আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বায়োচিপ/ এক (সাইন্স ফিকশন)

ভাল লাগে ফুল, কিছু কিছু ভুল এক. সকাল বেলা কানের কাছে বিজাতীয় চিৎকার শুনতে কার ভাল লাগে? কল করেছে জার্মান বন্ধু ম্যাক্স। বিরক্ত হয়ে কলটা কেটে ল্যাঙ্গোয়েজ সেটিংটা চেক করলাম। ঠিকঠাক বাংলায় সেট করা। গত বিশ বছর ধরে এই ল্যাংগোয়েজ প্রোগ্রামটা প্রায় নিখুঁতভাবে কাজ করে চলছে। তার আগের একশ বছরে এই আইডিয়া নিয়ে ব্যাপক নিরীক্ষামূলক সফটওয়্যার বাজারে চালু ছিল।

এখন এটার পাইনেট টেন ভার্সন চলছে। শুরুর দিকে কিছু ঝামেলা হলেও দশ বছর হল কোন বাগের কথা শোনা যায়নি। পৃথিবী জুড়ে সবাই যার যার মাতৃভাষায় কথা বললেও এই কনভার্টারটি প্রাপকের মাতৃভাষায় সেটা বিশুদ্ধ অনুবাদ করে শোনায়। এমনকি এর ভয়েস সিনথেসাইজারটি প্রেরকের গলা নিখুঁত কপি করে। শুধু তাই না, দু'জন মুখোমুখি কথা বললেও, ল্যাঙ্গোয়েজ কনভার্ট করার জন্য এর মাইক্রোফোন সিস্টেমটি অটো অ্যাক্টিভেট হয়ে যায়।

ম্যাক্স জানেমান টাইপের বন্ধু। ভাষা বুঝতে না পারলেও ওর টোনটা ধরতে অসুবিধা হয় না। নিশ্চয়ই সাংঘাতিক জরুরী কোন বিষয়। বলতে না বলতেই আবার ফোন করল ম্যাক্স। একটা ক্ষীণ দুরাশায় ফোনটা ধরলাম আবার।

দু'একটা কথার পরেই ম্যাক্সের গলা শুনে আন্দাজ করলাম- মা বাপ তুলে গালাগালি করছে। দাঁতে দাঁত কাটলাম, সুযোগ নিচ্ছে শালা। হয়ত বুঝতেও পারে এরকম আশায় ভর করে বললাম, 'শোন আমার ডিভাইসে কোন একটা সমস্যা হয়েছে। তোর কথা কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা। প্লিজ একটা মেসেজ করে দে।

এই ফাঁকে আমি দেখছি কোন সমাধান করা যায় কিনা?' কলটা কেটে হ্যারিকে ডাকলাম। হ্যারি আমার গৃহস্থালি রোবট। সমস্যাটা বুঝিয়ে বলতে ও ডিভাইসটা নিয়ে দেখতে থাকল। মেসেজ টোন দেখে, গম্ভীর মুখে আমার দিকে এগিয়ে ধরল। ম্যাক্স ইংরেজিতে লিখেছে, 'তুমি শালা নটা পর্যন্ত ঘুমাচ্ছ আর ওদিকে তোমার মনিকা ম্যাম আমার ঘুম হারাম করে তুলছে।

ডিভাইসে কিসের সমস্যা যে, কোন কথা বুঝতে পারছ না? বাপের জন্মে এমন কথা শুনিনি। তুমি আসলেই একটা অপদার্থ। " মনিকা মানে মনিকা ইউজেন। বাঙালী মা, জার্মান বাবার শঙ্কর- অনিন্দ্য এক রূপসী। ফ্রি ল্যান্সার সাংবাদিক।

তার মুখ দেখলে যে কারো ভেতরে ঝিম ঝিম একটা একটা আবেশ চলে আসবে। যেমনটা হয়েছিল আমার আর ম্যাক্সের একসঙ্গে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের একটা বিজ্ঞান বিষয়ক সেমিনারে আমি আর ম্যাক্স যে যার দেশের প্রতিনিধি দলে ছিলাম। মনিকাও এসেছিল কাভার করতে। আকাশচুম্বী গুড উইল।

তার যে কোন স্টোরি কেনার জন্য টাইমস, হ্যারল্ডের মত বড় বড় পত্রিকা বিগ অফার নিয়ে বসে থাকে। যে কোন প্রফেশনাল সাংবাদিকের চাইতে মনিকার স্টোরিগুলো আলাদা হবে। সিক্সথ তো খুব কমন ব্যাপার। তার সেভেনথ, এইটথ অথবা নাইনথ সেন্সও আছে বোধ হয়। খবরের আড়ালে কত রকম খবর থাকতে পারে, আর গন্ধ শুঁকে শুঁকে তা কিভাবে বের করে আনতে হয় সে ব্যাপারে মনিকা ইউজেন এক দুর্লভ প্রতিভা।

আর এমনই রূপ আর ব্যক্তিত্বের জাদু তার- যে মুখোমুখি হলে আপনা আপনি সব তথ্য জানিয়ে দিতে ইচ্ছে করে। যে কোন আন্তর্জাতিক মানের প্রোগ্রামে মনিকার উপস্থিতি অপরিহার্য। বিজ্ঞান বিষয়ক প্রোগ্রামে মনিকা খবরের বাইরেও ভিন্ন কিছুর অনুসন্ধান করবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার মত অখ্যাত একজন বিজ্ঞানীকে নিয়ে পড়বে সেটা সুদূর কল্পনাতেও আসেনি। (ক্রমশ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.