সাবেক যোগাযোগ এবং বর্তমান তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগপত্র আজ বৃহস্পতিবার গৃহীত হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন ভূইঞা প্রথম আলো ডটকমকে এ তথ্য জানান।
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের ওপর বিশ্বব্যাংকের চাপ ছিল। তাই গত ২৩ জুলাই তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
ছুটিতে পাঠানো হয় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে।
তিনি সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের শর্ত পূরণ করতেই এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্রগুলো বলছে। বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি অব্যাহত রাখতে মন্ত্রীসহ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার নাম দিয়ে তাঁদের ছুটিতে পাঠানোর শর্ত দিয়েছিল। এই শর্তের কথা চিন্তা করেই নতুন করে আলোচনা শুরুর ক্ষেত্র তৈরির অংশ হিসেবে আবুল হোসেনকে সরে যেতে বলা হয়। সরকারের ভেতর থেকেও এ জন্য চাপ ছিল।
তবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব এখনো কাউকে দেওয়া হয়নি। কার্যবিধি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, গত ২২ জুলাই রাতে সৈয়দ আবুল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর আগে তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরে বিজ্ঞাপন দেন। সেখানেও পদত্যাগ করতে পারেন বলে ইঙ্গিত ছিল।
পদত্যাগ করা নিয়ে গত ২৩ জুলাই প্রশ্ন করা হলে আবুল হোসেন প্রথম আলো ডটকমকে বলেছিলেন, ‘পদ্মা সেতুর বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ অবস্থায় আমি সরকারি দায়িত্ব পালন করতে চাই না। আমার শুভাকাঙ্ক্ষী এবং আমি যাঁদের শ্রদ্ধা করি, তাঁরা বিভিন্ন সময় আমাকে বলেছেন, তদন্ত চলাকালে আমার মন্ত্রী পদে থাকা উচিত নয়। আমি সিদ্ধান্তটা নিয়েছি। কার্যকর ব্যবস্থাও নিয়ে ফেলেছি।
আমি দায়িত্বে থাকব না। ’
অর্থমন্ত্রী গত ২২ জুলাই সাংবাদিকদের বলেছিলেন, গোল্ডস্টেইনের (বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর) দেওয়া চার প্রস্তাবের মধ্যে চতুর্থটি মেনে নেওয়া একটু অসুবিধা ছিল। আমরা চেষ্টা করছি, এটাও কীভাবে সমাধান করা যায়। ’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তা-ই যদি হয়ে যায়, তাহলে শিগগিরই আমরা শুরু করতে পারি। ’ চতুর্থ শর্তটি ছিল তদন্ত চলাকালে সরকারি দায়িত্ব পালন থেকে সরকারি ব্যক্তি অর্থাত্ আমলা ও রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের ছুটি দেওয়া।
সরকারি সূত্রগুলো মনে করছে, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ও সাবেক সেতু সচিবের বিদায়ের ফলে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নতুন করে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
এর আগে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। এ সময় সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। গত জানুয়ারিতে তাঁকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি নামে একটি নতুন মন্ত্রণালয় করে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
সৈয়দ আবুল হোসেন আওয়ামী লীগ সরকারের দুই দফায় দুবার মন্ত্রী হয়েছিলেন।
দুবারই তাঁকে পদত্যাগ করতে হলো। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দুটি পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণের দায়ে তাঁর মন্ত্রিত্ব যায়। আর এবার গেল পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের কারণে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।