বড়ছি দিয়ে মাছ ধরার একটা দোয়া আছে। ছোটবেলায় আমার এক দাদি (আব্বার ফুফু) শিখিয়েছিল। দোয়া পড়ে বড়ছির আদারে থুক দিয়ে পানিতে ফেলতে হয়।
একদিন দাদির দোয়ার জোর পরিক্ষা করার জন্য বড়ছি নিয়ে মাছ ধরতে বসলাম। দোয়া পড়ে ফু দিয়ে পানিতে বড়শি ফেলতে ফেলতেই বড়শিতে টান পড়ল আমি আনন্দে আত্মহারা হয়ে বড়শিতে টান দিলাম।
দাদির শিখিয়ে দেওয়া দোয়ার জোরেই হোক আর অন্যকোন কারনেই হোক সেদিন আমাদের পুকুর থেকে অনেক মাছ ধরেছিলাম। দাদির শিখিয়ে দেওয়া মন্ত্র ডাইরিতে লিখে রেখেছিলাম।
ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, আমার সেই ডাইরিটা একদিন এক হুজুর শ্রেনীর বড়ভাই এর হাতে পড়ে যায়। ভাইজান গম্ভির হয়ে বলল "এটা কী?"
"বড় ভাই, মাছ ধরার মন্ত্র। "
"মাছ ধরতে মন্ত্রের দরকার আছে নাকি! পুকুরে জাল ফেলে দিলেইতো মাছ ধরা পড়ে।
"
"এটা হল বড়শি দিয়ে মাছ ধরার মন্ত্র। "
হুজুর বড়ভাই মারাত্মক বিরক্ত হল। থম-থমে গলায় বলল "মন্ত্রটা পড়তো। "
আমি ডাইরি দেখে দেখে মন্ত্র পড়লাম। এবার বড়ভাই বলল " কলেমা পড়।
"
আমি কলেমা শাহাদাৎ পড়লাম। কৌতোহলি দৃষ্টিতে বড়ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললাম "হঠাৎ কলেমা পড়ার দরকার কেন হল?"
"কারন, মাছ মারার মন্ত্র পড়ার কারনে তোর ঈমান নষ্ট হয়ে গেছিল। তাই কলেমা পড়িয়ে ইমানে আনলাম। "
"ওহ!"
মাছ মারার মন্ত্র পড়ার কারনে ঈমান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল কারন, সেই মন্ত্রে হিন্দুদের দেব-দেবীর নাম ছিল!
সেদিন সাথে সাথে ডাইরির পাতাটা বড়ভাই আমাকে দিয়ে ছিড়িয়ে নিল। কুঁচি-কুঁচি করে আমার সামনে ছিড়ে ফেলল।
আজ বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছি। আজ খুব মনে পড়ছে মাছ মারার মন্ত্রটার কথা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।