আমি কখনো যায়নি জলে,কখনো ভাসিনি নীলে,কখনো রাখিনি চোখ ডানা মেলা গাঙচিলে চা - আমাদের অতি প্রিয় পানীয়। সকালে নাস্তার টেবিল থেকে শুরু হয়ে গল্প আড্ডা অথবা গভীর রতের রিলাক্সেশনেও চায়ের জুরি নেই। আমরা বাংগালীরা মূলত দুধ চা খেয়ে থাকি কেউ কাউ রং চা ও খান। কিন্তু জানেন কি আসলে চা কত প্রকার কত বর্ন গন্ধে এর সমাহার আসুন না ঘুরে আসি চা এর জগতে-
আসলে সবগুলো চা এর নামই ইংরেজীতে আর তাই বাংলা যেটা করলাম তা আমার নিজের দেয়া -বোঝার জন্য ইংরেজী নাম টাও দেয়া হোল-
হোয়াইট টি বা শুভ্র চা-এই নামকরনের পিছনে কারন হলো এই চা তে চা গাছের পাতার ভিতরের রুপালী সাদা চুলের মত একটা অংশ আলাদা করে হাল্কা রোদে বা বাতাসে শুকিয়ে চা পাতা বানানো হয় । এই চা এর জন্ম চায়নার ফুজিয়ানে।
আসলে পাতা পুরোপুরি প্রস্ফুটিত হবার আগেই তা সরিয়ে ফেলা হয় । আর অল্প প্রসেসিং এর কারনে তা থাকে একদম প্রাকৃতিক । দূর্লভ এই চা এর নং হয় হালকা সোনালী। এটা তে এন্টি অক্সিডেন্টের পরিমান থাকে সবচাইতে বেশী। শুভ্র চা এর মধ্যে যেটা হোয়াইট পিওনি সেটার চাষ হয় মাত্র কয়েক সপ্তাহ।
এর পর আসি ব্লাক টি বা কৃষ্ণ চা- ব্লাক টি ,হোয়াইট টি এর সম্পূর্ন বিপরীত। এটি সবচাইতে বেশী অক্সিডাইজড করা হয়। এতে ক্যাফেইনের পরিমান থাকে বেশী। কড়া স্বাদ আর গন্ধের জন্যই এটা জনপ্রিয়। অসম্ভব রিফ্রেশিং এক এনার্জী ড্রিংকএই ব্লাক টি এর একটা অভিজাত রুপ হলো ইংলিশ ব্রেকফাস্ট ।
সারা দিনের এনার্জি বুস্ট আপের জন্য-শ্রীলংকা ও ভারতের কিছু রাজ্যের চায়ের সংমিশ্রনে তৈরী হয় এই চা
ওলং টি -ওলং কথাটির অর্থ হচ্ছে ব্লাক ড্রাগন- আসলে চা এর পাতার অক্সিডেশন বা ফার্মেন্টেশনের উপর চা এর রং বা গন্ধ পরিবর্তন হয় । পুরোপুরি ফারমেন্ট ও অক্সিডাইজড করা হয় ব্লাক টি । গ্রীন টি একেবারেই ফারমেন্ট করা হয় না কিন্ত এই ব্লাক ড্রাগন কে মাঝামাঝি অক্সোডাইজ বা ফার্মেন্ট করা হয়। এতে চা পাতার ফার্মেন্টেশন এর রং পরিবর্তনের আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়। আর তাই গ্রিন টি এর চাইতে কড়া স্বাদ থাকে কিন্তু ব্লাক টি এর চাইতে কম ক্যাফেইন থাকে ।
মূলত চা টি মেদ কমাতে সাহায্য করে।
রুইবস চা এটা দক্ষিন আফ্রিকার ক্যাডার বার্গ রাজ্যের চা এ চা টি তে কোন ক্যাফেইন থাকে না । মাথা ব্যাথায় অব্যার্থ এই চা দেখতেও সুন্দর।
চা টি - মজার ব্যাপার না? হ্যা আমরা যেটাকে চা বলে চিনি সেটাই এটা দুধ চা । ইংরেজরা এর নাম দিয়েছে চায়ে টি।
যাই হোক এই দুধ চা সম্পর্কে আর কে বলবো দুধ ,গরম মশলা তেজপাতে ,লবংগ বিভিন্ন কিছু দিয়ে বিভিন্ন ভাবে তৈরী হয় এই চা । খেতে সুস্বাদু ও স্বাস্হ্যকর ।
গ্রিন টি বা সবুজ চা-চা এর জগতে সবচাইতে স্বাস্হ্য সম্মত উপকারী চা। চা পাতা ফারমেন্ট করা ছাড়াই চা বানানোর জন্য এতে প্রাকৃতিক ভিটামিন বি ১২৬ ও ভিটামিন ডি থাকে। আর সব ধরনের প্রাকৃতিক মিনারেল যেমন আয়রন,সোডিয়াম ও পটাশিয়াম থাকে।
খুবই রিফ্রেশিং সবুজ চা আইস করে খেতে পারলে আরও দারুন লাগ.রাতে ঘুমানোর আগে রিল্যাক্স হয়ে হাল্কা শাওয়ার নিয়ে খেয়েই দেখুন না এক কাপ সবুজ চা। দেখুন কি সুন্দর ঘুম আসে।
তাছাড়াও আরো আছে- কমলা চা ,আপেল চা লেবু চা, রাসবেরী চা ,পুদিনা চা ,
অভিজাতের মধ্যে আছে-গোল্ডেন মুন চা ,বা প্রিমিয়াম ইউনান ব্লাক টি যা রানী এলিজাবেথের প্রিয় চা। সোনালী পাতার এই চা হাতে তৈরী করা হয় প্রতিটি পাতা থাকে সমান ও আলাদা।
চা এক অনন্য পানীয় এতে কোন দ্বিমত থাকার কোন অবকাশ নেই তবে এই চা য়ের অনেক অনেক স্বাদের সাথে আমরা খুব একটা পরিচিত নই বা বলতে পারেন চা কে আমরা উপভোগ করতেই শিখিনি যে সব ফ্লেভার বললাম তার প্রতিটি আমাদের লিপটন বা কে কে তৈরী করে যা রপ্তানী করা হয় দেশে বাজার নেই বললেই চলে।
টেস্ট করতে চাইলে আপনার পছন্দ মত টেস্টার প্যাক কিনে দেখুন কোনটা ভালো লাগে আর কোনটা মিশে যায় আপনার মুড বা ব্যাক্তিত্বের সাথে
পৃথিবীর সবচাইতে ভলো চা ম্যারিয়্যাজ ফেরেজের চা । আমার ব্লগে আপনাকে সে চা দিয়েই রইল স্বাগতম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।