আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতারকচক্রদের প্রতিহত করা হোক

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খুলতে যাচ্ছে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের দুয়ার। সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর ব্যাপারে মতৈক্য হয়েছে দুই দেশের। এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিও হওয়ার পথে। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য বড় একটি সুসংবাদ। কিন্তু দুঃসংবাদ হলোÑ চুক্তি হওয়ার আগেই মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর নামে দালালদের একটি চক্র বিদেশে গমনেচ্ছুদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

এরকম অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে এবং এ ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। কাজেই এটাকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। প্রতারণার পথ রুদ্ধ করতে মালয়েশিয়ায় শ্রম রপ্তানি সংক্রান্ত প্রকৃত তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশে এসে গেলেন মালয়েশিয়ান মানবসম্পদমন্ত্রী ড. এস সুব্রামানিয়াম। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ বিষয়কমন্ত্রী ড. এস সুব্রামানিয়ামের মধ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া মতৈক্যে পৌঁছায়।

কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সোর্স কান্ট্রি (উৎস দেশ) হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় মালয়েশিয়া। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এ শ্রমবাজারটি আবার উন্মুক্ত হলে নতুন করে অন্তত ৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে। এসব খবর সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। এসব খবরকে কেন্দ্র করেই মাঠে নেমে পড়েছে প্রতারকচক্র। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগেই একশ্রেণীর প্রতারকচক্র মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণের নামে গ্রামগঞ্জের নিরীহ কর্মীদের কাছ থেকে অর্থসহ পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে শুরু করেছে।

যা খুবই উদ্বেগজনক। মালয়েশিয়া বাংলাদেশের একটি অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার। বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সর্বশেষ হিসাব মতে, বর্তমানে মালয়েশিয়ায় ৭ লাখ ৮৫১ জন বাংলাদেশী বিভিন্ন খাতে কর্মরত রয়েছেন। এর আগে প্রতারকচক্র দ্বারা ব্যাপকসংখ্যক লোক অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়া, সেখানে তাদের সৃষ্ট নানা জটিলতা ও অন্যান্য কারণে এক সময় বাংলাদেশীদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার। প্রায় ৮ বছর পর অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে যখন শ্রমবাজারটি উন্মুক্ত করা যাচ্ছে, তখন আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রতারক চক্র।

মাত্র কিছুদিন আগে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দেশের ১১টি জেলা থেকে ৬০০ জনকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এনে জড় করে তাদের ট্রলারে চাপিয়ে দিয়েছিল এক প্রতারকচক্র। প্রতারকচক্রের দৌরাত্ম্য ও বিগত সময়ে উদ্ভূত নানা জটিলতার সুযোগ বন্ধ করতেই এবার সরকারি পর্যায়ে কর্মী পাঠানোর জন্য চুক্তি হতে যাচ্ছে। এর ফলে অভিবাসন ব্যয়ও কম হবে। কিন্তু এখনো চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। কতো লোক পাঠানো যাবে, কতো টাকা লাগবে তাও চূড়ান্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সরকারিভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে পত্রপত্রিকা এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের রেজিস্ট্রেশন করাসহ সব তথ্য যথাসময়ে জানানো হবে। মালয়েশিয়া গমনেচ্ছুদের কোনো দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীর সঙ্গে আর্থিক লেনদেন ও পাসপোর্ট প্রদান না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে বিএমইটি। কিন্তু পত্রিকায় এই একটি বিজ্ঞপ্তি কোনোভাবেই দেশের গ্রামেগঞ্জের মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করার জন্য যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারণা। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সতর্কতা ও সচেতনতা কার্যক্রম চালানো দরকার জোরেশোরে।

এ ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোরও এগিয়ে আসা দরকার। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.