আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বপ্নটারে ছড়িয়ে যাই...

বাউন্ডুলে পরিব্রাজক ভেবেছিলাম কোন বস্তুনিষ্ঠ লেখা দিয়েই শুরু করবো, মাথায় হাজারো চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। কোনটা ছেড়ে যে কোনটা লিখি। লেখা শুরুর আগে ভেবেছিলাম কতই না সোজা, এখন রীতিমত হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছি ব্লগার হওয়া কত কঠিন। যতদূর দেখলাম সামুতে বেশকিছু কোয়ালিটি ব্লগার আছেন। সুতরাং, পড়াশুনো এবং বিশ্লেষণ না করে কিছু লিখলে অপমানকর কিছু চাঁছাছোলা মন্তব্য যে হজম করতেই হবে বলাই বাহুল্য।

চাপ টের পাচ্ছি। আসলে ব্লগটা এমন একটা জায়গা যেখানে আপনাকে সরাসরি পাঠকের রিঅ্যাকশন ফেস করতে হবে। সুতরাং, চাপে যদি আমার মতন আনকোরা ব্লগারের ত্রাহিমধুসূদন অবস্থা হয়, তাহলে খুব একটা দোষ দেয়া যাবে না। সহজ ভাষায় বলা যায় এমন কিছু দিয়েই শুরু হোক আমার যাত্রা। মানুষ মাত্রেই সুন্দরের পূজারী।

আমরা বাংলাদেশিরাও কিন্তু এর ব্যাতিক্রম নই। সাত-সকালে যখন বাসে চড়ে অফিস রওনা করি তখন রাস্তায় গাড়িঘোড়া বলার মতন তেমন কিছু থাকে না। ধোঁয়া-ধূলোর বালাই নেই। মনে হয় “বাহ, ঢাকা শহরটা কি পরিচ্ছন্ন দেখাচ্ছে”। বাঁয়ে রাস্তার পাশে তাকাই।

একচিলতে সবুজ ঘাস। মনে হয় এখানে সার বেধে সুপুরীগাছ থাকলে বেশ হত কিন্তু। খুব বেশী কি খরচ হতো? বোধহয় না। সামনে এগোলেই প্রতিদিনকার মতন ডোবাটা চোখে পড়বেই পড়বে। আবর্জনায় ভরাট হয়ে আছে।

সিটি কর্পোরেশন কিছুটা দুরেই দেয়ালে ঘেরা ডাস্টবিন তৈরী করে দিয়েছে। সেদিকে কারো ভ্রূক্ষেপ নেই। প্রথম প্রথম খানিকটা ব্যবহার হয়েছিলো বোঝা যায়, এখন ওটা কাকেদের সম্পত্তি। আহা! এলাকার লোকজন কি পারতো না ডোবাটাকে “স্বচ্ছ জলাধারে” পরিনত করতে? ঢাকার কটা এলাকায় এখন ডোবা দেখা যায়? সবই তো ভূমিদস্যুদের কবলে। বেশী কষ্ট কি হত? সবাই খানিকটা হেঁটে ডাস্টবিনে ময়লা ফেললেই হয়ে যেত।

ডোবাটা সামান্য একটু খরচ করে পরিষ্কার করে কাটিয়ে নিলে বেশ দেখাতো। চাই কি বেশকিছু জলপদ্মের ব্যবস্থাও করা যেত তাতে। ভাবা যায়? সবুজ ঘাসের পাড়, টলটলে স্বচ্ছ জল, তাতে ফুটে আছে জলপদ্ম। আমি স্বপ্ন দেখি, দেখতে দেখতে এগোই। সামনেই একটা লালরাস্তা পড়বে জানি।

কালের বিবর্তনে ইটগুলো ক্ষয়ে লালরঙটা মলিন হয়ে গেছে। তারওপর পড়েছে কাঁদার আস্তরণ। এখানে ওখানে নোংরা কাগজ পলথিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বীভৎস দৃশ্য। আচ্ছা, লোকগুলোর ভেতরে কি সৌন্দর্য্যবোধ একেবারেই নেই? রাস্তার দুপাশে কাঁদা।

ওখানে ঘাসের চাপড়া আর গোলাপের ঝাড় বসাতে কি অনেক খরচ হবে? আমাদের নিজেদের এলাকার সৌন্দর্য্য যদি আমরাই না ঠিক করি তাহলে কারা করবে? সিটি কর্পোরেশন? এলাকার কিশোর-যুবকেরা কি পারেনা একদিন সব্বাইমিলে বালতিভর্তি জল নিয়ে নেমে পড়তে? পলিথিন আর নোংরা কাগজগুলো সরিয়ে দিয়ে রাস্তাটার পুরনো চেহারা ফিরিয়ে আনতে? ইশ, লালরঙা একটা রাস্তা ধরে আমি হেঁটে যাচ্ছি। দুপাশে সবুজ ঘাস আর গোলাপের ঝাড়। ভাবতেই কি যে ভালো লাগছে। আমারতো মনে হয় সবাই-ই আমার মতন এভাবে স্বপ্ন দেখে, আর মনে মনে কল্পনার ফানুস উড়িয়ে চলে। আমিও স্বপ্ন দেখতে থাকি, দেখতেই থাকি।

জানি, হাজারো সমস্যা আসবে। নিজেদের সময় দেয়ার ব্যাপারটাও ধর্তব্য, তবুও আমরা কিন্তু কিছু হলেও পারি আমাদের দেশটাকে সাজাতে। যদি এই লেখা পড়ে আমার স্বপ্নটা আপনার মাঝেও সঞ্চারিত হয় তাহলে বলবো, কিছু না পারুন অন্তত একটা কাজ করুন। প্রতিজ্ঞা করুন আজ থেকে ফেলে দেয়া কাগজ (সেটা হোক লোকাল বাসের টিকিট, টিস্যু পেপার, বাজারের ফর্দ, কিংবা কোনো অপ্রয়োজনীয় রশিদ), বিস্কুট কিংবা চিপসের প্যাকেট, যে কোনো পলিথিনের ব্যাগ বা ফেলে দেবার মতন যে কোনকিছু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলবেন। হতে পারে আপনি রাস্তায় আছেন।

ফেলবার মতন জায়গা পাচ্ছেন না। ওটা হাতে রাখুন। নিশ্চয়ই আশে-পাশে ডাস্টবিন বা ফেলবার মতন জায়গা আছে। বয়ে নিয়ে আসার মতন হলে আমি সাধারণত বাসায় নিয়ে এসে ডাম্প করি। যদি আপনি পারেন তাহলে তো ভালোই।

না পারলেও নিজের পরিচ্ছনতা বোধ থেকে যেটা ভালো মনে হয় করুন। স্বপ্নটাকে ছড়িয়ে দিন সবার মাঝে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.