নিজের অস্তিত্ব আমাকে অনেক ভাবিয়ে তোলে। বিশাল এই পৃথিবীতে আমার মত একজন ক্ষুদ্র মানুষের কি কাজ তা আমাকে প্রতিনিয়ত ভাবিয়ে তোলে.. তাই সব সময় এই ভাবনায় ডুবে থাকি যে এখানে আমার কাজটা কি !!! এবারের ঈদ শপিং এর জন্য বাসা থেকে খুব বেশি টাকা দেয়নি। টাকার অঙ্কটা - ৩০০০/- যদিও আমাদের মত মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য অঙ্কটা খুব একটা ছোট না কিন্তু তারপরও বেশি বলতে পারছি না বর্তমান সময়ের দ্রব্য মূলের জন্য। যাইহোক চিন্তা করলাম যে এই টাকা দিয়ে নিউ মার্কেট থেকে সস্তায় বেশ ভাল কিছু জিনিস কেনা যাবে। যেদিন মার্কেট করতে যাব সেদিন আমার গার্ল ফ্রেন্ড আমাকে ফোন করে বলল যে সে বসুন্ধরা সিটিতে যাচ্ছে তার মা-বাবার সাথে ঈদ শপিং করতে।
আর আমি তো দু'দিন পরেই বাসা চলে যাব তাই ঈদ এর আগে দেখা করার সম্ভাবনা আর নাই । কাজেই আজকে বসুন্ধরাতে গেলে হয়তো দূর থেকে এক পলকের জন্য হলেও দেখতে পাব । আমার প্রেমিক মনকে আর না করতে পারলাম না । আমার এক বন্ধুকে নিয়ে গেলাম বসুন্ধরাতে । গিয়ে দেখি সে ফোন কিনতেছে ।
বেশ দামি ফোন। যদিও তার আগের ফোন টা এখনও বেশ ভালই । বলে রাখা ভাল আমার হবু শ্বশুরের টাকা পয়সা মাশাল্লাহ ভালই । একটু পর সে আরও কেনাকাটায় বাস্ত হয়ে পড়ে এবং আমরা দুই বন্ধু মিলে এমনি শার্ট প্যান্ট দেখতে থাকি যদিও আমাদের মনে ভুলেও সেখান থেকে কোন কিছু কেনার চিন্তা ছিল না । কিন্তু Infinity তে আমার একটা পাঞ্জাবি খুব-ই পছন্দ হয় এবং কিনে ফেলি।
কেনার পর দেখি আমার কাছে আছে মাত্র ৩০০ টাকা , মানে পায়জামা হবে না । আর ৩০০ টাকা খরচ করলে আমার হাত শূনও ! এইদিকে এত টাকা দিয়ে পাঞ্জাবি কিনে যদি পায়জামা না কিনি তাহলে তো আবার পুরা টাকা টাই পানিতে গেল । মাথায় পুরা বাজ পড়ল । এর কিছুদিন আগে আবার Apex থেকে কেনা আমার সদ্য স্যান্ডেল জোড়া রুমের সামনে থেকে চুরি হয়ে যায় । সব দিকেই শুধু বিপদ আর বিপদ ! যাইহোক আমি তো নগদে জায়গায় ধরা খাইলাম আর ওই দিকে আমার গার্ল ফ্রেন্ড তার রমরমা শপিং এ বাস্ত।
এরপর দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে বাসা আসলাম । মনে ক্ষীণ আশা ছিল বাসায় আসার পর বড় দুলাভাই আর আপুর কাছ থেকে যদি কিছু পাওয়া যায় । কিন্তু এখানেও চুনা খাইলাম । এই ঈদ এ নাকি তাদের একটু টানাটানি যাচ্ছে । এর উপর আবার আমার বন্ধুর প্যান পানানি আমার কারনে নাকি তার অত গুলা টাকা পানিতে গচ্ছা গেল কারন এই ঈদ এ নাকি তার কোন কিছু কেনার কথাই ছিল না !
পরসমাচারঃ অবশেষে নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট চরিত্র হিমু আমার সমস্যার সমাধান করে দিল।
আমার স্যান্ডেল নাই, পায়জামাও নাই। সুতারং আমি হিমুর মত খালি পায়ে পাঞ্জাবি পড়ে হাঁটব যদিও রঙটা একটু সমস্যা। হিমু পড়ে হলুদ পাঞ্জাবি কিন্তু আমাকে পড়তে হবে লাল পাঞ্জাবি যেহেতু আমার পাঞ্জাবিটা লাল । আর লাল হিমু হয়ে মানুষের জন সমুদ্রে খালি পায়ে মিশে যেতে আমার কোন সমস্যা নেই । কারণ হিমুদের কোন সমস্যা থাকে না ! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।