আমার খুব কষ্ট হয়, যখন RAJAKAR বানানটা বাংলা বর্ণমালায় লিখা হয়। এটা বর্ণমালার জন্য অপমান। আগে বিখ্যাত মানুষদেরই কেবল সংকলন বের হতো। কারণ তখন ঢোলের মালিক থাকতেন বড় বড় সব প্রকাশকরা। এখন যুগ পাল্টেছে, আন্তর্জালের বদৌলতে ঢোল এখন আমাদের সবার টেবিলে কিংবা কোলে।
চাইলেই বাজানো যায়। সেই স্রোতে আমিও গা ভাসাই আরকি! বহু বছর যাবৎ কবিতা লেখার চেষ্টা করছি। এজন্য সামান্য পড়াশোনাও করতে হয়েছে। লিখতে গিয়ে বুঝতে পারলাম, শুধু কবিতা পড়ে কবিতা লেখাটা কঠিন। এজন্য কিছু ন্যাচারাল মেরিট থাকতে হয়।
যাই হোক, আশায় আছি-এরকম আবোলতাবোল লিখতে লিখতে একদিন একটা কবিতা আমি লিখতে পারবো।
আমার এসব অখাদ্য লেখা পাঠকদের সামনে আনার লোভও সামলাতে পারছিনা, আবার পাঠকদের কবিতা পাঠাধিকার হরণের দায়টাও এড়াতে পারছিনা।
অবশেষে লোভ জয়যুক্ত হয়েছে।
কথক অমনিবাস-১
কথক অমনিবাস-২
১৭. ছেলেটির জন্য এলিজিঃ
দেশপ্রেমের কোন সংজ্ঞা আমি এখনো দিতে পারিনি। খুঁজেও পাইনি কোথাও।
তবে আমার বন্ধু রানা-র একটা কথা বেশ মনে ধরেছে। তার মতে, যে ছেলেটি বিনা লাভের আশায় রাজশাহী থেকে থেকে শুধুমাত্র একব্যাগ রক্ত দেবার জন্য গাঁটের পয়সা খরচ করে ঢাকায় আসে, তার চেয়ে বড় দেশপ্রেমিক আর কি হতে পারে?
ছেলেটির জন্য এলিজি
ছোট্ট একটি প্রেমের কবিতা কিংবা
বারুদ।
একদিন মুঠোয় নিয়ে ছোট্ট মেয়েটি
চিৎকার করে কেঁদে ওঠার বদলে; গল্প বলতে শুরু করবে।
একদিন আমরাও ঘাসফড়িং ছিলাম
ছিলাম নতজানু সময় সচল;
যার
শুরু কবিতায়
আর শেষ-
বিদ্রোহ আর বুলেটে।
সেই বুলেটে বারুদের বদলে ছিলো দেশপ্রেম
সেই বুলেটে খোসার বদলে ছিলো ছোট্ট আশ্বাস;
'ভালো থেকো'।
মেয়েটি গোপনে কাঁদে।
বাউন্ডুলে ছেলেটির জন্য নয়-
'ভালো থাকা'-র জন্য।
সন্নিহিত কথাঃ
যে কেউ 'মেয়েটি' শব্দটার বদলে 'বাংলাদেশ' পড়ে দেখতে পারেন।
১৮. বাক্সবন্দীঃ
এই কবিতায় না বলেও অনেক কিছু বলে ফেলা যায়। মূল প্রসঙ্গ হচ্ছে, আমরা যার যার চরত্রে ঠিক মত অভিনয় করতে পারছি কিনা!
বাক্সবন্দী
একচিলতে আলো আসছে কোথাও থেকে।
অসাবধানে পুঁতে রাখা একটি পেরেক
ভীড়ের ভেতর স্ফীতবক্ষা কোন ধনকুবেরীর মত
নিঃসঙ্গ এবং যৌনাবেদনময়ী
ঠেঁসে আছে সিন্দবাদের ভূত-
চোখের পাপড়ি জুড়ে কেরোসিন কাঠের গুঁড়ো
সাজানো গাছের ভেতর মৃতপ্রায় ফুলের আহাজারি।
অতঃপর,
কায়াস্রোতহীন রক্তে
বাসা বেঁধেছে সত্যবাদী টিকটিকি;
মাছের মত চোখ মেলে
চোখের ভেতর একচিলতে আলো
আর
গাঢ় নীল ঠোঁট-চুম্বনের দূরত্বে
সার বেঁধে থাকা পেরেকের নিষেধাজ্ঞা-
পৃথিবীতে মানুষ থাকে।
কফিনে মানুষ থাকে।
১৯. 'এক' টুকরোঃ
টুকরো সময়ের অনুভূতি। কথায় ছোট, কিন্তু অনুভূতিতে মহীরূহ।
অথবা নিছকই শব্দরাজি!
‘এক’ টুকরো
১.
আমি কিন্তু বেশ সুখেই আছি।
জুতোর সুখতলার মত মসৃণ এবং
মহাভারতের ছন্দের মত ক্লাসিক সুখ;
অনবদ্য।
২.
প্রাচ্যের নদীগুলো খুব বহতা হয়
বিনম্র উচ্চারণে প্রবাদ ভাষণ-
আমি চুপ করে তোমার গলে পড়া দেখছিলাম।
৩.
ভেসে যাওয়া পাতার উপর
একটি শিশির ঘুমিয়ে আছে।
স্থির জল বিয়োগ চলমান জল;
একটি পাতাই তো!
৪.
তোমার ভয়ে লুকিয়েছিলাম কুমেরুর স্তম্ভে
পৃথিবী গিলে নিয়েছিলো তোমার প্রগাঢ় চুম্বন।
৫.
কফিনে পোতা হলো শেষ পেরেক।
অথচ অবলীলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে
ছয়শ' পঁয়তাল্লিশ কোটি মৃতদেহ!
৬.
আমরা সূর্যাস্ত দেখে কতনা বিমোহিত হই!
অথচ নিজেরা অস্ত যাচ্ছি প্রতি জন্মদিনের উৎসবে।
৭.
সাধ করে তার নাম দিয়েছি সাধ্য।
সে আমার সাধের উপপাদ্য!
৮.
অপরাধ করেছিলাম একদিনই
তোমাকে ছুঁয়ে দিয়ে।
বাকী জীবন সঙ্গমে তার প্রায়শ্চিত্ত করে যাচ্ছি।
৯.
পকেটে রাস্তা পুরে
হাঁটছি পথের হাত ধরে।
১০.
উড়ন্ত ঘুমের মত কিছু ঘুমন্ত স্বপ্ন
যায় দিনের বৃত্তে-
জেগে ওঠা হয়না;
স্বপ্নাতুর ঘুমেরা কেবল উড়তে থাকে।
১১.
অস্পৃশ্য সূর্যালোক,
তীক্ষ্ণ বর্ষা হেনে গুঁড়িয়ে দেয় সকল অন্ধকার।
এতো ক্ষমতা যার, একবার খোল দেখি
বন্ধ করা দুচোখ আমার!
১৯. 'দুই' টুকরোঃ
এখানেই শেষ নয়। টুকরো বাড়তে বাড়তে খান খান হবার সম্ভাবনা প্রবল।
আজকাল ভাবনারাও কেন জানি জিপ ফাইলে করে মাথায় আসছে।
‘দুই’ টুকরো
১.
মেঘ বললো আছি
ঝড় বললো আছি;
ঝুম বৃষ্টির জলের দোহাই-
তোমার কাছাকাছি।
২.
ভরদুপুরে
নদীর পারে
আমরা দুজন;
বিভক্ত স্রোত
নির্দ্বিধা ঠোঁট
জড়ানো মন।
জড়িয়ে থাকা
সময় টুকু
বাসছে ভালো;
গভীর চোখের
দৃষ্টিটাতেই
মন উড়ালো।
৩.
পারিজাত ফুলের সৌরভে
চুলে বিলি কাটা নকশা-
কে জানে!
মাকড়েরও বুঝি ভালোবাসতে ইচ্ছে হয়!
৪.
আমি যতবার কালপুরুষ হতে চেয়েছি,
তুমি কেবল ধ্রুবতারা হয়ে থেমে গেছো।
৫.
চোখে কেবল নালিশ জানিয়েছো,
মুখে দিগ্বিজয়ের হাসি
প্রকট উদাহরণ হয়ে যাবার আগেই
নিজেকে নিঃশেষ করেছো বারংবার।
৬.
সবটুকু শুষে নিয়েছি।
মধুক্ষরা,
পরের বসন্তে আসছো তো!
৭.
নীপবনে বৃষ্টির চাঞ্চল্য-
কখনই
তোমার হাতের চেয়ে নীপ সুন্দর নয়।
৮.
নিয়ন আলোয় পৃথিবীর রঙ ঝাপসা
পশরা সাজিয়ে বসে থাকো লাল-লাল রঙ,
পর্যটকের মন জুড়ে ব্যস্ততা-
শুভাগমনের সব পথ নির্জন।
৯.
বিভাস পেতে নিয়েছে মাদুরের রঙ
শকট বোঝাই প্রকট মুখোশে;
বৃথা যায় ঘুমের এক একটি পাতা।
১০.
আমার পথভ্রষ্ট হতেও আপত্তি নেই
পথের শেষ বাঁকটা যেন
তোমার দুয়ারেই সন্ধ্যে নামায়!
১১.
সহজিয়া প্রেম, অনুকূল আভিজাত্য
স্রোতের চেয়ে-
জটিলভাবে সরল আর কি হতে পারে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।