somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বব্যাংক আসলে কি?

০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যদি বলা হয় বিশ্বব্যাংক কিংবা আইএমএফ হচ্ছে ভুয়া আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থা কিংবা মাফিয়া চক্র- এতে অধিকাংশ মানুষ বিভ্রান্ত হলেও যারা অন্তর্দৃষ্টি, দূরদৃষ্টি এবং প্রজ্ঞাসম্পন্ন তারা প্রথমেই বিষয়টি সর্বাংশে সঠিক বলে মেনে নিবে। বিষয়টি এতোই গভীর ষড়যন্ত্র যে, বুঝতে হলে অল্প করে হলেও এদের ইতিহাসটা জানা প্রয়োজন।

১৮০০ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রারাজ্য শক্তিতে ব্যাপক হলেও অর্থনৈতিকভাবে আজকের আমেরিকার মতো দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। ওই পুরো সমস্যাটাই সৃষ্টি করেছিলো জিওনিস্ট রোতচাইল্ড ব্যাংক পরিবার। ইউরোপের প্রতিটি সরকারকে তারা সুদভিত্তিক শিকারী লোনের মাধ্যমে কব্জা করে নিয়েছিলো। যেভাবে বর্তমান আমেরিকান সরকারকে তারা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে। এই রোতচাইল্ড গোষ্ঠী অত্যন্ত দক্ষ গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে উন্নত দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং মুদ্রা ছাপানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অতি সূক্ষ্মভাবে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ১৯১৩ সালে ‘ফেডারেল রিজার্ভ’ নামে এক প্রাইভেট লিেিমটড কোম্পানী হিসাবে তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। তারা আমেরিকার অর্থনীতিকে ভিতর থেকে চুষে ফেলে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ঋণগ্রস্ত ফকিরে রূপান্তরিত করেছে। ঠিক যেভাবে এই রোতটাইল্ড পরিবার ব্রিটিশ সম্রারাজ্যের অর্থনীতিকে পঙ্গু করেছিলো তাদের ধ্বংসের পূর্ব মুহূর্তে। এরা হচ্ছে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির কৃষ্ণগহ্বর

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ যখন শেষ পর্যায়ে তখন রোতচাইল্ড পরিবার পৃথিবীর অর্থনীতির উপর নিজস্ব কর্তৃত্ব স্থাপনের উদ্দেশ্যে ১৯৪৪ সালে এক সাথে বিশ্বংব্যাংক (WB), আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO) প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব নিয়ে এক সম্মেলনের আয়োজন করে আমেরিকার ব্রেটনউড শহরে। প্রথম প্রচেষ্টায় WTO গৃহিত না হলেও বাকি দুইটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করার সম্মতি অর্জন করে। প্রতিষ্ঠার সময় তারা যে উদ্দেশ্য উপস্থাপন করে তা হচ্ছে, ‘বৈদেশিক বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে সমন্বয় সাধন করা।’ কিন্তু কার্যত অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য ছিলো বিশ্ব অর্থনীতি এবং বিশ্ব বাণিজ্যের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করা। যা তারা আক্ষরিক অর্থেই অর্জন করতে সমর্থ হয়।

বিশ্বব্যাংক (WB), আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবল (IMF) কিংবা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO) সবই হচ্ছে মানবজাতির অর্থনীতি চুষে নেয়ার এক একটি বৃহদাকৃতির ভেকুয়াম ক্লিনার । এরা এখন আন্তর্জাতিক ঋণ হাঙ্গর নামে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। তবে তাদের প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার কারণে হোক কিংবা গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল করে হোক, তৃতীয় বিশ্বে ওদের দালালের অভাব হয় না। রাজনৈতিক নেতৃত্ব কিংবা সরকারি কর্মকর্তাদেরকে দালালে রূপান্তর করার দক্ষতার ক্ষেত্রে তার খোদ শয়তানকেও হার মানায়। তৃতীয় বিশ্বের ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এমনকি সামনের সারির দৈনিক পত্রিকাসমূহের মালিক ও সম্পাদকদেরকেও তারা নিজেদের গোলাম বানিয়ে ফেলে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহকে ঋণের জালে বন্দি করে তারা স্বাধীনভাবে হুকুম জারী করতে থাকে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তো অনেক দূরের কথা, ঋণের ভারে জর্জরিত এ সকল দেশ ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কৃতদাসে পরিণত হয়। খোদ ইউরোপ/আমেরিকার নিরীহ জনগণকে জিওনিস্ট রোতচাইল্ড ব্যাংক, ইনসিউরেন্স, শেয়ার মার্কেট, বিভিন্ন ভুয়া অর্থনেতিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমে বেকার, পরবর্তীতে বাস্তুহারা এবং সবশেষে ফকিরে রূপান্তরিত করেছে

IMF এবং WB হচ্ছে একান্ত গোপনীয় দুইটি সংস্থা। এদের কোনো হিসাব অডিট করার সুযোগ কারো নেই। এরা কিছু সেন্ট্রাল ব্যাংকের গভর্নর এবং কিছু নিজস্ব কেনা গোলাম অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে গোপনে সব পলিসি তৈরি করে যা সরকারি/বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান অডিট করাতো অনেক পরের কথা, ওই সকল পলিসি দেখা কিংবা জানারও কোনো সুযোগ নেই।
যতোদিন জিওনিস্টদের ওই সকল অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান চালু থাকবে ততোদিন তথাকথিত উন্নয়নশীল দেশসমূহ কস্মিনকালেও উন্নত দেশ হতে পারবে না। যেখানে তারা উন্নত দেশসমূহকে ঋণের ফাঁদে ফেলে ফকির করছে সেখানে অনুন্নত দেশের উন্নতি করার তো প্রশ্নই আসে না। এতদ্ববিষয়ে জন পারকিনস নামে জনৈক ‘অর্থনীতি ধ্বংসকারী’ বিস্তারিতভাবে ওই মাফিয়াদের কর্মকা- তার সাড়া জাগানো বই ‘এক অর্থনীতি ধ্বংসকারীর আত্ম স্বীকৃতি’তে লিপিবদ্ধ করে।

কী গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ওই সমস্ত প্রতিষ্ঠান তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহের অর্থনীতি ধ্বংস করে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা ওই বইতে লিপিবদ্ধ করা হয়। উক্ত ধ্বংসাত্মক কর্মকা-ের সাথে দীর্ঘ ২১ বছর জড়িত থাকার পর বীতশ্রদ্ধ হয়ে ইস্তফা দিয়ে মানবীয় বোধ থেকেই আত্মস্বীকৃতিমূলক উক্ত বইটি লিপিবদ্ধ করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত ওই মাফিয়া চক্রের প্রতিষ্ঠানসমূহের কারণে পৃথিবীতে গরিব দেশের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। বিশ্বব্যাংক কিংবা আইএমএফ যদি এতোই দক্ষ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান হতো তবে খোদ আমেরিকা কিংবা ইউরোপে কেন আজ কোটি কোটি মানুষ বেকার? বেঁচে আছে শুধু ফুড স্ট্যাম্পের মাধ্যমে। আমেরিকার মতো দেশে পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ আজ বেকার এবং দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করছে

একটি ফলগাছ পরিচিত হয় তার ফলের নামে। IMF এবং WB এর কর্মকা-ই প্রকাশ করে যে, তারা ফলবৃক্ষ না বিষবৃক্ষ। IMF এবং WB এর ঋণের ধোকায় পরে ২০০১ সালে আর্জেন্টিনা ব্যাপক আর্থিক সঙ্কটে পতিত হয়। অন্যান্য দেশসমূহের মধ্যে আছে, গ্রিস , তিউনিশিয়া , আয়ারল্যান্ড , ইতালি , জামাইকা বিশ্বে শয়তানের প্রতিনিধিত্বকারী ওই জিওনিস্ট গোষ্ঠী খ্রিস্টানদের ভ্যাটিকানের পোপ এবং মুসলমানদের সউদী রাজতন্ত্র দুই প্রতিষ্ঠানকেই অত্যন্ত দক্ষতার সাথে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। ফলশ্রুতিতে খ্রিস্টানরা যেখানে দলে দলে নাস্তিক হচ্ছে আর সমলিঙ্গে বিবাহ করছে সেখানে পোপ এ বিষয়ে চিন্তিত না হয়ে গ্লোবাল সেন্ট্রাল ব্যাংক চালু করার প্রস্তাব দেয়।

হঠাৎ করে সউদী ওহাবী রাজা যদি গ্লোবাল ব্যাংকের ওই একই প্রস্তাব দিয়ে বসে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ পোপের মতো সে একই মনিবের গোলাম। IMF এবং WB কে এদেশ থেকে কেন বিতারিত করা উচিত তা জানতে চাইলে ক্লিক করুন

তারা যে তৃতীয় বিশ্বের অর্থনীতি ঋণের ফাঁদে ফেলে চুরি করে স্বচক্ষে দেখতে চাইলে, ঘুরে আসুন ঢাকাতে অবস্থিত IMF, WB কিংবা ADB অফিস। এরা অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান কিন্তু কাঠামোসমূহ তৈরি করা হয়েছে অতীত সেনাবাহিনীদের দূর্গের মতো করে। সীমাহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কেন এতো কঠিন নিরাপত্তা? কিসের এতো ভয়? এখানেই চলে আসে ঐতিহ্যবাহী বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ বাক্য, ‘চোরের মন পুলিশ পুলিশ।’
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৩২
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরাধের সেকাল ও একাল

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

সেকাল
--------------------------------------------------------
স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা হেনরি বেভারিজ ছিলেন বৃটিশ-ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের একজন সদস্য৷বেভারিজ ১৮৭০ সালের মার্চ হতে ১৮৭১ সালের মার্চ এবং ১৮৭১ সালের জুন থেকে ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর বরিশালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×