণে বরিশাল এক অপূর্ব শহর হয়ে উঠেছিল। কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন থেকে শহর রা করার জন্য ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর মি. বেট্রি শহর রা বাঁধ নির্মাণ করেছিলেন। জোটের আমলে নামকায়াসত্মে শহর রা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ওই নির্মাণ কাজ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ব্রিটিশ সরকার এমনকি পাকিসত্মান সরকারের প্রথমদিকে শহর রা বাঁধের নদীর পাড়ে কোন ধরনের নির্মাণকাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছি সৌন্দর্য রার্থে। কিন্তু কীর্তনখোলার সেই যৌবন হারিয়ে গেছে। জীবনানন্দ দাস, মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের বরিশালের নদী কীর্তনখোলা এখন সব হারিয়ে বৈধব্য গ্রহণ করেছে। বরিশাল প্রেসকাবের সভাপতি এস এম ইকবাল বলেছেন, বান্দ রোডের পাশে ছোট ছোট বেঞ্চি ছিল। সেখানে বসে নদী দেখা যেত।

নদী ছুঁয়ে ছিল বান্দ রোড। কিন্তু সেখান থেকে নদী ছুঁয়ে গেছে কয়েক শ' গজ দূরে। যেখানে এক সময় নদী ছিল, সেখানে এখন চর জেগেছে। লেডিস পার্ক, খাদ্যগুদাম, এলজিডি ভবন, বিনোদন রেসত্মরাঁ, খেয়াঘাট, মৎস্য মার্কেট, ইসলামী হাসপাতাল, স্টেডিয়াম। অব্যাহত পলি ভরাটের কারণে নদীর বুকে জেগে উঠেছে বিশাল চর।

এক সময় অহরহ জাহাজ চলাচল করত কীর্তনখোলায়। কিন্তু আজ লঞ্চ চলাচল করা বড় কষ্টকর। আশির দশকের শুরম্নতে ১৯৮৩ সালে একদল পানি বিশেষজ্ঞ কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন রোধ এবং নদীর নাব্য রায় কিছু সুনির্দিষ্ট প্রসত্মাব দিয়েছিলেন। কীর্তনখোলার অপর তীরের গ্রাম চরকাউয়ার ভাঙ্গন রোধ, নদীর নাব্য ইত্যাদি বিষয়ে পানি বিশেষজ্ঞ দল বরিশাল সফর করে। তারা চরকাউয়া এবং নদীব েজেগে ওঠা বিশাল চরটি পরিদর্শন করে।

পরিদর্শন শেষে উর্ধতন কতর্ৃপরে কাছে রিপোর্ট পেশ করে। বরিশাল ত্যাগের আগে ওই সদস্যরা সুশীল সমাজ তথা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কীর্তনখোলা নদীর গতিপথ পরিবর্তনের মাধ্যমে বরিশাল শহরের দিকে চরপাড়া এবং চরকাউয়ার ভাঙ্গন রোধ সম্ভব। খুশির খবর হলো, মহাজোটের নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান বরিশালে এসে জনসভায় প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন, কীর্তনখোলা নদী খননের মধ্যদিয়ে তার কর্মকা- শুরম্ন হবে। কিন্তু তাঁর দেয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী কীর্তনখোলার ড্রেজিংয়ের কাজের শুভসূচনা শুরম্ন হয়েছে। হয়তোবা বহতা কীর্তনখোলাকে আবার স্বরূপে দেখা যাবে।

এছাড়া কীর্তনখোলা পশ্চিমতীরে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য শীঘ্রই বড় আকারের কর্মসূচী নেয়া হবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। কুশিয়ারা নদী বাংলাদেশের একটি নদী। কুশিয়ারা নদীর উত্স হচ্ছে বরাক বা বরবক্র নদী। বরাক নদীর উত্পত্তি স্তল মণিপুরের উত্তরে আঙ্গামীনাগা পাহাড়। উক্ত পাহাড় হতে বরাক নদী উত্পন্ন হয়ে মণিপুর হয়ে কাছাড় জেলা ভেদ করে বদপুর দিয়ে সিলেটে প্রবেশ করেছে।

সিলেটের সীমান্তস্থিত অমলসিদ স্থান থেকে দুই শাখায় দুই ভিন্ন নামে প্রবাহিত হচ্ছে। যার একটি হচ্ছে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নদী সুরমা অপরটির নাম কুশিয়ারা। কুশিয়ারা নদীর দৈর্ঘ ১২০ মাইল। এটি উত্পত্তিস্থল থেকে দহ্মিণ দিগে পশ্চিমাভিমুখে সিলেট কাছাড় সীমান্ত হয়ে বহে মেঘনা নদীর উত্স স্থলে পতিত হয়েছে। গতিপথ প্রাচীন কালের স্বাধীন রাজ্য মণিপুরের আঙ্গামীনাগা পাহাড়ের ৩০০ কিঃমিঃ উঁচু স্থান থেকে বরাক নদীর উত্পত্তি।

উত্পত্তিস্থান হতে ৪৯১ কিঃমিঃ অতিক্রম করে সিলেটের সীমান্তে এসে বরাক নদী দুই শাখায় সুরমা ও কুশিয়ারা নামে ৩০০ কিঃমিঃ প্রবাহিত হয়ে মেঘনা নদী গঠন করে। উল্লেখিত নদী দুটো সিলেট বিভাগের বেষ্টনী হিসেবে দর্তব্য। সিলেটের সীমান্ত হতে উত্তরে প্রবাহিত স্রোতধারাকে সুরমা নদী এবং দহ্মিণে প্রবাহিত স্রোতধারাকে কুশিয়ারা নামে অবহিত করা হয়। বরাক হতে কুশিয়ারার বিভক্তির স্থান হতে বদরপুর হয়ে অমলসিদ নামক স্থানে এসেছে। অমলসিদ হতে বাহাদুরপুরের নিকট দিয়ে কুশিয়ারা নদী নবীগঞ্জের ভেতর প্রবেশ করে দিরাই হয়ে আজমিরীগঞ্জে বহে দিলালপুরের নিকটে মেঘনা নদীর সৃষ্টি করে।

কুশিয়ারা নদীর আবার ছোট ছোট বিভিন্ন শাখায় সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবাহিত আছে। যা কোথায় কোথায় বিবিয়ানা, ধলেশ্বরী খোয়াই ও কালনী নামে অবহিত হচ্ছে। ডাকাতিয়া নদীর দৈর্ঘ্য-২০৭ কিলোমিটার। বাংলাদেশের কুমিল্লা, চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত এই নদী। নদীটি ভারতের ত্রিপুরা পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে কুমিল্লা-লাকসাম চাঁদপুর হয়ে মেঘনা নদীতে মিশেছে।

যা লক্ষ্মীপুরের হাজিমারা পর্যন্ত বিস্তৃত। চাঁদপুর থেকে এই ডাকাতিয়া নদী যোগ হয়েছে কুমিল্লার গোমতীর সঙ্গে ইহা ২৩০.২০ অক্ষাংশে এবং ৯১০.৩১ দ্রাঘিমা বিস্তৃত। যা বামদিকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে ফেনী নদীতে মিশেছে। নামকরনঃ মেঘনা নোয়াখালীতে প্রবেশের পর ডাকাতিয়া নাম ধারণ করেছে। যার দক্ষিনের অংশ নোয়াখালী খালের প্রবাহিত ।

যোগাযোগ একসময় এই নদীর উপর দিয়ে বরিশাল, ভোলা, শরিয়তপুর, ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মালামাল পরিবহন করা হতো। নাফ নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে বার্মা সীমান্তে অবস্থিত একটি নদী। এটি কক্সবাজার জেলার দক্ষিণ পূর্ব কোনা দিয়ে প্রবাহিত। মূলত এটি কোন নদী নয়, বঙ্গোপসাগরের বর্ধিত অংশ। এর পানি তাই লবনাক্ত।

এর পশ্চিম পাড়ে বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলা এবং পূর্ব পাড়ে বার্মার আরাকান প্রদেশের আকিয়াব অবস্থিত। এর প্রস্থ স্থান বিশেষে ১.৬১ কিমি হতে ৩.২২ কিমি হয়ে থাকে। মহানন্দা নদী ভারত ও বাংলাদেশের একটি নদী। এর উৎপত্তিস্থল হিমালয় পর্বতের ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং জেলার অংশে। এখান থেকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

এর পর আবার পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় প্রবেশ করে, ও পরে আবার বাংলাদেশের চাপাই নবাবগঞ্জ জেলা শহরের কাছে প্রবেশ করে পদ্মা নদীর সাথে মিলিত হয়। বৃষ্টির পানি এই নদীর প্রবাহের প্রধান উৎস। ফলে গরম কাল ও শীতকালে নদীর পানি কমে যায়, আর বর্ষা মৌসুমে নদীর দুই কুল ছাপিয়ে বন্যা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মহানন্দা নদীর অংশটির দৈর্ঘ্য ৩৬ কিমি। দ্বিতীয় ছবিটা ব্লগার টিনটিন ভাইয়ের তোলা রূপসা নদী বাংলাদেশর দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চলের একটি নদী।

এটি ভৈরব এবং আত্রাই নদী থেকে উৎপত্তি হয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের কিছু পূর্বে নড়াইল জেলার ধোন্দা গ্রামের জনৈক রূপচাঁদ সাহা নামক লবণ ব্যবসায়ী নৌকা যাতায়াতের জন্য ভৈরব নদীর সঙ্গে কাজীবাছা নদীর সংযোগ করার নিমিত্তে একটি খাল খনন করেছিলেন। এই খাল এত ক্ষুদ্র ছিল যে শুকনো মৌসুমে এটি মানুষ লাফ দিয়ে পার হতো। পরে বাঁশের সাঁকো দিয়ে লোক যাতায়াত করতো। এই রূপচাঁদ সাহার নামানুসারে রূপসা নাম হয়েছিল ঐ খালের নাম।

পরবর্তীকালে ভৈরব নদীর প্রচণ্ড প্লাবনে এই ছোট খাল বিরাট ও ভয়ঙ্কর নদীতে পরিণত হয়। রূপসা শুধু নিজেই নদীতে রূপান্তরিত হয়ে ান্ত হয়নি, বরং নিচের কাজীবাছা নদীকে প্রচণ্ড ভাঙনের মুখে ফেলেছে। শ্রীরামপুরের রামনারায়ণ ঘোষ আরেকটি ছোট খাল কাটিয়ে কাজীবাছার সাথে সংযোগ করিয়ে দেন। এর নাম হয় নারাণখালর খাল। এই স্থান হতে পসুর নদী বিস্তৃত হতে হতে চালনার সন্নিকটে বাজুয়া, চালনা পোর্ট ও ডাংমারি ফরেস্ট অফিস ধরে সুন্দরবনের বিখ্যাত দেউরমাদে বা ত্রিকোণদ্বীপের উত্তরে মজুতের সাথে মিশেছে।

রূপসা নদীর তীরে অবস্থিত ফুলতলা বাজার, গিলাতলা, দৌলতপুর ইত্যাদি। এছাড়া ভৈরব নদ ও রূপসা নদীর সঙ্গমস্থলে খুলনা শহর অবস্থিত। ভৈরব নদের দক্ষিণ তীরে রেনীগঞ্জ নামক স্থানে পুরাতন খুলনা অবস্থিত ছিল। এখানে রেনি সাহেবের একটি কুঠির এখনো ধ্বংসাবশেষ আছে। রূপসা-পসুর সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এক বৃহৎ নদী।

রূপসা-পসুর মূলত রূপসা নদীরই বর্ধিত রূপ। খুলনা জেলার দক্ষিণে ভৈরব নদী বা রূপসা নদী আরো দক্ষিণে মংলা বন্দরের কাছে পসুর নামে প্রবাহিত হয়ে ত্রিকোণ ও দুবলা দ্বীপ দুটির ডানদিক দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। কবি জীবনানন্দ দাশ বাংলাকে, বাংলার নদীকে ভালোবেসে লিখেছেন ‘আবার আসি ফিরে’ কবিতা। এতে রূপসা নদীর কথা আছে এভাবেÑ ‘হয়তো দেখিচে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে; হয়তো শুনিবে এক লক্ষ্মীপেঁচা ডাকিতেছে শিমুলের ডালে; হয়তো খইয়ের ধান ড়াতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে; রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক শাদা ছেঁড়ে পালে ডিঙা যায়; রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে; দেখিবে ধবল বক; আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে প্রকৃতপে রূপসা নদীর দৈর্ঘ্য মাত্র ১১ কিমি। এটি বর্তমানে প্রশস্ততায় ৪০০ মিটার।

এর গভীরতা ১৭ মিটার। আর নদী অববাহিকার আয়তন ২৯৩৫ বর্গ কিমি। রূপসা নদীতে বারোমাস জলপ্রবাহ চলে। শুকনো মৌসুমেও এর গভীরতা ১২ মিটারের কম হয় না। আর আগস্ট মাসে বর্ষা মৌসুমে এর জলপ্রবাহ থাকে প্রতি সেকেন্ডে ১০৫০০ ঘন মিটার।

এই নদীতে জোয়ার-ভাটার প্রভাব আছে। খুলনা সদর, ফুলতলা বাজার এই নদীর তীরে অবস্থিত। সাঙ্গু নদী, স্থানীয়ভাবে শঙ্খ নদী, বাংলাদেশের দক্ষিণে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত একটি পাহাড়ি নদী। কর্নফুলীর পর এটি চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কয়টি নদীর উৎপত্তি তার মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম।

মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার মদক এলাকার পাহাড়ে এ নদীর জন্ম। বান্দরবান জেলা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বঙ্গোপসাগরে গিযে মিশেছে। উৎসমুখ হতে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এই নদীর দৈর্ঘ্য ১৭০ কিলোমিটার। সাঙ্গু নদী বান্দবান জেলার প্রধানতম নদী। বান্দরবান জেলা শহরও এ নদীর তীরে অবস্থিত।

এ জেলার জীবন–জীবিকার সাথে সাঙ্গু নদী ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বান্দরবানের পাহাড়ি জনপদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ নদী একটি অন্যতম মাধ্যম। বাংলাদেশের প্রধান কয়েকটি পাহাড়ি নদীর মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম। বান্দরবান জেলা এবং চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চল এ নদীবিধৌত। বাংলাদেশের বেশির ভাগ নদী উত্তর হতে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে।

কিন্তু সাঙ্গু নদী বান্দরবানের দক্ষিণাঞ্চলে সৃষ্টি হয়ে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে শেষ হয়েছে। হালদা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি নদী। পার্বত্য চট্টগ্রামের বদনাতলী পাহাড় হতে উৎপন্ন হয়ে এটি ফটিকছড়ির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় প্রবেশ করেছে। এটি এর পর দক্ষিণ-পশ্চিমে ও পরে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে ফটিকছড়ির বিবিরহাট, নাজিরহাট, সাত্তারঘাট, ও অন্যান্য অংশ, হাটহাজারী, রাউজান, এবং চট্টগ্রাম শহরের কোতোয়ালী থানার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এটি কালুরঘাটের নিকটে কর্ণফুলী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।

এর মোট দৈর্ঘ্য ৮১ কিলোমিটার, যার মধ্যে ২৯ কিলোমিটার অংশ সারা বছর বড় নৌকা চলাচলের উপযোগী থাকে। মাছের ডিম ছাড়া প্রতিবছর হালদা নদীতে একটি বিশেষ মূহুর্তে ও বিশেষ পরিবেশে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস ও কার্প জাতীয় মাতৃমাছ প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়ে। ডিম ছাড়ার বিশেষ সময়কে তিথি বলা হয়ে থাকে। স্থানীয় জেলেরা ডিম ছাড়ার তিথির পূর্বেই নদীতে অবস্থান নেন এবং ডিম সংগ্রহ করেন। ডিম সংগ্রহ করে তারা বিভিন্ন বাণিজ্যিক হ্যাচারীতে উচ্চমূল্যে বিক্রী করেন।

হালদা নদীতে রুই জাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার কারণ হালদা নদী এবং নদীর পানির কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য এখানে মাছ ডিম ছাড়তে আসে যা বাংলাদেশের অন্যান্য নদী থেকে ভিন্ন তর । এই বৈশিষ্ট্যগুলো ভৌতিক , রাসায়নিক ও জৈবিক। ভৌতিক কারন গুলোর মধ্যে রয়েছে নদীর বাঁক , অনেকগুলো নিপাতিত পাহাড়ী ঝর্ণা বা ছড়া , প্রতিটি পতিত ছড়ার উজানে এক বা একাধিক বিল , নদীর গভীরতা , কম তাপমাত্রা , তীব্র খরস্রোত এবং অতি ঘোলাত্ব । রাসায়নিক কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে কম কন্ডাক্টিভিটি , সহনশীল দ্রবীভুত অক্সিজেন । জৈবিক কারণ গুলো হচ্ছে বর্ষার সময় প্রথম বর্ষণের পর বিল থাকার কারণে এবং দুকুলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদীর পানিতে প্রচুর জৈব উপাদানের মিশ্রণের ফলে পর্যাপ্ত খাদ্যের প্রাচুর্য থাকে যা প্রজনন পূর্ব গোনাডের পরিপক্কতায় সাহায্য করে।

অনেক গুলো পাহাড়ী ঝর্ণা বিধৌত পানিতে প্রচুর ম্যেক্রো ও মাইক্রো পুষ্টি উপাদান থাকার ফলে নদীতে পর্যাপ্ত খাদ্যাণু র সৃষ্টি হয় , এই সব বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে হালদা নদীতে অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে রুই জাতীয় মাছকে বর্ষাকালে ডিম ছাড়তে উদ্ভুদ্ধ করে য বাংলাদেশের অন্যান্য নদী থেকে আলাদা । সুরমা নদী বাংলাদেশের প্রধান নদীসমূহের অন্যতম। এটি সুরমা-মেঘনা নদী ব্যবস্থার অংশ। উত্তর পূর্ব ভারতের বরাক নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করার সময় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে বিভক্ত হয়ে যায়। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ এর উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মেঘনায় মিশেছে।

এই দুটি নদী কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরববাজারের কাছে পুনরায় মিলিত হয়ে মেঘনা নদী গঠন করে, এবং পরিশেষে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। গতিপথ মণিপুর পাহাড়ের মাও সংসাং হতে বরাক নদীর উৎপত্তি হয়। বাংলাদেশ সীমান্তে নদীটি দুই শাখায় বিভক্ত হয়, এর উত্তরের শাখাটি সুরমা নদী, আর দক্ষিণের শাখার নাম কুশিয়ারা নদী। এর পর সুরমা নদী সিলেট এলাকায় প্রবেশ করে সুরমা অববাহিকার সৃষ্টি করে। ইছামতি নদী (ইচ্ছামতি নামেও উচ্চারিত) ভারত ও বাংলাদেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত একটি আন্তঃসীমান্ত নদী।

নদীটি বর্তমানে সিলটেশন বা পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে যাবার সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে এবং এর ফলশ্রুতিতে শীত মৌসুমে এটি কেবল সরু পথে প্রবাহিত এবং গ্রীষ্ম মৌসুমে বন্যার কবলে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেষ্ট হচ্ছেন এবং সঙ্কট সমাধানে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতিপথ ইছামতি নদীটির এখন তিনটি অংশ রয়েছে - (১) দীর্ঘতর অংশটি পদ্মা নদীর একটি শাখানদী মাথাভাঙা নদী থেকে প্রবাহিত হয় এবং ২০৮ কিমি প্রবাহিত হবার পর উত্তর ২৪ পরগণা জেলা‎র হাসনাবাদের কাছে এবং সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটার কাছে কালিন্দী নদীর সাথে যুক্ত হয়। (২) একসময়ের পশ্চিম ঢাকার প্রধান নদী এবং (৩) দিনাজপুরের ইছামতি। ১৭৬৪-৬৬ সালের রেনেলের মানচিত্র অনুসারে শেষোক্ত নদী দুইটি একীভূত দেখা যায়।

বেশকিছু জলানুসন্ধানবিদদের মতে, প্রাচীনকালে তিনটি ইছামতি নদীই অভিন্ন ছিল। উপরোল্লিখিত দ্বিতীয় নদীটি যা হুরসাগরের অগ্রভাগের নাথপুর ফ্যাক্টরির বিপরীতে জাফরগঞ্জের দক্ষিণে উত্‌পত্তি লাভ করেছে এবং মুন্সীগঞ্জের মোহিনীঘাটের দিকে প্রবাহিত হয়েছে। যোগিনীঘাট যমুনা ও ইছামতির নদীসঙ্গমে অবস্থিত। নদীটিতে পাঁচটি তীর্থযাত্রার ঘাট -তীর্থঘাট, আগলা, শোলপুর, বরুণীঘাট ও যোগিণীঘাট রয়েছে যা স্থানীয়ভাবে পঞ্চতীর্থ ঘাট নামে পরিচিত। নিম্ন ইছামতী মাথাভাঙ্গা নদী বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার মুন্সীগঞ্জে পদ্মার রাইটব্যাঙ্ক থেকে উত্পত্তি লাভ করেছে।

এটি নদীয়া জেলার মাজদিয়ার কাছে দ্বিখণ্ডিত হয়ে দুটি নদী ইছামতি ও চূর্ণী উৎ‌পন্ন করে। ভারতে ১৯.৫ কিলোমিটার তীর্যকভাবে অতিক্রম করে, ইছামতি মুবারকপুরের কাছে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এটি বাংলাদেশে ৩৫.৫ কিলোমিটার প্রবাহিত হয় এবং আবারো ভারতে প্রবেশ করে নদীয়ার দুত্তাফুলিয়া দিয়ে। নদীটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমারেখা তৈরি করে যা আংরাইল থেকে কালাঞ্চি এবং পুনরায় গোয়ালপাড়া থেকে কালিন্দী-রাইমঙ্গল আউটফল হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। ভৈরব এক সময় গঙ্গা থেকে প্রবাহিত হত, এটি তখন জলাঙ্গীর বর্তমান তীরের মধ্যদিয়ে আরো পূর্বদিকে ফরিদপুরের দিকে প্রবাহিত হত।

ভৈরব এখন আর তেমন জীবন্ত নেই। মাথাভাঙা জলঙ্গীর একটি নতুন জলস্রোত এবং অতিসাম্প্রতিককালের আগ পর্যন্ত নদীটি হুগলীর সাথে যোগসূত্র ঘটায় চূর্ণী নদী গ্রহণের মাধ্যমে। আগেকালে মাথাভাঙার অধিকাংশ পানি পূর্বে কুমারা, চিত্রা, কবদুক (ভৈরব) ও ইছামতিতে প্রবাহিত হত। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, আগে এই অঞ্চলের নদীগুলো দক্ষিণ-পূর্ব অভিমুখে প্রবাহিত হত, কিন্তু পরবর্তীকালে কোন শক্তি জলাঙ্গী ও মাথাভাঙ্গাকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে নিয়ে যায়। এটি ঘটার কারণ হল একটি স্থানীয় সাবসিডেন্স যা ১৭৫০ এর আগে কিছু সময় ধরে সংঘটিত হয় এবং এটি তখন থেকে অকার্যকর অবস্থায় আছে।

নদীগর্ভের গভীরতা হ্রাস যেহেতু ইছামতি নদীর গর্ভ মাথাভাঙ্গা থেকে ১৪ ফুট বেশি উঁচু, আবার চূর্ণী মাথাভাঙ্গা থেকে ছয় ইঞ্চি নিচু। শুষ্ক মৌসুমে মাথাভাঙ্গার পানির উচ্চতা পদ্মার থেকে বেশি থাকে এবং এর ফলে এ সময়ে ইছামতিতে কোন পানি প্রবেশ করে না। নদীতে পলি জমে যাবার একটি কারণ হল রেললাইনের জন্য তৈরি ওভারব্রীজের গার্ড ওয়াল নদীতে তৈরি করা। এলাকাটিতে নদীগর্ভের খনন কাজ জরুরি কেননা শুষ্ক মৌসুমেও পানির প্রবাহ রয়েছে। যেহেতু এই ভারত ও বাংলাদেশ উভযের জন্যই প্রয়োজন তাই এক্ষেত্রে উভয়ের একমত হওয়া প্রয়োজন।

বিষয়টি মন্ত্রী পর্যায়ে আলোচিত হয়েছে এবং জরীপ করা স্থানগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সমস্যা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া গিয়েছে। এ বিষয়ে নিকট ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে। নদী সংশ্লিষ্ট এলাকাটি শিল্প বর্জ্য ও জনগণের নদীর জমি দখলের কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হচ্ছে। প্রয়োজনীয় পয়ঃপ্রণালীর অভাব, অবৈধ দখল, আর্সেনিকসহ অন্যন্য কারণে স্থলভাগের পানির দুষিতকরণ, জলচর উদ্ভিদ ও প্রাণী নিধনসহ অন্যান্য সমস্যার সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমাধান প্রয়োজন।

ইছামতি নদী ও এর শাখাসমূহ উত্তর ২৪ পরগণার বণগাঁওয়ে ইংরেজি U বর্ণাকৃতির জলাধার তৈরি করেছে। কৃষি ও নৃতাত্ত্বিক চাপের পাশাপাশি আগাছার প্রাদুর্ভাব বিশেষত কচুরীপানার ব্যাপকতা একটি বড় দুশ্চিন্তার কারণ কেননা এটি লেকের পানি ঢেকে ফেলছে। দুর্গাপুজায় প্রতিমা বিসর্জনের চিত্র দুর্গাপুজার শেষে, বিজয়া দশমীতে ইছামতিতে প্রতিমা বিসর্জনের অনুষ্ঠান ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের একটি অনন্য প্রদর্শনী। ইছামতি নদীটি যা দুই দেশের মাঝে নিরপেক্ষ সীমানা হিসেবে কাজ করে, তা উভয় দেশের নৌকা থেকে দেবদেবী বিসর্জনের সময় উচ্ছসিত প্রফুল্লতায় ভরে ওঠে। এসময় চোখের দূরতম সীমা পর্যন্ত বিভিন্ন আকৃতির নৌকা দৃষ্টিগোচর হয় এবং প্রতিটি নৌকাগুলোতে সংশ্লিষ্ট দেশের পতাকা লাগানো থাকে।

এটিই বছরের একমাত্র দিন যখন সীমান্ত টহল শীথিল করা হয় নদীর উভয় পাড়ের মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে নদীর অপর পাড়ে যেতে পারে। কিছুদিন আগে প্রতিমা বিসর্জনের পর মানুষজন এমনকি অপর পাড়েও নৌকা ভিড়াতে পারত। তবে বর্তমান কয়েক বছর ধরে সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কড়াকড়ি বেড়ে যাওয়ায় এই অনুশীলনটির ব্যত্যয় ঘটছে। সুত্রঃ ইন্টারনেট ।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।