আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভূমিদস্যুতা তদন্ত করলেন আঞ্চলিক পরিষদের তদন্ত কমিটি

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের উদ্যোগে ভূমিদস্যুতা নিয়ে গত ১৩ জুন বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার তৈনফা মৌজায় সরেজমিন তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। তদন্ত কর্মকর্তাদের নিকট স্থানীয় মৌজা হেডম্যান, জুমিয়া পরিবার প্রধান, পাড়া কার্বারীরা বদিউল আলম (বদি) গংদের ভূমিদস্যূতার বিবরণ তুলে ধরেন। এ তদন্ত অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেন আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য সাধুরাম ত্রিপুরা, কে.এস মং ও শফিকুর রহমান। এছাড়াও তাদের সাথে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম, ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন, জেএসএস নেতা মংসানু মার্মা, কাইনথপ মুরুং, চাহা মং মার্মা ও উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আনোয়ার জিহাদ চৌধুরী প্রমুখ। জানা গেছে, ২০১২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আলীকদম থেকে ৪৭ জনের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর দাখিল করা হয়।

এতে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন যে, উপজেলার তৈনফা মৌজায় রাবার প্লট ও হর্টিকালচার লীজের নামে বহিরাগত ভূমিদস্যুরা জুমিয়াদের প্রথাগত ভোগ দখলীয় জমি জবর দখল করেছে। এরফলে জুমিয়ারা জুম চাষ করতে পারছেনা। এ ভূমিদস্যুচক্রের গ্যাংলিডার হিসেবে রয়েছে কুমিল্লা জেলা সদরের বাসিন্দা জনৈক বদিউল আলম (বদি)। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য চেয়ারম্যান কর্তৃক আঞ্চলিক পরিষদের স্মারক নং- ৬৭৩ তারিখ ১৫/০৫/২০১৩ মূলে নির্দেশনা জারী করা হয়। অবশেষে গত ০৪/০৬/২০১৩ ইং তারিখের স্মারক নং- ৭৪২ মূলে গঠিত হয় তিন সদস্যে একটি তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটির সদস্য সাধুরাম ত্রিপুরা ও কে.এস মং সরেজমিন তদন্তকালে বদি গংদের ভূমিদস্যুতার চিত্র দেখে বিস্ময়ে হতবাক হন। তারা বলেন, এই দখলীকৃত ভূমিতে শতবছর ধরে মুরুংসহ অন্যান্য পাহাড়ি বাসিন্দারা বসবাস করছেন। তারা উপস্থিত হেডম্যান, কার্বারী ও জুমিয়াদের আশ্বস্থ করে বলেন, এই ভূমির অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবেনা। কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। তথাকথিত লীজ বন্দোবস্তির নামে বদি গংদের কয়েক হাজার একরের দখলীকৃত ভূমি উদ্ধারে অচিরেই আঞ্চলিক পরিষদ থেকে উদ্যোগ নেয়া হবে।

এ সময় স্থানীয় জুমিয়াদের অধিকার রক্ষায় এগিয়ে আসায় জন্য উপস্থিত জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের সাধুবাদ জানান তারা। তদন্তকালে উকিং মুরুং কার্বারী জানান, বদি গংদের জবর দখলের কারণে শুধু স্থানীয় পাহাড়ি পরিবারগুলো নয়, অভাব-অনটনে রয়েছে স্থানীয় বাঙ্গালীরাও। বদি গং পাহাড়ে উৎপাদিত গাছ বাঁশ আহরণেও বাধা দিয়ে থাকে। উপস্থিত মৌজা হেডম্যান রেংপুং মুরুং তদন্ত কমিটির নিকট বলেন, বহিরাগতরা তার মৌজায় যে সকল লীজ বন্দোবস্তি নিয়েছে তাতে মৌজা হেডম্যানের কোন সুপারিশ নেই। এ সংক্রান্ত কোন তথ্যও তার কাছে নেই।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় ভূমিদস্যু প্রতিরোধ কমিটির নেতারা অভিযোগ করেন, জুমিয়া ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগ দখলীয় জমি দখলে নিতে ভূমিদস্যূ বদি গংকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন আলীকদম থেকে সদ্য বদলীকৃত ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির পদবীধারী চি‎িহ্নত চার পাঁচজন পাতি নেতা। অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেয়া হলে গত ৩ এপ্রিল সদ্য বদলী হওয়া ইউএনও আসাদুজ্জামান তদন্তের নামে প্রহসন করেন। তদন্ত কর্মকর্তাসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির কতিপয় পাতি নেতা বদি আলমের খামার বাড়িতে তদন্তের নামে ভূরিভোজে অংশ নেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.