আসসালামু আলায়কুম
বিশ শতকে মুসলমানদের প্রথম পুনর্জাগরণে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, যাদের চেষ্টা প্রচেষ্টায় ইসলামের ডিস্কোর্স গুলো আধুনিক মনস্কদের সামনে গ্রহনযোগ্য হয়ে উঠেছে, সাইয়েদ কুতুব এবং তার পরিবার ছিলো তাদের অন্যতম। কুতুব পরিবারের এই সদস্যরা সাধারণ দুনিয়াবী দৃষ্টিতে ছিল বোকা প্রকৃতির, কিন্তু আখিরাতের জন্য তারা ছিলেন অগ্রসেনানি। সাধারণদের দৃষ্টিতে এরা ছিলেন দৃশ্যতঃ তাদেরি একজন, কিন্ত ইসলাম বিরোধীদের দৃষ্টিতে এরা ছিলো মারাত্মক হুমকি। তবে যাদের অন্তরে ঈমানের বিকাশ আছে, তারা এই পরিবারকে ভালোবাসতে পারা সৌভাগ্যের নমূনা মনে করে। আজ সেই পরিবারের সর্বশেষ মানুষ হামিদা কুতুব আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
তিনি প্যারিসে ইন্তেকাল করেছেন গত ১৩ই জুলাই, ২০১২ মুতাবিক ২৩শে শাবান ১৪৩৩ শুক্রবার জুমার নামাজের আযান শুনতে শুনতে, আর ১৮ই জুলাই তার জানাযা নামাজান্তে পাঠানো হয় মিশরে। সেখানে আবু বাকর সিদ্দিক মাসজিদে দ্বিতীয়বার জানাযা হয়। এরপর কায়রোতেই তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিলো ৭৫ বছর।
সামগ্রিকভাবে কয়েকটি পরিবার মিশরে ইসলামি আন্দোলনে বিশাল অবদান রেখেছেন।
আর এই অবদান রাখতে যেয়ে ত্যাগের যে সুমহান আদর্শ তারা রেখেছেন তার তুলনা আমরা সাহাবাগণের সময়ে ইয়াসির (রা) পরিবারে, কিংবা হুমনা বিনতে জাহাশের (রা) পরিবারে দেখতে পেয়েছি। আমরা দেখেছি সাইয়েদ কুতুব এবং তার ভাগ্নে রিফআত বাকার কে কিভাবে শহীদ করা হয়। মুহাম্মাদ কুতুবকে কিভাবে জেলের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে অত্যাচার করে করে অবশেষে দেশান্তরী হতে বাধ্য করা হয় কিভাবে। আমরা শুনেছি আমীনা কুতুবের তিলে তিলে শেষ হওয়ার কান্না, দেখেছি তার স্বামী কামালকে নির্যাতনের পর নির্যাতন চালায়ে কিভাবে শেষতক শাহাদাতের পেয়ালা পান করানো হয়। এগুলো পড়লে এবং শুনলে মনে হবে সাহাবাগণের ত্যাগ তীতীক্ষার পদ ধরে চলা কাফেলায় এরা ছিলো বিশ শতকের অকুতোভয় রাহি মুসাফির।
জন্ম এবং শিক্ষাঃ
তিনি ১৯৩৭ এ আসয়ূত এর মুশা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। বাবার নাম আলহাজ্জ কুতুব ইব্রাহীম। পাঁচ ভাইবোনের তিনি ছিলেন ছোট। এই পরিবারের সন্তানদের নিয়ে সাইয়েদ কুতুবের লেখা 'আতয়াফ আরবাআহ' বইয়ে হামিদা সম্পর্কে বলেছেনঃ "ছোট্ট এই বাড়ন্ত শিশুটা বড় অনুভূতি প্রবন। অজানা ছায়ার উপর তার খুব ভয়......"
সাইয়েদ কুতুব কায়রোতে পড়া অবস্থায় আব্বা মারা যান, ফলে বড় এই সংসারের হাল তাকেই ধরতে হয়।
তিনি সিদ্ধান্ত নেন সবাইকে নিজের কাছে রেখে মানুষ করে বাবার অসমাপ্ত কাজ পূর্ণ করার দ্বায়িত্ব নেন। আমার মনে হয় এই জন্যেই সাইয়েদের জীবনে আর বিয়ে করা হয়নি।
হামিদাকে মানুষ করার দ্বায়িত্ব নিজ হাতে নিয়ে সাইয়েদ তাদের উপর ফেলেছিলেন দারুন প্রভাব। ফলে সব ভাই বোন গুলোই হয়ে ওঠেন একেকজন সাহিত্যিক, কবি এবং লেখক। তাদের লেখা পড়ার ধরণ ছিলো কিছুটা ব্যতিক্রম।
সাইয়েদ বাসায় ফেরার পর চার ভাইবোন একসাথে বসে যেতেন। একেকটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেন। উম্মাহাতুল কুতুব বা জ্ঞানের মৌলিক বই গুলো তারা বাড়িতেই পড়াশুনা করেন। সাইয়েদের গ্রাজুয়েশান শেষ করতে না করতেই ১৯৪০ সনে আম্মা ইন্তেকাল করেন। এরপর সাইয়েদ কুতুবকে মা এবং বাবা দুইজনের ভূমিকা পালন করতে হয়, ফলে ছোট ভাইবোনদের পেছনে আরো বেশি সময় দিতে লাগলেন।
সাইয়েদ কুতুব ছিলেন ক্ষণজন্মা এমন একজন ব্যক্তিত্ব যার বহুমূখী প্রতিভা দ্বারা ইসলাম দারুন ভাবে উপকৃত হয়েছে। একজন মুরব্বি হিসাবে সন্তান লালন পালনে তার চিন্তাধারা বা কর্মকান্ড অনুসরনীয়। ইন্তেকালের আগে হামিদা কুতুব তার জীবন ও পরিবার নিয়ে প্রায় ৬ঘন্টার একটা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। ইউ টিউবের কল্যানে যে কেও সেটা দেখতে পারেন।
http://www.youtube.com/watch?v=HeBHwygDzV4
Click This Link
Click This Link
http://www.youtube.com/watch?v=lyZLs3AVz_A
এখানে তার ও তার পরিবারে বিভিন্ন দিক দারুন বিস্তারিত ভাবে চলে এসেছে।
এগুলো শোনার পর আমার কাছে মনে হয়েছে আল্লাহ তায়ালা নিজ ইচ্ছায় বিশ শতকে এমন এক পরিবারকে আমাদের জন্য তৈরি করে দিয়েছিলেন, সবাই আমরা সেই মডেলকে মানতে দ্বিধাণ্বিত হইনা।
সাইয়েদ তার ভাই বোনগুলোকে মানুষ করে তুলেছেন আপন করে। তিনি সব সময় মনে করতেন পরিবারের মুরব্বি তিনি, ফলে আল্লাহর কাছে এদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ তাকেই করা হবে। হামীদা কুতুব বলেনঃ " ভাই সব ব্যাপারেই দ্বায়িত্ব গ্রহন করতেন। কথা বলতেন মুরব্বি চালে।
হাসতেন কম, তবে দয়ার সাগর ছিলেন। সব সময় আমাদের সাথে চিন্তা শেয়ার করতেন, আমাদের ভুল-ভাল হলে সেটা বুঝার চেষ্টা করতেন। বিভিন্ন বিষয়ে খারাপ কিছু আচরিত হলে ভয় দেখাতেন, তবে কোনদিন গায়ে হাত তুলেন নি। জীবনের বিভিন্ন ডিসেশন নিতে সাহায্য করতেন, চাপায়ে দিতেন না। যে কোন কাজ করতে চাইলে সমস্ত অপশন গুলো সামনে তুলে ধরে, আমাদের উপর সিদ্ধান্ত গ্রহনের দায়ভার দিয়ে দিতেন।
"
হামীদার বয়স তখন ৯ বছর। প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রি তিনি। শিক্ষা সফরে যাবার তাগাদা আসলো ক্লাশ টিচারের মাধ্যমে। যেতে হবে সুয়েজ খালের ওখানে কয়েকদিনের জন্য। ক্যাম্পিং হবে।
ছেলে মেয়েরা এক সাথে যাবে। হামীদার খুব শখ এতে অংশগ্রহন করবে, কিন্তু বাসার সবার মত পাওয়া গেলোনা। সাইয়েদ বাসায় ফিরে এলেন অনেক রাতে। তখনো হামীদার চোখ নির্ঘুম। ভাইকে খাইয়ে দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরলো।
ইস্কুলের শিক্ষা সফরের কথা আবদারের ভাষায় বলে তাকালো ভায়ের মুখের দিকে। সাইয়েদ বললেনঃ "এই ধরণের প্রোগ্রামে গেলে চোখ খোলে, অনেক জানা যায়। সামাজিকতার সবক নেয়া যায়। ইস্কুলের শিক্ষকদের খুব কাছাকাছি আসা যায়। কিন্তু মানুষের চরিত্র গেছে খারাপ হয়ে।
ওখানে গেলে দেখবা কোমলমতি ছেলেদের ও কেমন চারিত্রিক অবক্ষয়। " হামীদা এবার শক্ত গলায় বললোঃ 'সবার সাথে আমাকে তুলনা করলে, ভাইয়া। দেখবে আমি সব সময় ভালো থাকবো। ' সাইয়েদ বোনের কথায় রাজি হলেন। কানে কানে বললেন, টাকা যা লাগে, তার চেয়ে কিছু বেশী নিয়ে যেয়ো, আর হাঁ, পরে যেন আমার বুকে মুখ রেখে কেঁদোনা।
হামীদা শিক্ষা সফর থেকে ফিরে এলেন খুব ম্রিয়মান হয়ে। মন তার অসহ্য রকমের খারাপ। সাইয়েদের পাশে যেয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলো। বললোঃ 'ভাইয়া, জীবনেও আর তোমার অপছন্দের পথে পা মাড়াবোনা। আসলে গোটা মিশরের চরিত্র গেছে খারাপ হয়ে।
আর শিক্ষকরা হলো সেই খারাপের অনলে ইন্ধনদাতা। '
হামীদা তার স্মৃতিচারণায় বলেছেনঃ ' ভাইয়া কখনো আদেশের স্বরে কথা বলতেন না। আমি জীবনে কোনদিন 'এইটা কর' 'ঐটা করিসনা' এই ধরণের আদেশ নিষেধ তার কাছ থেকে পাইনি। ফলে তার পথ ধরে আমরা সব ভাই বোন চলতে আনন্দ বোধ করতাম। পুরো স্বাধীনতা ছিলো আমাদের, কিন্তু ভাইয়ের আদরের মাঝে থাকতাম সম্পূর্ণ বন্দি হয়ে।
আজ এই পড়ন্ত বেলায় ঐটার জন্য ভাইয়াকে খুব মনে পড়ে। '
প্রাইমারিতে থাকা অবস্থায় তার মেধার পরিচয় পাওয়া যেতে শুরু করে। এ সময় থেকেই তার পড়া শুনার প্রতি মোহ তৈরি হয়। স্কুলে নিজের ক্লাশের বাইরে বড়দের বই পড়া শুরু করতো হামীদা। ছোট্ট লাইব্রেরিতে নতুন নতুন বই আনার জন্য হেড টিচারকে আবদার করতো।
এরপর সেকেন্ডারি থেকেই শুরু হয় অন্য রকম জীবন। পড়ালেখার প্রতি তার ঝোঁক এত বেড়ে গেলো যে বাইরের লাইব্রেরিতে তার যাতায়াত দারুন ভাবে বেড়ে গেল। সে সময়ের স্মৃতি চারণ করতে যেয়ে হামীদা কুতুব বলেছেনঃ ' আমি খুব পড়তাম। বাসার পাশে লাইব্রেরি গুলোতে যেয়ে সমস্ত বই পড়ে ফেলতাম। তবে সাহিত্য এবং ইতিহাসের উপর বই পড়তে খুব ভালো লাগতো'।
চৌদ্দ বছরে পা দিয়েই লেখা লেখি শুরু করেন তিনি। প্রথমে কবিতা তার পর শুরু হলো গদ্য লেখা। বিশেষতঃ গল্প লেখায় দেখাতে লাগলেন পূর্ণ সফলতা। তার জীবনের প্রথম লেখা 'লা ইলাহা ইল্লাহ' প্রকাশিত হয় 'আলইখওয়ান' নামক আলইখওয়ান আল মুসলিমুনের এর মুখপাত্র সাপ্তাহিকে। এতে তিনি কালিমাহ তাইয়েবার প্রভাব ব্যক্তি জীবনে কিভাবে পড়া উচিত তার আলোচনা করেছেন।
এর পর 'আলমুসলিমূনের' পাতায় শোভা পেতে থাকলো তার গল্প, কবিতা এবং প্রবন্ধ। এভাবে তার লেখাপড়ার পাশাপাশি সাহিত্য চর্চা চলতে থাকলো সমান বেগে।
দাওয়াতী যিন্দেগীঃ
সাইয়েদ কুতুব আমেরিকা যান ১৯৪৮ সনে। সেখান যেয়েই তিনি দেখতে পান পাশ্চত্য সভ্যতার গতিপ্রকৃতি। এবং এখান থেকেই ইসলামের উপর তার আস্থা ভীষণ ভাবে বেড়ে যায়।
হাসান আলবান্নার শাহাদাত বরণের সময় তিনি ছিলেন আমেরিকায়। ইমামের শাহাদাতে আমেরিকানদের উল্লম্ফ আস্ফালন এবং ক্রুর হাসি দেখে তিনি মনে অনেক ব্যাথা পেয়েছিলেন। এভাবেই তিনি ইখওয়ানের ব্যাপারে জানতে উদগ্রীব হলেন। ১৯৫০ এ মিশরে ফিরে ইখওয়ানের সাথেই প্রথম যোগাযোগ করলেন চাকুরিতে যোগদানের আগেই। ইখওয়ান ও তার মত সৃজনশীল ব্যক্তিত্বকে নিলো বুকে টেনে।
প্রথম দিনেই তার হাতে ইখওয়ানের পত্রিকা 'আলইখওয়ান' পরিচালনার দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হলো। এখান থেকেই তার জীবনে ইসলামের আলো বিভাসিত হলো; তার হাতেই ইসলামি আন্দোলন আপন গতিতে ঢুকে পড়লো কুতুব পরিবারে। দুই বোন যোগ দিল ইখওয়ানের মহিলা গ্রুপে। ছাত্রজীবন, সাহিত্য জীবন এবং সেই সাথে দাওয়াতি জীবন চলতে থাকলো এক অদ্ভুত নিয়মানুবর্তিতায়।
১৯৫৪ সনে, যে সময় হামীদা কুতুব কেবল 'এ' লেভেলে উঠেছেন, ঘটে গেলো মিশরের ইসলামি আন্দোলনের আরেক ভূমিকম্প।
আলেকজান্দ্রিয়ায় আলমুনশিয়া মাঠে সে সময়ের শাসক, জামাল আব্দুননাসের কে হত্যার জন্য ইখওয়ানের কথিত গুপ্ত বাহিনির একজন গুলি করে। এই ক'দিন আগেই জানা গেল এই গুলিটা ইখোয়ান কে শেষ করার জন্য করানো হয়েছিলো এবং এর পেছনে ছিলো সি আই এ এবং মোসাদের সার্বিক সহযোগিতা। যাই হোক, এই ঘটনায় একক ভাবে ইখওয়ান কে দায়ী করে এর ছয়জন নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারা হয়। হাজার হাজার নেতা কর্মিকে অত্যাচারে অত্যাচারে জর্জরিত করা হয় জেল হাজতে। সাইয়েদ কুতুবকেও কারাবাসের অর্ডার হয় ১৫ বছর।
হামীদা কুতুব ভায়ের কারাবাসের পর সংগঠনে খুব তৎপর হয়ে ওঠেন। এই সময় সংগঠনের মহিলা বিভাগের দ্বায়িত্ব পালন কারিরা ছিলেন এই শতকের ইতিহাস সৃষ্টিকারি কিছু মহিলা; তার বোন আমীনা কুতুব, যায়নাব গাযযালী, লাতীফা আলসূলী, নাঈমা খাত্তাব, খালিদা হুদায়বি ছিলেন তাদের অন্যতম। হামীদা তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে লাগলেন। তারা বিভিন্ন ভাবে চাঁদা কালেকশান করে, জেলের প্রকোষ্ঠে মাজলুম নেতাদের বাসায় বাসায় খাবার পৌঁছানো, তাদের খোঁজ খবর রাখা, তাদের খবরাখবর কারাবাসিদের কাছে পৌঁছানো ইত্যাকার জটিল কাজের আঞ্জাম দিতেন তিনি।
১৯৫৭ সনে জেলে থাকা সত্বেও সাইয়েদ কুতুবকে ইখওয়ানের সাংগঠনিক কাঠামো ঢেলে সাজানোর দ্বায়িত্ব দেয়া হয়।
তিনি জেল থেকেই প্রত্যেকদিন সংগঠনের খোঁজ খবর নিতেন, এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশাদি পাঠাতেন সাক্ষাতের জন্য যাওয়া বোন হামিদার মাধ্যমে। এই সময়েই সাইয়েদ কুতুব 'ইসলামি সমাজ বিপ্লবের ধারা' গ্রন্থ রচনা করেন এবং হামীদার মাধ্যমে তা মিশরে ঘরে ঘরে পড়ার ব্যবস্থা করেন। এভাবে চলতে থাকা সংগঠনের গতি বৃদ্ধি পেতে থাকে দিন দিন। সাংগঠনিক এই ধারার বৈশিষ্ঠ ছিলো যুগান্তকারি। সাইয়েদ মনে করতেন ইসলামের আক্বীদাহ ও আমল হতে হবে যুক্তিবাদিতার উপর ভিত্তি করে।
যে সমাজে ইসলামি আইন বলবৎ থাকবেনা, মুসলিম শাসিত হলেও সে সমাজকে ইসলামি সমাজ বলা যাবেনা, বরং তা হলো জাহিলিয়াত। এর মূল উৎপাটন ই হবে ইসলামি আন্দোলনের একমাত্র কর্মপন্থা। তা করতে হলে মহানবীর (সা) মক্কী জীবনের তের বছর এর উপর ভিত্তি করে তিনিও তের বছর মেয়াদি কর্মসূচি হাতে নেন। যার মূল কথা ছিলো, ইখওয়ানের প্রতিটি কর্মিকে একেকজন সাহাবির চরিত্রে গড়ে উঠে, তের বছর পর মাদানী জীবনে অগ্রসর হতে হবে। এরপর গোপনে দেশে একটা সমীক্ষা চালানো হবে।
৭৫% মানুষ ইসলাম চাইলে তখন ইসলামি রাস্ট্র গঠনের ডাক দিতে হবে। ' এটা ছিলো মিশর কে ইসলামি রাস্ট্র বানানোর বিরাট পরিকল্পনা, যা ছিল জামাল আব্দুন নাসেরের জন্য হবে মরণ ঘন্টা।
কিন্তু অবশেষে হামীদা কুতুব ধরা পড়ে যান এক সময়, ফাঁস হয়ে যায় সাইয়েদ কুতুবের চিন্তার আলোকে সমাজ বিপ্লবের দুর্ণিবার ইশ্তেহার। ধরা পড়ার দিনে যে চিরকুটটা সাইয়েদ কুতুব হামীদার কাছে দিয়েছিলেন তা পরে উদ্ধার হয়। তিনি লিখেছিলেনঃ "আমাদের কথা গুলো মৃত হয়ে থাকবে, পড়ে থাকবে মোমের তৈরি নববধুর মত নিরব, নিস্পন্দ......... আমরা মরে যাওয়ার সাথে সাথে ওই গুলো জেগে উঠবেই এবং জীবন্তদের দেহে সেগুলো আগুন জ্বালাবেই...... হৃদয়ের গভীর থেকে যে বাণী ছড়িয়ে পড়ে, জীবন্তদের মাঝে তা জীবিতই থেকে যায়......... "
চলবে ইনশাআল্লাহ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।