আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছবিটি হিংসার আগুণের ঐতিহাসিক স্বাক্ষী

ছবিটি কোন ফটোগ্রাফার তুলেছেন তা জানিনা। তবে ছবিটি যে আবেদনময়ী সে কথা র্নিদির্ধায় বলা চলে। অহিংসা পরম ধর্ম শ্লোগান নিয়ে বৌদ্ধরা যে ধর্ম চর্চা শুরু করেছিল তা আজ কোথায়? ছবিটি দেখুন! একজন রোহিঙ্গা কিভাবে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। ছবিটি গোটা ঘটনার একটি প্রতীক মাত্র। হিংসার আগুন কিভাবে একটি জাতিকে পুড়িয়ে ভষ্ম করে দিচ্ছে তার ঐতিহাসিক স্বাক্ষী ছবিটি।

বাংলাদেশ নির্যাতিতদের আশ্রয় দিচ্ছে কি দিচ্ছেনা সে বিষয়ে বলতে গেলে অনেক প্রশ্নের অবতারনা হবে সুতরাং সে দিকে আমার বক্তব্য নেই। আমার বক্তব্য হলো রোহিঙ্গারা উপজাতি বা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী পশ্চিম মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের একটি উলেখযোগ্য নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। এরা ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত। মায়ানমার ছাড়াও ৫ লক্ষের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এবং প্রায় ৫লাখ সৌদিআরবে বাস করে বলে ধারনা করা হয় যারা বিভিন্ন সময় বার্মা সরকারের নির্যাতনের কারণে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। রোহিঙ্গা কারা? বর্তমান মিয়ানমারের রোহিং (আরাকানের পুরনো নাম) এলাকায় এ জনগোষ্ঠীর বসবাস।

ইতিহাস ও ভূগোল বলছে, রাখাইন প্রদেশের উত্তর অংশে বাঙালি, পার্সিয়ান, তুর্কি, মোগল, আরবীয় ও পাঠানরা বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর বসতি স্থাপন করেছে। তাদের কথ্য ভাষায় চট্টগ্রামের স্থানীয় উচ্চারণের প্রভাব রয়েছে। উর্দু, হিন্দি, আরবি শব্দও রয়েছে। রাখাইনে দুটি সম্প্রদায়ের বসবাস ‘মগ’ ও ‘রোহিঙ্গা’। মগরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।

মগের মুল্লুক কথাটি বাংলাদেশে পরিচিত। দস্যুবৃত্তির কারণেই এমন নাম হয়েছে ‘মগ’দের। এক সময় তাদের দৌরাত্ম্য ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। মোগলরা তাদের তাড়া করে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়। রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে একটি প্রচলিত গল্প রয়েছে এভাবে_ সপ্তম শতাব্দীতে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া একটি জাহাজ থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন উপকূলে আশ্রয় নিয়ে বলেন, আল্লাহর রহমে বেঁচে গেছি।

এই রহম থেকেই এসেছে রোহিঙ্গা। তবে ইতিহাস এটা জানায় যে, ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোহিঙ্গা স্বাধীন রাজ্য ছিল। মিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এ রাজ্য দখল করার পর বৌদ্ধ আধিপত্য শুরু হয়। এক সময়ে ব্রিটিশদের দখলে আসে এ ভূখণ্ড। তখন বড় ধরনের ভুল করে তারা এবং এটা ইচ্ছাকৃত কিনা, সে প্রশ্ন জ্বলন্ত।

আমাদের 'প্রাক্তন প্রভুরা' মিয়ানমারের ১৩৯টি জাতিগোষ্ঠীর তালিকা প্রস্তুত করে। কিন্তু তার মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এ ধরনের কত যে গোলমাল করে গেছে ব্রিটিশরা! ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হয়। সে সময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। এ জনগোষ্ঠীর কয়েকজন পদস্থ সরকারি দায়িত্বও পালন করেন।

কিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমারের যাত্রাপথ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। রোহিঙ্গাদের জন্য শুরু হয় দুর্ভোগের নতুন অধ্যায়। সামরিক জান্তা তাদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে। তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়।

ধর্মীয়ভাবেও অত্যাচার করা হতে থাকে। নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়া হয়। হত্যা-ধর্ষণ হয়ে পড়ে নিয়মিত ঘটনা। সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়। বাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত করা হতে থাকে।

তাদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নেই। বিয়ে করার অনুমতি নেই। সন্তান হলে নিবন্ধন নেই। জাতিগত পরিচয় প্রকাশ করতে দেওয়া হয় না। সংখ্যা যাতে না বাড়ে, সে জন্য আরোপিত হয় একের পর এক বিধিনিষেধ।

আরাকানের ইতিহাস অনেক প্রসিদ্ধ ও বর্ণাঢ্য। কয়েক বছর পর বৌদ্ধরা যখন বলে বেরুবে অহিংসা পরম ধর্ম ; হিংসা ভুলে যাই ঠিক তখন এ ছবি এ ইতিহাস তাদেরকে লজ্জা দেবে নিশ্চই। আজ আমরা যে পর্যায়ে আছি আগামী দিন গুলো অকল্পনীয় আধুনিক হয়ে গড়ে উঠবে। তখন বৌদ্ধদের অহিংসা পরম ধর্ম প্রমানিত হবে না । আজও প্রমানিত নয়।

অনাগত কালে তা আরও হাস্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। ইতিহাস যাদেরকে একবার ডাস্টবিনে নিপে করে তারা আর কোনদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। তাই বলে আমাদের আজ বসে থাকবার সময় নয়, মুসলিম বিরোধী,মানবতা বিরোধী, ঐতিহ্য বিরোধী এসব কর্মকান্ডের জন্য আর্ন্তজাতিক হস্তক্ষেপ জরুরী রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান আমরা চাই। আমরা চাই আর যেন কাউকে এভাবে করুণা ভিক্ষা করতে না হয়।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।