আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার বিদ্যালয়সমূহঃ ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুল

I am Bangladesh supporter আমি এক মহান ছাত্র। আমি মহান মহান বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করার সুযোগ পেয়েছি। তার মধ্যে সর্বশেষ হচ্ছে ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুল। আমার এক ফুফাতো ভাই, দুই খালাতো ভাই আর দুই দুলাভাই এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। চারজন ডাক্তার আর একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার হয়েছিলেন।

তাঁরা যে সময়ের ছাত্র ছিলেন, তখন এই বিদ্যালয়টি বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় ছিল। আমি ৬ নম্বর স্কুল শান্তিপুর হাই স্কুলে ভাল করার পর আমি আমার আম্মাকে বললাম ভাল স্কুলে পড়ব। আমার সেজ খালু এক সময় ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুলের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁরই দুই ছেলে এখান থেকে পড়ে পরে ডাক্তারি পড়েছিল। যাক ভর্তি পরীক্ষায় ভাল করে পার পেয়ে ক্লাস নাইনে এ-সেকশনে জায়গা পেলাম।

আমার পরিবার তখন উত্তর শাহজাহানপুরে থাকত। সেখান থেকে আজিমপুরে যেতে জান বেরিয়ে যেত। তবে একটাই সুবিধা ছিল, স্কুলের উল্টাপাড়ের সরকারী কলোনিতে আমার বড় ফুপুর বাসা ছিল। আমি ছোটবেলা থেকেই খুব কম বন্ধু ছিল। এখানে আমি অনেক সহপাঠী পেয়েছি।

প্রথম আসা যাক মোবারকের কথা। কিশোরগঞ্জের ছেলে। ক্লাসের অন্যতম মেধাবি ও জনপ্রিয় ছেলে। ও কেন জানি আমাকে পছন্দ করত। আজ আর তেমন যোগাযোগ নেই।

কিন্তু আমার দুঃসময় ওই আমার একমাত্র যোগাযোগকারী ছিল। এরপর আসা যাক, নাইমের কথা। ওর মতো মেধাবি ও শান্ত ছেলে আমি খুব কমই দেখেছি। রেজা ছিল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মেধাবি ছাত্র। শিবাশিস ছিল অন্যতম মেধাবি ছাত্র।

এদের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয়, ৩য় স্থান নিয়ে লড়াই চলতো। এরা দুজন ডাক্তার, দুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টারস্‌ করেছে। এছাড়া কিবরিয়া, রাকিব, পিক্লু, সাহ আলি, টুটুল,ওমর আরও নাম মনে থাকা অনেক সহপাঠী ছিল। স্যারদের মধ্যে শুধু জুনাইদ স্যার এর নাম মনে আছে। কারন, তিনি আমার জীবনে দেখা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক।

এই স্কুলের শিক্ষার মান ভালই ছিল। তবে কিছু শিক্ষক ক্লাসে ফাঁকি দিয়ে তাদের বাসায় পড়তে আমন্ত্রণ জানাতো । তবে আমি ওসব স্যারের আমন্ত্রণ গ্রহণ করিনি। আমি ইংরেজিতে কাঁচা ছিলাম তাই পর্যায়ক্রমে তিন শিক্ষকদের কাছে ইংরেজি পড়েছিলাম আর শেষ তিন মাস জুনাইদ স্যারের কাছে অংক শিখেছিলাম। এই বিদ্যালয়ে দুবছরের অনেক সৃতি রয়েছে।

অনেক কিছু ভুলে গেছি। মনে আছে একদিন দেরি করে যাওয়ার জন্য সহ প্রধান শিক্ষকের থাপ্পড় আর তার কারণে ভয়ে দুদিন পেট খারাপ। আজব নিয়মে প্রি-টেস্ট পরীক্ষা নেওয়ার কারণে ৮টি বিষয়ে খারাপ করা। আমরা মাঝে মধ্যে সবাই মিলে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ফুটবল কিংবা ক্রিকেট খেলা। আমার সবচে খারাপ লেগেছে, আমার স্কুলে একটি পাঠাগার ছিল অথচ আমি জানতাম না।

যাক, আমি আমার স্কুলের সুনাম বা বদনাম বলার জন্য এই ব্লগটি লেখিনি। আমি সালাম আলী আহসান ,ব্যাচ-১৯৯৬,গ্রুপ-সাইন্স, ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুল, আজিমপুর,ঢাকা। এটা আমার অন্যতম পরিচয়। লেখাটি শেষ করবো আমার জীবনে শ্রেষ্ঠ ঘটনা দিয়ে। এস এস সি রেজাল্ট বের হয়েছে।

আমি আর আম্মা গেছি রেজাল্ট আনতে। যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। মোমবাতি দিয়ে রেজাল্ট দেখছি। প্রথমে ৩য় বিভাগে খুজলাম। নাই।

২য় বিভাগে। নাই। ১ম বিভাগে। প্রথম বার খুজলাম নাই। দ্বিতীয় বারে পেয়ে গেলাম।

শুধু প্রথম বিভাগ পেয়েছি। আম্মাও কাঁদছে আমিও কাঁদছি। বাসায় এসে আব্বা ও আমার বোনকে বললাম। আব্বা বিশ্বাসই করলো না। আমাকে নিয়ে তার ঐতিহাসিক ভেস্পা করে স্কুলে গেল।

নিজে চোখে দেখে বিশ্বাস করলো। আজ আব্বা নেই। তবে সেদিন আমি আমার পরিবারকে যে আনন্দ দিয়েছিলাম তা আমি অন্তত ভুলবো না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.