কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! (নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতি যথোচিত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক)
চাটুজ্যেদের রোয়াকে বসে বাদাম চিবুচ্ছিলুম। এমন সময় ঝড়ের বেগে কে যেন এসে হাজির। তাকিয়ে দেখি, স্বয়ং টেনিদা।
টেনিদা এসেই হুঙ্কার দিলে, “অ্যাই প্যালা, ওটা কি?”
এই রে, সেরেছে! দুনিয়ার কোন খাবারের প্রতি টেনিদার নজর পড়লে তার আর রক্ষা নেই, টেনিদা ওটা সাবাড় করেই ছাড়বে। আমি তড়িঘড়ি করে বাদামের ঠোঙ্গাটা জামার নিচে লুকোতে গেলাম, কিন্তু টেনিদা আমার হাতটা খপ করে ধরে ছোঁ মেরে ঠোঙ্গাটা আত্মসাৎ করল।
ঠোঙ্গার ভিতরে তাকিয়েই কেমন যেন খুশি খুশি হয়ে উঠল টেনিদার মুখ। সাথে সাথে দুই তিনটা বাদাম ভেঙ্গে মুখে পুরে দিল টেনিদা। খেতে খেতেই বলল, “কি রে? বড় মজা তো! আর আছে?”
আমি বললাম, “স্কুলের টাকা বাঁচিয়ে অনেক কষ্টে কিনেছিলুম, তুমি তো পুরোটাই মেরে দিলে”।
টেনিদা খেতে খেতে চুকচুক করে শব্দ করল। যেন আমাকে সহানুভূতি দেখাচ্ছে।
রাগে গা রি রি করে জ্বলতে লাগলো আমার।
কপ কপ করে অনেকগুলো বাদাম ভেঙ্গে খেয়ে ফেলল টেনিদা। আমি গোঁজ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলুম। এক পর্যায়ে আমার দিকে ঠোঙ্গাটা আগিয়ে দিয়ে টেনিদা বলল, “নে খা”।
আমি টেনিদার হাত থেকে ঠোঙ্গাটা নিলাম।
দেখলাম, একটা বাদামও অক্ষত নেই। সব খাওয়া সারা। টেনিদাটা যে কি না! একটুও রাখবে না আমার জন্য?
বললাম, “তুমি কি বল তো টেনিদা? পুরোটাই তো বাগিয়ে নিয়েছ দেখি!”
টেনিদা কটমট করে আমার দিকে তাকাল। তারপর হঠাৎ উদাস কণ্ঠে বলল, “তুই কি বল তো? মানুষ এখন মানুষের ক্লোনিং করছে, যুদ্ধ বিগ্রহে দেশের পর দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, সায়েন্টিস্টরা চাঁদের দেশে ঘরবাড়ি বানাচ্ছে আর তুই বসে বসে বাদামের চিন্তা করছিস। ছি ছি! এইজন্যেই তো মরার দেশটার কিছু হয় না!”
এহ! ঢং কত! আমি বসে বাদামের চিন্তা করছি আর উনি বুঝি দেশের চিন্তা করে দুনিয়া উলট পালট করে ফেলেছেন! রেগেমেগে টেনিদাকে একটা কড়া ধমক দিতে যাব, এমন সময় দেখি ক্যাবলা আর হাবুল এইদিকেই আসছে।
ওদের দেখে হঠাৎ খুশি হয়ে উঠলাম আমি। টেনিদাকে আর কিছু বলার কথা মনেই থাকল না আমার।
এখন আমাদের পরিচয়টা দেয়া যাক। আমি প্যালারাম, বছরে ছ মাস পেটের পিলেয় ভুগি, সকাল বিকাল পটোল দিয়ে শিঙ্গিমাছের ঝোল খাই। হাবুল সেন ঢাকাইয়া, বুদ্ধিসুদ্ধি একটু কম।
ক্যাবলা ওরফে ক্যাবলাকান্ত দারুণ ব্রিলিয়ান্ট, যাকে বলে ক্লাসের ফার্স্ট বয়, তাই। আর টেনিরাম বাড়ুজ্যে ওরফে টেনিদা, ফেলটু মারা মেডিকেল স্টুডেন্ট, বড় বড় গল্প দেয়া আর আমাদের খাবার কেড়ে খাওয়া ছাড়া বর্তমানে যার আর কোন কাজ নেই।
তো আমরা চারজন ভালোই আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ রাস্তায় চোখ পড়তেই দেখি, ওপাড়ার চৌধুরী বাড়ির বড় মেয়ে মুন্নি হেঁটে আসছে।
মুন্নি মেয়েটা বিশাল সুন্দরী।
ক্লাসে আসে বাপের গাড়িতে করে। সবসময় ভাবে থাকে। ক্লাসের মধ্যেও মাঝে মাঝে আয়নায় তাকিয়ে মেক আপ ঠিক করে। আর কথা বলার সময় অনর্থক ডান পা নাচাতে থাকে।
মুন্নিকে দেখেই আমাদের সবার দিল ধাড়াক ধাড়াক শুরু হয়ে গেল।
নিজের অজান্তেই চুল আর কলারটা ঠিক করতে ব্যস্ত হয়ে উঠলাম আমরা। হাবুলের দিকে আড়চোখে তাকাতেই দেখি হাবুল ডান হাতের মধ্যমা দিয়ে কান চুলকাচ্ছে। আমাদের নব্য আবিষ্কৃত ইভটিজিং ল্যাঙ্গুয়েজ অনুসারে এর অর্থ হচ্ছে, “মালটা কেমন রে?”
আমি দুই হাতের তেলো এক করে বিশেষ অ্যাঙ্গেলে একটু ঘষলাম। এর মানে হচ্ছে গিয়ে, “জবর!”
ক্যাবলা ক্যারামের গুঁটি মারার মত করে একটা ভঙ্গি করল। এর অর্থ, “এই মালটাকে কি করা যায়?”
আমি দুই ঠোঁট এক জায়গায় নিয়ে এমন একটা মুখভঙ্গি করলাম যার অর্থ, “শিষ দেয়া যায়”।
ক্যাবলা আর হাবুল নিচের দিকে দুবার মাথা নাড়াল। এর অর্থ, “আমরা রাজি”।
মুন্নি যতই কাছে আসে ততই আমাদের হার্টবিট বাড়তে থাকে। কাছে আসতে আসতে একসময় মুন্নি আমাদের দিকে তাকিয়ে অবজ্ঞার একটা দৃষ্টি উপহার দিল। ঐ দৃষ্টি দেখে নিজেকে মানুষ নয়, হঠাৎ কেমন তেলাপোকা তেলাপোকা মনে হতে লাগলো আমার।
হাবুল, ক্যাবলা আর আমি মিলে যেই না একটা শিষ দিতে যাব, এমন সময় হঠাৎ টেনিদা মাথায় মারল একটা রাম গাট্টা!
গাট্টা খেয়ে কিছুক্ষণ চোখের সামনে সর্ষে ফুল না, একেবারে সর্ষে ক্ষেত দেখলাম আমি। সম্বিত ফিরে পেয়ে তাকাতেই দেখি, পাখি হাওয়া।
টেনিদার দিকে কটমট করে তাকালাম আমি। বললাম, “দিলে তো সব ভণ্ডুল করে! একটু ইভটিজিং করলে কি হয়?”
টেনিদা বলল, “কি হয় মানে? জানিস ও কে?”
আমরা সমস্বরে বললাম, “কে?”
ভাবের ঠেলায় টেনিদার চোখ বন্ধ হয়ে গেল। ও বলল, “আমার বোন!”
“বোন!!!”, তিনজনই আঁতকে উঠলাম আমরা।
“তোমার বোন? চৌধুরী বাড়ির মেয়ে তোমার বোন?”
টেনিদা গভীর ভাবের সাথে উত্তর দিল, “হু”।
কৌতূহলে ফেটে পড়লাম আমরা, “কিরকম বোন? পিসতুতো? মাসতুতো?”
টেনিদা কান চুলকিয়ে বলল, “আরে অত কথা শুনে কি করবি? বোন মিনস বোন। ব্যস”।
আমরা হতাশ হয়ে বসে রইলাম। এত বড় একটা কথা টেনিদা আমাদের কাছ থেকে গোপন করল! নাহ, টেনিদার লাকটা আসলেই সেইরকম।
এইরকম একটা সুন্দরী নাকি ওর বোন। এও কি সহ্য করা যায়?
একটু পরে রাস্তার দিকে চোখ যেতেই দেখি, জমিদার বাড়ির মেয়ে শিলা কোমর দুলিয়ে দুলিয়ে হেঁটে আসছে।
শিলা মেয়েটা সবসময় কমপক্ষে তিন কেজি মেক আপ মেরে থাকে। তার মাথায় সবসময় কাপড় থাকে, কিন্তু হাত সবসময় খোলা থাকে। কথা বলার সময় ফেসিয়াল নার্ভ পালসির মত সে সবসময় মুখের ডান দিকটা বেঁকিয়ে থাকে।
আর হাঁটার সময় তার সর্বাঙ্গ কেন যে পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকে ঈশ্বর জানেন।
শিলাকে দেখে নিমিষেই সব দুঃখ কষ্ট ভুলে গেলাম আমি, ক্যাবলা আর হাবুল। আগের পাখিটা মিস হয়ে গেছে, এবারেরটা কোনমতেই মিস করা যাবে না। মুন্নির মতই শিলাও আমাদের দিকে একটা তাচ্ছিল্যের দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। আবার কেন যেন নিজেকে তেলাপোকা তেলাপোকা মনে হতে লাগলো আমার।
শিলা কাছে আসতেই সমস্বরে যেই না বলতে যাব, “মাই নেম ইজ শিলা, শিলা কি জওয়ানি...”, সাথে সাথে আবার রাম গাট্টা! এবার আগেরটা থেকেও জোরে!! চোখে প্রায় অন্ধকার দেখলাম কিছুক্ষণ।
সম্বিত ফিরে তাকিয়ে দেখি, এবারও পাখি উধাও। মেজাজটা এমন খারাপ হল যে কি বলব! জোরে জোরে বললাম, “তোমার হয়েছেটা কি টেনিদা? ইভটিজিং ছেড়ে দিয়েছ কেন তুমি?”
ক্যাবলা আমার কানে কানে বলল, “মেয়ে বোধ হয় টেনিদার আর ভালো লাগে না। এখন বোধহয় ছেলে ভালো লাগে! ভাবগতিক তো সুবিধার মনে হচ্ছে না রে, প্যালা!”
টেনিদা গুরুগম্ভীর স্বরে বলল, “এইটাও আমার বোন!”
আমরা তিনজন একসাথে লাফিয়ে উঠলাম। “মানে? জমিদার বাড়ির মেয়ে তোমার বোন হয় কিভাবে?”
টেনিদা নাক চুলকিয়ে বলল, “অত জেনে তোরা কি করবি? আর, এইসব ইভটিজিং ভালো না বুঝলি, ভালো হয়ে যা।
ভালো হইতে পয়সা লাগে না”।
টেনিদার মুখে এই কথা! অথচ এই টেনিদা একসপ্তাহ আগেও ইডেন কলেজের সামনে বাসী রজনীগন্ধা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত। হায় হায়। টেনিদার এই আচমকা পরিবর্তনের কারণ কি??
মনমরা হয়ে বসে আছি, একটু পরে হাবুলের ডাকে আবার সচকিত হয়ে উঠলাম। দেখি, রাস্তায় হেলেদুলে এদিকেই হেঁটে আসছে কাজীবাড়ির চামেলি।
চামেলি মেয়েটার ৯৯ পারসেন্ট ভালো, খালি মাঝে মাঝে ব্রেক ফেল করে। মানে একেক সময় একেকজনের বাহুলগ্না হয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় তাকে। আফসোস, শুধু আমার বাহুলগ্নাই সে এখন পর্যন্ত হয় নি, অদূর ভবিষ্যতে হবার কোন সম্ভাবনাও নেই।
কাছে আসতেই চামেলিও আমাদের দিকে একটা অবজ্ঞা ভরা দৃষ্টি হেনে আবার মুখ ফিরিয়ে নিল। তার বোঁচা নাকটা একটু কুঁচকে উঠল যেন।
যেন আমরা মানুষই না। তেলাপোকা জাতীয় কিছু। হোমো স্যাপিয়েন্স না, হোমো তেলাপোকানাস।
আমরা তিনজন মিলে গভীর আবেগে “চিকনি চামেলি” গানের অংশবিশেষ গেয়ে উঠতে যাব, ঠিক এইসময় প্রচণ্ড একটা অপ্রত্যাশিত গাট্টায় প্রায় অজ্ঞান হয়ে গেলাম আমি।
সম্বিত ফিরতেই টেনিদাকে ধরলাম, “কি ব্যাপার? এইটা তো আর বোন না!”
টেনিদা বলল, “এইটাও বোন”।
আমরা আঁতকে উঠে বললাম, “কেমনে? হাউ পছিবল?”
টেনিদা বিশাল ভাব নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, “নাথিং ইজ ইম্পছিবল! দেয়ার ইজ নো ইম্পছিবল ওয়ার্ড ইন টেনিরামস ডিকশনারি!”
মন খারাপ করে বসে আছি, হঠাৎ দেখি তিন দিক থেকে তিনটা মার্সিডিজ গাড়ি এসে আমাদের রোয়াকের সামনে থামল। তিনটা গাড়ি থেকে গটমট করে তিন ভদ্রলোক নামলেন। আর তাদের পিছনেই, আরে, এরা কারা! এরা তো মুন্নি, শিলা আর চামেলি!!
ভয়ে দম বন্ধ হয়ে গেল আমার। বজ্জাত মেয়েগুলো নিশ্চয়ই গিয়ে বাপের কাছে সব নালিশ করেছে! কিন্তু...আমরা তো কিছুই করি নি। তাহলে কেন নালিশ করবে?
জমিদার, চৌধুরী আর কাজী, তিনজনই আমাদের দিকে আসতে থাকলেন।
ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেল। আড়চোখে দেখলাম, ক্যাবলা আর হাবুলেরও একই অবস্থা। হাবুল আবার রানের চিপায় হাত দিয়ে রেখেছে, ওর আবার একটু কিছুতেই মাইনাস হয়ে যাবার স্বভাব আছে তো, তাই। আমাদের মধ্যে শুধু টেনিদাই জিরাফের মত লম্বা গলাটা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
তিন ভদ্রলোক এসে রোয়াকে পৌঁছুলেন।
কাজী বললেন, “তোমাদের মধ্যে টেনিরাম কে?”
টেনিদা বুক ফুলিয়ে বলল, “আমি স্যার”।
জমিদার বললেন, “তোমার সাথে ওরা কারা?”
টেনিদা ফোলা বুক আরও ফুলিয়ে বলল, “ব্লাডি ইভটিজারস, স্যার। ডোন্ট নু হাউ টু রেস্পেক্ট উইমেন, স্যার”।
চোখ কপালে উঠে গেল আমাদের। টেনিদা বলে কি? আমরা “ব্লাডি ইভটিজারস”? তাহলে ও কি? আর আমরা মেয়েদের রেস্পেক্ট করতে জানি না, ও বুঝি খুব জানে? আর এত ইংরেজি ফলিয়ে ভাব নেবারই বা কি আছে?
চৌধুরী বললেন, “টেনি মাই সান, তুমি কি ফেসবুক ইউজ কর?”
টেনিদা একটু থতমত খেয়ে বলল, “ইয়েস স্যার!”
জমিদার বললেন, “কিম্ভুতকিমাকার অস্থিরচিত্ত্ব আবেগতাড়িত টেনি এইটা তোমার আই ডি?”
টেনিদা বলল, “ইয়েস স্যার!”
কাজী বললেন, “তোমার প্রোফাইল পিকচারে শাকিব খানের বুকখোলা ছবি দেয়া?”
টেনিদা বলল, “ইয়েস স্যার!”
তিন ভদ্রলোক তাদের মেয়ের সাথে কিছুক্ষণ ফিসফাস করলেন।
অতঃপর কাজী বললেন, “এইটা কি সত্য তুমি ফেসবুকে অসংখ্য মেয়েকে বোন বানিয়েছ?”
টেনিদা গর্বের সাথেই যেন ঘোষণা করল, “সত্য স্যার!”
সাথে সাথে আমরা তিনজন টাশকি খেয়ে গেলাম! ও, এই তাহলে কাহিনী! বোন মানে ফেসবুক বোন?!?!
জমিদার বললেন, “এইটা কি সত্য যে তোমার বোনদের খোঁজখবর না নিলে তোমার ঘুম হয় না?”
টেনিদা বলল, “ইয়েস স্যার! অ্যাবছলিউটলি স্যার! বোনদের খোঁজ ভাই নেবে না তো কে নেবে স্যার?!”
চৌধুরী বললেন, “এইটা কি সত্য তুমি তোমার ফেসবুক বোনদের সাথে মোবাইল নাম্বারও আদান প্রদান করেছ?”
এবার টেনিদা হকচকিয়ে গেল। বলল, “ইয়ে মানে...বুঝলেন না স্যার? লাগে তো স্যার। নাম্বার না থাকলে আমার এতগুলা বোনের খবরাখবর কিভাবে নিব স্যার? সবসময় তো আর বাসায় নেট থাকে না!”
তিন ভদ্রলোক পরস্পরের সাথে চোখ চাওয়াচাওয়ি করলেন। একটু পরেই দেখলাম, তারা “তবে রে, তবে রে” বলতে বলতে প্রায় উড়ে এসে টেনিদার উপর পড়লেন!
তারপর কি হল, তার বর্ণনা দিতে টেনিদা নিষেধ করেছিল। তবু যদি পাঠকরা জানতে চান, তাই গোপনে আপনাদের বলেই দিচ্ছি।
শশশশ, কাউকে বলবেন না যেন!
কাজী টেনিদার চুলের মুঠি ধরে বললেন, “তবে রে হারামজাদা! তলে তলে এতদূর? আমার মেয়েকে বোন বানিয়ে তুই পুরা হিস্টোলজি প্র্যাক্টিকাল খাতা ওকে দিয়ে আঁকিয়ে নিয়েছিস!! এত্ত বড় সাহস তোর...”
জমিদার তার দুই কান সজোরে মলতে মলতে বললেন, “এত্ত বড় সাহস তোর?? আমার মেয়েকে ফুসলিয়ে ফাঁসলিয়ে তুই ওর কাছ থেকে ফুচকা খেয়েছিস? হারামজাদা আজকে তোর...”
চৌধুরী ঠাস করে টেনিদাকে একটা চড় মেরে বললেন, “আজ তোর একদিন কি আমার একদিন! তোর কত্ত বড় সাহস তুই আমার মেয়েকে প্রথমে বোন বানিয়েছিস, তারপর বলেছিস বোন না হয়ে শালীর বোন হইতে কোন সমস্যা আছে নাকি...আজকে তোরে আমি...”
মারামারি শেষে টেনিদাকে অর্ধমৃত অবস্থায় ফেলে রেখে তিন ভদ্রলোক তাদের মেয়েদের নিয়ে চলে গেলেন। আমরা ভাবলাম, নাহ, উচিৎ শিক্ষা হয়েছে টেনিদার। বোন বানিয়ে তার সাথে আবার ফাইজলামি? বোন থেকে শালীর বোন? ছি ছি! এ পাপকথা শোনার আগে আমার মরণ হল না কেন?
টেনিদাকে ধরে ধরে বাসায় নিয়ে গেলাম আমরা তিনজন। একটু সুস্থ হবার পর আমি বললাম, “টেনিদা, ঐদিন কে যেন বলল, কোন ছেলে কোন মেয়ের কাছে পাত্তা না পেলে তাকে বোন বানাইয়া লয়! এটা কি সত্যি?”
টেনিদা দেখি কোন কথা বলে না। গভীর মনোযোগ দিয়ে আকাশ দেখে।
এত মনোযোগ টেনিদাকে আগে কখনও পড়াতেও দিতে দেখি নি।
(সমাপ্ত)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।