আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিসার : দোস্ত, আরেকটু ঝোল দে না ?

মোহিনীরা স্বভাবে নির্মম। আর যারা ভালোবাসে তারা শুধু নিজেদের আত্মার ক্রন্দনে ক্লিষ্ট হয়-পূর্নেন্দু পত্রী দোস্ত, আরেকটু ঝোল দে না ? আমি দিলাম , যদিও তখনও আমরা তিনজন মানে আমি, Showmique Plabon এবং Imtiaj Kamal Faruqui খাইতে বাকি আর মাথাপিছু ঝোলের আনুপাতিক হার তখন নিম্নগামী। তবুও বন্ধু Nirob Nisar এর আবেদন উপেক্ষা করতে না পেরে দুই চামচ " মুরগীর ঝোল " নিজ হাতে তার প্লেটে উঠিয়ে দিলাম। বলে রাখা ভালো এর আগেও সে মানে নীরব নিসার তিন/চার বার ঝোল নিয়েছে এবং প্রত্যেকবার নেওয়ার সময় বলেছে- " দোস্ত, আগে জানলে তোরে আরো বেশী ঝোল রাখতে বলতাম । আমি আবার ঝোল একটু বেশীই খাই।

" যাইহোক, ঝোল নিয়ে নিসারের খাওয়া আবার পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। তার পাশেই বসেছিলো Nirlipto Neel । সে কথা বলে সময় নষ্ট না করে খাওয়াতে ব্যস্ত আর তারও পাশে ছিলো আমার খিচুড়ীবন্ধু (যে প্রায়ই খিচুড়ী খাওয়ার লোভে আমার রুমে আসে) Shaikat Ahmed . সৈকতের কথা আর কি বলবো। এমন ঠান্ডা মাথার খাদক আম জীবনে কমই দেখছি। সৈকতের খাওয়া দেখতে অবশ্য আমার খুব ভালোই লাগে।

যাইহোক ব্যাপার সেইটা না , ব্যাপার হইলো নিসার আর তার ঝোলপ্রবনতা। তো কিছুক্ষন পর নিসার আবার বলে উঠলো ... - দোস্ত, একটু ঝোল দে না । আমি আবার ঝোল একটু বেশী খাই । কি আর বলবো, আমি পড়ছি বিপাকে। এখন যদি ওরে একচামচ ঝোল দেই তাইলে আমাদের অবশিষ্ট তিনজনের ভাগ্যে মাথাপিছু একচামচ ঝোলও থাকে না।

তবু কথায় আছে - অতিথি নারায়ণ আর এই প্রথমবার আমার রুমে খাইতে আসছে । তাই বাধ্য হয়ে আরেক চামচ ঝোল দিয়ে বললাম - হারামি তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ কর । একসময় নিসারের খাওয়া শেষ হলো । এইবার আমি , প্লাবন আর ইমতিয়াজ খাইতে বসলাম। ইমতিয়াজের প্লেটে মাংস দিয়ে কোনরকমে একচামচ ঝোল দিলাম ।

এইবার অভাগা প্লাবনের প্লেট পর্যন্ত এসে দেখি তরকারীতে আর কোন ঝোল অবশিষ্ট নাই। তবুও অনেক অনুসন্ধান করে সামান্য ঝোল দিলাম আর আমি তরকারীর বাটির মধ্যেই ভাত নিয়ে বসলাম। মাংস আছে কিন্তু ঝোল নাই কি আর করা । আমি আর ইমতিয়াজ কোনরকমে মাখামাখা করে খাচ্ছি কিন্তু বেচারা প্লাবনের অবস্থা দেখে দুঃখে আমার দাঁত বের হয়ে আসলো । সে একটু করে মাংস ছিড়তেছে আর সাদাভাতের সাথে মাখায়ে কোনরকমে খাচ্ছে।

ওর কপাল সেই 'ছুডুবেলা' থেকেই খারাপ। বেচারা !!!! যাইহোক, আমি প্লাবনরে আগাম দাওয়াত দিয়ে রাখলাম অন্যদিন খাওয়ার জন্য। অবশেষে খাওয়ার পর Hason Raja (আমাদের আরেক বন্ধু যিনি মাংস খান না তাই তার জন্য আমার আবার ডিম ভুনা করতে হয়েছিলো ) এবং আমরা বাকী সবাই একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে আসলাম তা হলো - এরপর থেকে নিসার আমাদের সাথে খাইতে আসলে শুধু ওর জন্য আলাদা করে "এক বদনা " ঝোল বানাইয়া রাখা হবে কারণ ও আবার ঝোল একটু বেশীই খায়। ঝোল বানানোর প্রক্রিয়া নিম্নরুপ - একবদনা পানি + দুইচামচ শুকনা মরিচের গুড়া + হলুদ + লবন+ বার পাঁচেক তীব্র ঝাকুনি = ঝোলখোর নিসারের ঝোল যাহ ... বাবা নীরব নিসার এইবার নীরবে ঝোল খা । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.