আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুয়াঃ মুমিনের হারানো ঐশ্বর্য

জেগে জেগেই স্বপ্ন দেখি বা দেখার চেষ্টা করি কেননা ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথে যদি স্বপ্নও যদি ভেঙ্গে যায় বা ঘুমের ঘোরে দেখা স্বপ্ন যদি মনে না থাকে !!! তাহলে যে নিজেকে একেবারেই হারিয়ে ফেলব আর স্বপ্ন ও কোনদিন-ই বাস্তবে রুপ দিতে পারব না !!! -Tauhidul Islam তানিন দুয়াঃ দুয়া মুমিনের অস্ত্রস্বরুপ । দুয়ায় ভাগ্য ফেরে, অভাব মোচন হয়, পাপ হতে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়, রহমত-বরকত-মাগফেরাত হাসিল হয় এবং সর্বোপরি আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি মেলে । দুয়ার সঠিক নিয়ম-কানুন ও আদব কায়দা না জানার ফলে আমরা অনেকেই এবং অনেকাংশেই এইসকল ফল লাভে ব্যার্থ হই । দুয়ার কিছু আদব – অভ্যন্তরীণঃ - একমাত্র আল্লাহ্‌ই দুয়ার জবাব দেন - মনোযোগী অন্তর ও ইয়াকীন - আল্লাহ্‌ সম্পর্কে সুধারনা - ভয় ও আশা নিয়ে দুয়া করা দুয়ার আদব – বাহ্যিকঃ - অযু করা - কিবলামুখি হওয়া - দুই হাত তোলা - চুপিসারে আকুতি-মিনতি করে দুয়া করা - আল্লাহ্‌র প্রশংসা ও নবীর উপর দুরুদ পড়ে শুরু করা - শুরুতে ইস্তিগফার করা (গুনাহ স্বীকার করা ও ক্ষমা চাওয়া) - তাওয়াসসুল (আল্লাহ্‌র গুনবাচক নাম, কোন আমল, ঈমানের কথা এবং নবীর প্রতি ভালোবাসার কথা উল্লেখ করা) - ক্রন্দন - সকল মুললিমদের জন্য দুয়া করা - সবসময়য় দুয়া করা - একমাত্র আল্লাহ্‌র নিকট অভিযোগ করা (নিজের অক্ষমতা স্বীকার করে, আল্লাহ্‌কে দোষারোপ করে নয়) - দুয়া কবুলের ফলাফল উল্লেখ করা দুয়া কবুলের উপযোগী সময়ঃ - রাত্রীর শেষ তৃতীয়াংশ - আযানের সময় - আযানের জবাব দেয়ার পর - আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময় - বৃষ্টিপাতের সময় - সালাতের সিজদায় - সালাতের শেষ বৈঠকে - যখন দুই বাহিনী মুখোমুখি হয় (যুদ্ধের সময়) - জুম্আর দিন একটি নির্দিষ্ট সময় (১ম প্রসিদ্ধ মতঃ জুম্আর আযান থেকে নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত । ২য় প্রসিদ্ধ মতঃ আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত) - রাত্রীতে ঘুম ভাঙ্গলে - যমযমের পানি পানের সময় - রামাদান ও লাইলাতুল ক্বদর - হজ্জ ও ওমরাহের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় (সর্বোত্তম সময়ঃ আরাফার দিন) যে সকল ব্যক্তির দুয়া কবুলের উপযোগীঃ - মাযলুমের দুয়া* - মুসাফিরের দুয়া - সন্তানের বিরুদ্ধে বা সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দুয়া (দাঁড়ি রাখা, হিজাব করা বা ইসলামের বিপরীত দুয়া কবুল হয় না) - পিতা-মাতার জন্য সন্তানের দুয়া - রোযাদারের দুয়া - হজ্জ, ওমরাহ্‌ ও জিহাদকারীর দুয়া - কোন মুসলিমের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দুয়া - আল্লাহ্‌কে অধিক স্মরনকারীর দুয়া* - ন্যায়পরায়ন শাসকের দুয়া* * এই ৩ প্রকার লোকের দুয়া কবুল হয় ।

দুয়া কবুলের পথে বাঁধাঃ - হারাম উপার্জন - কোন কোন গুনাহ (যেমনঃ ব্যাভিচারী নারীর দুয়া, অন্যায়ভাবে ট্যাক্স সংগ্রহকারীর দুয়া) - সৎকাজে আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ না করা - দুয়ার জবাব না পেয়ে হাল ছেড়ে দেয়া/তাড়াহুড়া করা - নিষিদ্ধ কিছু বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের দুয়া দুয়ার জবাব বিলম্বিত হওয়ার কারনঃ - আল্লাহ্‌ যাকে ইচ্ছা, যা ইচ্ছা দেন - পরীক্ষা - হিকমত - কাংখিত বস্তু অকল্যাণকর হতে পারে - আল্লাহ্‌র নির্বাচন বান্দার নির্বাচনের চেয়ে উত্তম - নিজের সংশোধনের সুযোগ - আল্লাহ্‌ ৩ উপায়ে দুয়ার সাড়া দেন (১। সাথে সাথে দিবেন ২। আখেরাতে বিনিময় দিবেন ৩। কোন বিপদ সরিয়ে দিবেন) পরিশেষে, বিপদাপদ বা দূর্ঘটনা ঘটলেই তাতে হাহুতাশ করার কারণ নেই । কারণ, আমাদের জীবনে এমন ঘটনা ঘটে যা আমরা চাই না কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার মধ্যেই আমাদের কল্যাণ নিহিত রয়েছে ।

আবার অনেক সময় এমন কিছু আশা করি যার মধ্যে হয়ত কোন অকল্যাণ ও ক্ষতি অপেক্ষা করছে । আমরা কেউই ভবিষ্যত সম্পর্কে জানি না । আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমদের কাছে হয়তবা কোন একটা বিষয় পছন্দনীয় নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর । আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর । বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না ।

” [সূরা বাকারা: ২১৬] দুয়ার মানে এই নয় যে, আপনি যা পাচ্ছেন এর উসিলায় বরং এর মাধ্যমে আল্লাহ্‌র সাথে সম্পর্ক তৈরী হওয়া বা আরো নিবিড় হওয়াই সবচেয়ে বড় পাওয়া । _______________________________________________________________________________________ এটি OIEP সাপ্তাহিক আলোচনার সারমর্ম (১৪/০৬/২০১৩) ক্লাশে উপস্থিত থেকে Power Point Prestation ও আলোচনা থেকে নিজের জন্য সংগ্রহকৃত চুম্বক অংশ (কিছু নিজের কথা সহ) এবং এখানের ভুল-ত্রুটি একান্ত অনিচ্ছাপ্রসূত । যদি কোন প্রকার ভুল-ত্রুটি কিংবা কমতির হয় তার জন্য আমি বৈ অন্য কেউ দায়ী নয় এবং এর জন্য আপনাদের কাছে ও মহান আল্লাহ্‌র কাছে বিনিতভাবে ক্ষমা আহ্বান করছি । আল্লাহ আমাদের সকলকে তার সন্তোষমূলক কাজ করার তাওফীক দান করুন এবং সকলকে হেদায়াতের উপর ইস্তেখামাত থাকার তাওফীক দান করুন । আমীন ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.