আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিজাতীয় আগ্রাসনে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশী ঐতিয্য ।

কাজ করি সত্তিকারের মানুষের তরে । ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল আমাদের ঐতিয্য, এ দুটি অধ্যায় আমাদের শক্তি, আমাদের অস্ত্র। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী, প্রতিরক্ষার কোন বলয়েই অন্য কোন দেশের আক্রমন থেকে দেশকে রক্ষাকরার ক্ষমতা রাখেনা । হতে পারে এই সাজানো-গুছানো বাহিনী গুলি আমাদের দেশের সুভা । আমাদের মূল শক্তি আমাদের ৫২, আমাদের মূল অস্র ৭১ এর যুদ্ধের মনোবল ।

৫২র ভাষা আন্দোলন প্রমান করে দিয়েছিল বিশ্বের সকল শক্তিধর দেশ গুলিকে যে, আমরা বাংলার মানুষ রক্তে মাংশে বাংলাদেশী । ভাষা আমাদের স্পন্দন, যাকে কেড়ে নিলে আমাদের চলার, বাচাঁর কোন অবলম্বন থাকবেনা । তাই কেবল ভাষার জন্যে প্রাণ দিয়ে ছিল হাজার হাজার তরুন । বিশ্বের শক্তির কাছে প্রমান করে দিয়েছিল যে, আমরা এমন একটা জাতি যারা কোন কিছু অর্জনের জন্যে শেষ বিন্দু পর্যন্ত বিলিয়ে দিতে পারি । পরা শক্তির চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো হল আমাদের কোন আগ্নেয়াস্র নেই কিন্তু দেয়ার মতো রক্ত ও সাহস দুইই আছে, আর সেই অবস্থানের প্রেক্ষিতেই আজও বাংলাদেশের মানুষকে বিশ্বের দরবাবে সাহসি জাতি হিসেবে দেখা হয় ।

আর তখন থেকেই পরাশক্তি গুলি পরিকল্পনা করেই এগুচ্ছে কিভাবে এই জাতির ভাষাগত ঐক্য বা শক্তি ধংশ করা যায় । আর তখন থেকেই বিচক্ষনতার সাথে বাংলা ভাষাকে অচল করে দেওয়া হচ্ছে । বিনোদনের মাধ্যমেও আজ ঢুকে পড়েছে অন্য ভাষা, চলার পথে আজ আর বাংলার কোন প্রয়োজনিয়তা নেই । ভাল কোন হাসপাতাল, কোন রেস্টুরেন্ট, কোন হোটেল, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানেই যাবেন বাংলা আজ অকার্যকর, আজ বাবা মায়েরা আর বাংলা পড়াতে চাননা, এমন অনেক ছেলে মেয়ে আছে যারা ভাল ভাবে বাংলা পড়তে পারেনা, বলতে পারেনা । আমাদের প্রত্যহিক জীবনের পরতে পরতে এমন ভাবে বিজাতীয় ভাষাকে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, আজ বাংলা ছাড়াও ভাল চাকুরী পাবে, চলতে পারবে কিন্তু ইংরেজী ছাড়া কেবল ভিক্ষা করা যেতে পারে ।

সামনে এমন দিন আসছে কোন চাষি চাইলেও ইংরেজী না জানলে আর চাষাবাদ করতে পারবেনা । চাষাবাদের সবকটি উপকরনই হয়তো চালাতে লাগবে ইংরেজী ভাষা । আর সে অবস্থার প্রেক্ষিতে ষড়যন্ত্রকারি শক্তি আজ বিজয়ী, কেননা আজ আমি আত্তবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি, আজকে যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্র ভাষা বাংলার বদলে ইংরেজী করার প্রস্তাব আসে তাহলে মানুষের প্রাণদেয়াতো দূরে থাক কোন প্রতিক্রিয়াই হবেনা অধিকন্তু আমাদের দেশের এমন অনেক দেশ প্রেমিক আছেন যারা স্বাগত জানাবেন । আজ আর আমরা পূঁথি পাঠ শুনিনা, অনেকেই পূঁথি পাঠ কি তাই শুনেনি । মাইক্যাল জ্যাকসনকে চিনে, রক গান চিনে ।

আজকে বাংলাদেশের জন্যে যে মাধ্যমটা শুভ সংবাদ হওয়ার কথা সেই মাধ্যমটা আজ হুমকির হয়ে দাড়িয়েছে, এফ.এম রেডিও, বর্তমান প্রজন্মের পছন্দের একটা মাধ্যম কিন্তু সে মাধ্যমে যে ভাষা ব্যাবহার করা হয় তা বুঝা খুবিই দূরোহ তাই আমাদের ভবিষ্যত প্রযন্মের জন্যে বাংলা শিখার আর কোন মাধ্যম খুজেঁ পাওয়া যাবেনা । কাজেই আমাদের গর্বকরার মতো যে ভাষা, মনোবল, প্রেম, আবেগ ছিল তা আর নেই । আমাদের নেই কোন অস্র, আর যেটা ছিল তাও ক্ষুয়েছি, কাজেই আজ আমরা নিঃশ্ব । আমাদের স্বাধিনতা যুদ্ধে বিজয়ের পেছনে অনেক কারনের মধ্যে একটি প্রধান কারন ছিল প্রতিশোধ । আমাদের ইজ্জদ হননের প্রতিশোধ ।

যখনি কোন ভাইয়ের বোনকে নিয়ে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে তখনি এক জন মুক্তি যুদ্ধা বেড়েছে, যখন কোন সন্তানের মাকে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে, আগুন জালিয়ে দেওয়া হয়েছে মনে প্রতিশোধের । প্রতিশোধের আগুনের মূলে ছিল স্লিলতাহানী, বিবস্র নারী, ধর্ষিতা মা, বোন । আর তখন থেকেই পরাশক্তি বুঝতে পেরেছিল আবেগ, প্রতিশোধের জায়গাটা কোথায় । আর তখন থেকেই আমাদের মেয়েদের মাঝে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে শরীর দেখানোর প্রবৃতি, যা ছিল আমাদের সম্পদ, যা ছিল মেয়েদের সম্পদ, নিজেদের আবৃত করে নিজের উপর মূল্য আরোপ করা তা উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে । খুব সহজ ভাবে বললে র্দূভেদ্দ সবকিছুতেই মূল্য বেশি ।

আজ আমাদের মেয়েদের শরিরের আর কোন মূল্য রইলনা, সহজেই চোখের সামনে সবকিছু উত্থাপন করা হয় । পণ্য হিসেবে বিকিয়ে দেওয়া হচ্ছে মেয়েদের শরীরকে নারী অধিকার নামক শব্দটির মাধ্যমে । আজ আর কোন ধর্ষনের খবরে আতকে উঠিনা, তেমন কোন প্রতিক্রিয়া হয়না, রাস্তা ঘাটে নারীদের দেহে যে পোষাক থাকে, যেভাবে চলাচল করে তাতে আজকাল ধর্ষণ শব্দটা বেমানাম । আজকাল আধুনিক বাবা মায়েরা নিজেদের মেয়ের যতবেশি ছেলে বন্ধু দেথেন মেয়েকে নিয়ে ততবেশি গর্ববোধ করেন, আবার এমনও মা আছেন যারা মেয়ের ছেলে বন্ধুর সাথে ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব করতেও দিধাবোদ করেননা । মা জানেন মেয়ে কেন রাত করে বাড়ি ফিরে, আধুনিক ভাইটিও জানে বোন সারা দিন তার ছেলে বন্ধুর সাথে কি করে ।

বাবা মা জানে মেয়ে কেন হাসপাতালে যায় কিন্তু কিছুই বলেনা, কারন এটাই প্রাশ্চাত্তের আধুনিকতা । আজ যদি কোন বোনের ইজ্জতহানী হয় তাহলে ভাইদের মনে আগের মতো করে প্রতিশোধ আর জাগবেনা কারন ভাইয়েরা বিষয়টাতে প্রতিনিয়ত অভ্যস্ত । ভাই দেখছে বোন প্রতিনিয়তই ধর্ষিত হচ্ছে তার ছেলে বন্ধুর দ্বারা কিন্তু দুজনের সম্মতিতে হওয়ায় তা ধর্ষনের সংগায় ফেলা যাচ্ছেনা । আজ আমাদের পরাশক্তি খুশি, আজ আর তারা ভিত নয় কারন তারা জানে বাংলাদেশের আর গর্বকরার মত কিছু নেই, আর প্রতিশোধ নেওয়ার মত কোন সংবেদনশীলতা নেই । তাই বলতেই হয় বিজাতীয় আগ্রাসনে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশী ঐতিয্য হার মেনেছে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।