আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্যামদেশে সালতামামি-১

মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় সময়ের পায়ে বেড়ি পরানো বড় মুশকিল কাজ। শ্যামদেশে পড়তে এসে ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে ৩৬৫ টি দিন যে কিভাবে হাওয়া হয়ে গেল তা এখনো ঠাহর করে উঠতে পারিনি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে দু-দু’টো সেমিস্টার পাড়ি দিয়ে তৃতীয়টাতে বসে হাওয়া খাচ্ছি। আজ হঠাৎ লিখতে বসে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে শত শত স্মৃতি। কিভাবে শুরু করি, কোনটা রেখে কোনটা বলি –সবকিছু যে আওলাইয়া যাইতাছে! একেবারে শুরু থেকেই শুরু করি, ক্রমানুসারে বলতে থাকবো তাহলে কোন সমস্যা হবেনা।

০৯ আগস্ট, ২০১১ বিকেল ৪.০০ টায় কুলিং বেডের লেভেল ঠিক করছি। স্টীলমিলের গ্রীজ আর কালি মিশে একাকার পুরো শরীর। হঠাৎ করে আমার ফোনটা বেজে উঠল। ভাবছি, এইডা কেডা- ফোন করবার আর টাইম পাইলনা। বহুত কষ্টে পকেট থেকে ফোনটা বের করে দেখি একটা বিদেশি নাম্বার।

ধরার পরে দেখি বেটা বাংলায় কথা কয়। বলে সে থাইল্যান্ডের এ আই টি থেকে কথা বলছে। আমাকে নাকি কি একটা স্কলারশিপের অফার লেটার পাঠানো হয়েছে, আর আমাকে আজকের মাঝেই জানাতে হবে – আমি স্কলারশিপটা গ্রহন করছি নাকি করছিনা। কথা বলা শেষে আমি তাড়াতাড়ি স্মৃতির পাতাগুলো একটু রি-ওয়াইন্ড করে বের করলাম থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি - তে মাস্টার্স করার জন্য আবেদন করেছিলাম কিন্তু ওরা কোন স্কলারশিপ ছাড়া সেলফ ফাইন্যান্স এ পড়ার জন্য আমাকে এডমিশন লেটার পাঠিয়েছিল। ওই লেটারে আমি ডিক্লাইন –অর্থাৎ ‘আপনার প্রস্তাবে আমি রাজি নহি’-লিখে স্ক্যান করে পাঠিয়ে দিয়ে ছিলাম।

এবার হুশ এল, ইয়াহু আমি মাস্টার্স এর স্কলারশিপ পেয়েছি। তাড়াতাড়ি ইমেইল চেক করতে গেলাম অফিসরুমে। ইমেইল খুলে দেখি আসলেই আমি কিং’স স্কলারশিপ পেয়েছি। আমার ক্লাস অলরেডি শুরু হয়ে গেছে, আমাকে আগামী এক সপ্তাহের মাঝে রিপোর্ট করতে হবে। এ দেখি মহা মুসিবত।

আমি ভিসা নিবো কখন, শপিং করব কখন, বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয়-স্বজনদের জানাব কখন। আবার মাত্র ১০-১২ দিন পরই ঈদ, এই ঈদকে সামনে রেখে চলে যাব বিদেশে? না এ হতেই পারেনা। আমি ইমেইল করে জিজ্ঞেস করলাম, অমুক তারিখের পর (মানে ঈদের পর) আসলে কোন অসুবিধা হবে কিনা। ওই বেটা আমাকে বলল ‘আপনি যত তাড়াতাড়ি পারেন চলে আসেন, আপনার ক্লাস শুরু হয়ে গেছে, দেরি করলে আপনারই ক্ষতি হবে। ’ ওই বেটারে মনে মনে একশো-হাজার গালি দিলাম (প্রসঙ্গতঃ বলে নেই পরবর্তীতে এ আই টি তে এসে জেনেছি এই বেটা হচ্ছে আমাদেরই এক বন্ধু, নাম দেবাপী কুমার ঘোষ।

সে গ্রীষ্মের ছুটিতে কিছুদিন এডমিশন ইউনিটে কাজ করেছে) । কিভাবে কিভাবে ভিসা করতে, আরো অন্যান্য কাগজ-পত্রাদি একাট্টা করতে করতেই চলে এল ঈদ। তার মানে এই ঈদ টা আমি বাংলাদেশেই করতে পারছি। চলবে......... ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।