আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বরিশালে আরেক হলমার্কঃ কীর্তনখোলা-২ লঞ্চের ঋণ কেলেঙ্কারি, ৫ কোটি টাকার সম্পদ দেখিয়ে নিয়েছেন ১৩ কোটি টাকা

মানবিক দায় ও বোধহীন শিক্ষা মানুষকে প্রশিক্ষিত কুকুরে পরিণত করে....আইস্ট্যাইন। ৫ কোটি টাকারও কম সম্পদ দেখিয়ে ঋণ নেয়া হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। আর এ ঋণ নিতে ব্যাংকের ম্যানেজারকে পরিবারসহ ভারত ভ্রমণ করিয়ে আনা হয়েছে। এর আগে এ ব্যক্তি একই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছিলেন। ঋণের দায়ে নিলামে বিক্রি করা হয়েছিল তার কীর্তনখোলা-১ লঞ্চটি।

বেনামে তিনিই সেই লঞ্চটি কিনে নেন নামমাত্র দামে। অথচ গতকাল দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম লঞ্চ কীর্তণখোলা-২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুদকের মামলায় জামিনে থাকা অর্থ আত্মসাতের দায়ে অভিযুক্ত মামলার আসামি মেসার্স সালমা শিপিং কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস সরকারের মন্ত্রী, মেয়র, এমপি ও বিরোধী দলের এমপি সরকারি আমলাদের একত্রে সফল সমাবেশ করেছেন। কীর্তনখোলা-১ এর মালিক ও সালমা শিপিং কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস সেই বিখ্যাত টিউওবয়েল দুর্নীতি-খ্যাত মামলায় দুদকের দায়ের করা একাধিক মামলার আসামি। এক সময়ের কীর্তনখোলা-১ লঞ্চ নিলামের মালিক ফেরদৌস এখনও ভোলা জেলা জজ আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। অপর মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন।

ঢাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কীর্তনখোলা-২ লঞ্চ নির্মাণ করেছেন। অথচ মর্টগেজ দিয়েছেন ৫ কোটি টাকার কম। ফেরদৌস ঢাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন ১৩ কোটি টাকা। বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ঢাকা ব্যাংক বরিশাল শাখার ম্যানেজার আসাদকে ভারত ভ্রমণ ফ্যামিলিসহ এবং নগদ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ১৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন ফেরদৌস। সূত্র জানায়, কীর্তনখোলা-১ লঞ্চটি ছিল ফেরদৌসের।

লঞ্চটি নিলাম হয়, ক্রয় করেন কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। কামরুলের মালিকানাধীন থাকা অবস্থায় আবারো লঞ্চটি নিলাম হলে ক্রয় করেন ফেরদৌস। এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন কামরুল ইসলাম। যা মামলাটি এখনও বিচারাধীন। এ ব্যাপারে ঢাকা ব্যাংকের ম্যানেজার আসাদ বলেন, প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরি করে ঋণ দেয়া হয়েছে।

আমি নেগোশিয়েশন করেছি মাত্র। ম্যানেজার আসাদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ফেরদৌসের নামে দুর্নীতি মামলা ও কীর্তনখোলা-১ লঞ্চ নিলাম হয়েছিল তা বিবেচনা করে ঋণ দেয়া হয়নি। যদি ঋণ খেলাপি হন তাহলে এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ব্যাংক যা করণীয় তা করবে। ভারত সফর করেছেন স্বীকার করে বলেন, আমি কখনও ভারত যায়নি,সুযোগ হয়েছে তাই ফ্যামিলি নিয়ে ভারত ট্যুর করেছি; তাতে দোষের কি। এ ব্যাপারে কীর্তনখোলা-২ লঞ্চের মালিক মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস বলেন, আমার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রয়েছে সত্য।

কীর্তনখোলা-১ লঞ্চের ব্যাপারে হাইকোর্টে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ৬টি দুর্নীতি মামলা রয়েছে। ১টি মামলা ভোলা জজ আদালতে বিচারাধীন এবং বাকি মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। বিতর্কিত এই লঞ্চ মালিকের কীর্তনখোলা-২ লঞ্চটি নির্মাণের অর্থ নিয়ে নগরীতে চলছে কানা ঘুষা। কেউ বলছে ৩০ কোটি টাকা, কেউ বলছে ৬০ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংকের ম্যানেজার আসাদ বলেছেন ১৩ কোটি টাকা।

জানা গেছে, ভারতীয় নাগরিক লঞ্চটির কারিগর হিসেবে ছিল কিন্তু ওই নাগরিকের অনুমতি বা ভিসা ছিল না বাংলাদেশে থাকার। দুদক কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে বরিশালে আরেক হলমার্ক কেলেঙ্কারি কীর্তনখোলা-২ লঞ্চের ঋণ কেলেঙ্কারি। এ ব্যাপারে ঢাকা ব্যাংকের এমডি খন্দকার ফজলে রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোন রিসিভ করেননি। দুদকের মামলা রয়েছে তার সত্যতা স্বীকার করে ফেরদৌস বলেন, মানুষের নামে দুর্নীতির মামলা থাকতেই পারে। সূত্র জানায় ঋণের বিপরীতে যা মর্টগেজ দেয়া হয়েছে তা নিয়ে মামলা- মোকদ্দমা এবং প্রতিশ্রুত ঋণের অনেক কম।

লঞ্চ নির্মাণকারী একাধিক কারিগর জানিয়েছেন, কীর্তনখোলা-২ লঞ্চ নির্মাণে ৭ থেকে ৮ কোটি টাকা লাগতে পারে। কিন্তু কোনভাবে ১০ কোটি টাকার ওপর লাগবে না। সূত্র আরও জানায়, ঢাকা ব্যাংকের বরিশালের ম্যানেজার ও এমডিকে ম্যানেজ করেই ঋণের বিপরীতে কম মূল্যের মর্টগেজ দিয়ে ঋণ নিয়েছে মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস। গতকাল কীর্তনখোলা-২ লঞ্চের জাঁকজমক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, বরিশাল সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরণ, তালুকদার মো. ইউনুছ এমপি। View this link  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।