আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশীদের অবদান

পর্ব-১ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশীদের অবদানের কথা লিখতে গেলে প্রথমেই লিখতে হয় ভারত ও তৎকালীন রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের কথা । এই দুটি দেশ আমাদের অর্থ দিয়ে,কুটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে, শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে,অস্ত্র দিয়ে এবং আরও অনেক ভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে । এদের সহযগিতার কথা লিখে শেষ করা যাবেনা। এই দুই দেশ ছাড়াও আরও যে সমস্ত দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি বিচ্ছিন্ন ভাবে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে বাংলাদেশের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়েছিল তাদের মধ্য থেকে উল্লেখ যোগ্য কয়েকজনকে নিয়ে এই লেখা । ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড ওডারল্যান্ড ছিলেন একমাত্র বিদেশী নাগরিক যিনি সশরীরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন।

তার জন্ম ১৯১৭ সালের ৬ই ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডের আমস্টারডামে। তিনি একজন ডাচ বংশদ্ভুত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক । ১৯৩৪ সালে তিনি বাটা সু কোম্পানীতে যোগ দেন। ১৯৩৬ সালে নেদারল্যান্ড সামরিক বাহিনীতে যোগদান করে ১৯৪০ সালে ২য় বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেন। হিটলারের নাৎসি বাহিনী যখন নেদারল্যান্ড দখল করে তখন অন্য অনেকের মতো তিনিও নাৎসি বাহিনীর হাতে বন্দি হন।

যদিও পরবর্তীতে সেখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন । ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর আবার তিনি বাটা সু কোম্পানীতে যোগদান করেন । ১৯৭০ সালে সিংগাপুর থেকে বদলী হয়ে টংগীতে অবস্থিত বাটা সু ফ্যক্টরীতে প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন । ঐ বছরই তিনি ম্যানেজার হিসেবে পদন্নতি পান। তিনি স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার ৯৬ গুলশান বাড়ীতে বসবাস করতেন ।

পরবতীতে ১লা ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে নিরাপত্তার কারনে রেডক্রস ঘোষিত নিরপেক্ষ এলাকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেল্টালে উঠেন। ২য় বিশ্বযুদ্ধে নিজ দেশের প্রতি হিটলারের নাৎসি বাহিনীর অত্যাচার তিনি নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করেন । বাংলাদেশে এসে পাকবাহিনীর দ্বারা অনুরুপ অত্যাচার তাকে বাঙ্গালী জাতীর প্রতি সহানুভুতিশীল করে তোলে । তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের অর্থ ও তার কোম্পানীর বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করতেন। পাক বাহিনীর বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে জীবনের ঝুকি নিয়ে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন গোপন তথ্য সংগ্রহ করে তা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে সরবরাহ করতেন ।

তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষন দিতেন এবং নিজেও যুদ্ধে অংশগ্রহন করতেন। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত ও ছবি সংগ্রহ করে তা আন্তজাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রচার করতেন । ওডারল্যান্ড ছিলেন একমাত্র বিদেশী নাগরিক যিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বীরপ্রতীক উপাধি লাভ করেন। ২০০১ সালের ১৮ই মে ৮৪ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে তিনি মৃত্যুবরন করেন। অস্ট্রেলীয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে তার মরদেহকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সম্মান দেয়া হয়।

উৎস একাত্তরের বিদেশীবন্ধু- ফজলে এলাহি মাহমুদ শাহীন উইকিপিডিয়া দৈনিক জনকন্ঠ -২২ শে মে ২০০১ সংখ্যা শুভ,সিলেট চলবে---- ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.