পাগলাটে ... ধোঁয়াশাপুর্ণ এক চরিত্র ... নিজেকে চেনার ব্যস্ততায় সর্বদা ব্যস্ত ... চরিত্রঃ
১) হিরু ওমর চানি ।
২) হিরুইন জরিনা কাপুর ।
৩) সাইড হিরু শারুক কান, চালমান কান, চাকিভ কান, চাইফ আলী কান ।
৪) সাইড হিরুইন মর্জিনা ।
৫) চৌধুরী সাহেব ( জরিনা’র বাপ ) ।
৬) আনোয়ারা বেগম ( ওমর চানি’র মা ) ।
৭) ভিলেন কালা মানিক ।
৮) এসিস্টেন্ট ভিলেন রুস্তম ।
৯) অন্যান্য ।
শট ১ টেক ১ :
[[ প্রেক্ষাপটঃ ওমর চানি ছোটবেলায় তার পিতা’কে হারায় ।
মা’কে নিয়েই তার সংসার । সে ঘুম থেকে ওঠা ছাড়াও অনেক কাজ করে, এগুলোর মধ্যে ডাংগুলি খেলা, বিড়ি টানা অন্যতম । সারাবছর পড়াশোনা না করলেও প্রায়ই তাকে ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট হতে দেখা যায় । বোঝাই যাচ্ছে, আমাদের হিরু এক বিরল প্রতিভা । ]]
ওমর চানিঃ মা, মা, আমি পরীক্ষায় ফার্স্টক্লাস’এ ফার্স্ট হয়েছি ! J
আনোয়ারা(মা): ওই হারামজাদা, এই ডায়ালগ আর কতবার দিবি ? এক বছরে কতবার রেজাল্ট হয় ? আমি অশিক্ষিত হলেও তো “নলা” না, যে তোর এইসব ভোগি চোগি বুঝবো না ।
মতলব কি সেইটা বল ।
চানিঃ ইয়ে, মা, কিভাবে যে বলি ... :”>
মাঃ কিভাবে বলবি মানে কি ? তুই কি ****(এখানে টুউউট হবে) দিয়া কথা বলতে পারোস ? মুখ দিয়া বলবি বেটা উল্লুক ।
চানিঃ ইয়েহ, মানে শারুক-চাল্লু-চাইফ’রা বান্দরবন যাচ্ছে ঘুরতে । আমিও যেতে চাচ্ছিলাম ।
মাঃ বান্দরবন যাবে মানুষ’রা ।
বান্দরের কি দরকার বান্দরবন যাওয়ার ? তোর বাপ ছিল এক হনুমান, আর আমার জন্য রেখে গেছে বান্দর ।
চানিঃ মা, প্লীইইইইইইইইইইজ ।
মাঃ পট পট করিস না ছ্যামড়া । আমার এখন গোপীর সিরিয়াল’টা দেখতে হবে । যা সর ...
|
|
শট ২ টেক ২ :
[[ প্রেক্ষাপটঃ জরিনা কাপুর কোটিপতি চৌধুরী সাহেবের একমাত্র কন্যা ।
সে বাংলা-হিন্দী সিনেমার প্রতি অত্যাধিকভাবে আসক্ত । কারিনা কাপুর জরিনার প্রিয় নায়িকা । তারই প্রেক্ষিতে বাবার দেয়া জরিনা চৌধুরী নাম নিজেই ঝেড়ে ফেলে সে এখন জরিনা কাপুর । জরিনার কাজিন মর্জিনা । সে নায়িকার “সখী”র ভূমিকায় ।
]]
জরিনাঃ মর্জিনা রে, মুঝে কুছ কারনা হ্যায় । এইভাবে বসে থাকতে আর আচ্ছি ন্যাহি লাগ রাহি হ্যায় । কি করা যায় জারা বাতা না ইয়ার ...
মর্জিনাঃ চল আমাদের গ্রামে যাই । অনেক মজা হবে ।
জরিনাঃ আব্বু’কো বাতানা পাড়েগা ।
মর্জিনাঃ কথায় কথায় হিন্দী কিছুক্ষনের জন্য বন্ধ কর । খালুজানের পারমিশন নিয়ে আসি চল ।
|
|
শট ৩ টেক ৩ :
[[ প্রেক্ষাপটঃ চৌধুরীর ড্রইংরুম । কালা মানিক উনার অনেক কাছের একজন ফ্রেন্ডের কু-পুত্র । কালা মানিক’র নাম কালা হওয়ার মাজেজা হচ্ছে সে দেখতে অত্যাধিক ফর্সা, যাকে বলে বি-রানী ফর্সা(বাংলাদেশি+ইরানী=বিরানী) ।
চৌধুরী কালা মানিক’কে অত্যান্ত স্নেহ করে “কামা” ডাকেন । যদিও এটা মানিকের একটুও পছন্দ না । কামা শুনলেই কেমন “কামা-সূত্রের” কথা মনে পড়ে, কিন্তু সে কিছুই মুখ ফুটে বলতে পারে না, পাছে চৌধুরী মাইন্ড করে বসে । বিজনেস নিয়ে আলাপ চলছিল, এমন সময় জরিনার আগমন, কামা পুলকিত । ]]
চৌধুরীঃ যা বলছিলাম, শুটকির ফ্যাক্টরী’টা বন্ধ না করে দিলে ...
জরিনাঃ আব্বু, জারা থামো ।
চৌধুরীঃ “জারা থামো” মানে কি ?
জরিনাঃ উপজি !! তুমি তো আবার হিন্দী বোঝোনা ! জারা থামো মানে একটু থামো, আমি একটা কথা বলবো ।
চৌধুরীঃ আজিব কথা বলবা না, তুমি ইতোমধ্যেই ২০-২৫ টা কথা বলে ফেলছ । যা হোক, বলো কি বলবা ।
জরিনাঃ নিড আ চেঞ্জ ব্যাডলি, গ্রামে যেতে চাচ্ছি আব্বু ! প্লিজ মানা কোরো না ।
চৌধুরীঃ মানা তো অবশ্যই করবো ।
তুমি তো প্রখ্যাত ল্যাংগুয়েজ স্পেশালিস্ট, কোন একটা বাক্য পুরোটা বাংলায় বলতে পারো না, আবার কামা’র কাছে শুনলাম তোমার ফেইসবুক একাউন্টেও নাকি নামের শেষে চৌধুরী সরিয়ে কাপুর বসাইছো, তোমার বোন’টাও তো আরেক গাধী, গ্রামে যাওয়ার আইডিয়া নিশ্চয় তার ?
মর্জিনাঃ ইয়ে,মানে,“জ্বি”, খালুজান ।
জরিনাঃ তুমি কি যেতে দিবা নাকি আমি নার্ভ কাটবো ?
চৌধুরীঃ আজ কাল’কের ছেলে মেয়েদের এই সমস্যা । চুল-দাঁড়ি কাটাঁর মত নার্ভ কাটাও ফ্যাশন হয়ে গেছে । কি আর করা, গ্রামে যাও, একা না গিয়ে কামা’কে সাথে নিয়ে যাও । কামা, তোমার কোন সমস্যা আছে ?
মানিকঃ আরে নাহ আঙ্কেল, আমার আবার কি সমস্যা থাকবে ? শুটকির ফ্যাক্টরী তো আপাতত বন্ধই থাকছে ।
চৌধুরীঃ তাহলে জরি, কামা যাচ্ছে তোমাদের সাথে ।
জরিনাঃ What ever …
|
|
শট ৪ টেক ৪ :
[[ প্রেক্ষাপটঃ চানি’র মন খারাপ । শারুক-চাল্লু’রা বান্দরবান চলে গেছে, এখন চানি’র কিছু করার নাই । বনে বাদাঁরে ঘুরে বেড়াতে অবশ্য তার খারাপ লাগে না । আজ ঘুরতেও মন চাচ্ছে না, একা একা কি আর ভালো লাগে ? আকরামের চা’দোকানে সল্টেজ বিস্কিট দিয়ে চাঁ খেতে খেতেই শুনলো চৌধুরী বাড়িতে নাকি চৌধুরী’র মেয়ে বেড়াতে এসেছে ।
চানি বরাবরই বাংলা সিনেমা ভক্ত । সে পর্দায় অনেকবার দেখেছে চৌধুরী বাড়ির মেয়ে গ্রামে আসা মানেই কোন এক গ্রাম্য যুবকের সাথে প্রেম হয়ে যাওয়া । নিজেকে চৌধুরী বাড়ির জামাই ভাবতে ভালোই লাগছিলো তার । ভাবনার জগত থেকে চানি’কে বাস্তবে নিয়ে এল এক নারী কন্ঠের চিতকার ! গ্রাম পর্যবেক্ষনে বের হয়েই জরিনা-মর্জিনা-কামা সামনে পড়ে বখাটে রুস্তমের সামনে । রুস্তম জরিনা’কে লক্ষ্য করে বাজে কথা বলতেই কামা ক্ষেপে গিয়ে তাকে মারতে যায় ।
এদিকে চানি উপস্থিত । চানি দেখলো কোট প্যান্ট পড়া এক লোক রুস্তমের উপর ঝাপিয়ে পড়লো । বিশালদেহী রুস্তমের এক থাপ্পড়েই শহুরে ভদ্রলোক কুপোকাত । ]]
চানিঃ রুউউউউউউঅস্তম !
রুস্তমঃ চিল্লাস ক্যান ?
চানিঃ তুই মেম সাহেবের হাত ধরেছিস, এত সাহস তোর হল কি করে ?
রুস্তমঃ খালাম্মা’কে বল, কমপ্লেন খাওয়াইতে । অক্ষন যা, জ্বালাইস না আর ।
চানিঃ রুউউউউউউউউউউউউউউউউস্তম !
রুস্তমঃ আবার চিল্লায়, কি মুসিবত রে বাপ! তুই যাবি নাকি তোর ঠ্যাং ভাইংগা কলা গাছের ডগার গাড়িতে কইরা বাড়ি পাঠামু ?
চানিঃ ইয়েহ হাত মুঝে দে দে রুস্তম ।
রুস্তমঃ নেহি!
চানিঃ ইয়েহ হাত মুঝে দে দে রুস্তম ...
রুস্তমঃ নেহিইইইই ।
মর্জিনাঃ ওই, এইখানে কি “শোলে” চলে ? জরিনা’র হাত নিয়া ‘দে দে’ করতেসো কেনো তোমরা ?
চানিঃ দ্যাখ রুস্তম, তুই ওনারে ছেড়ে দে । নইলে তোর হাড্ডি’র পাঊডার না বানাইসি তো ...
রুস্তমঃ ওই, তোরা ধর তো ওরে । পাউডার কে কারে বানায় দেখাই ।
{ চানি এইবার পকেট থেকে জুসের স্ট্র বের করবে, স্ট্র মুখে লাগিয়ে ফুঁ দিতেই রুস্তমের সাঙ পাঙ ঊড়ে যাবে । }
রুস্তমঃ এইটা কেমনে করলি ?
চানিঃ হাহ হাহ হাহ, আমি রজনীকান্তের দুঃসম্পর্কের চাচাত ভাইয়ের কি জানি হই ।
{ চানি আবার স্ট্র মুখে ধরার ভঙি করতেই রুস্তম জরিনা’র হাত ছেড়ে দৌড় । চানি-জরিনা’র প্রেম, ব্যাকগ্রাঊন্ডে সখা সখী’দের দৌড়াদৌড়ি }
আমার আর লেখতে ইচ্ছা করতেসে না, বাকিটুকু বাংলা সিনেমায় যা হয় তাই হবে । চানির সাথে কালা মানিক’র হেব্বি একটা ফাইট, চৌধুরী সাহেবের ঐতিহাসিক কিছু ডায়ালগ, কামা’র গুলিতে চৌধুরী সাহেবের মুত, সরি মউত ।
চানি’র ফূঃ তে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে কামা’র ইহধাম ত্যাগ । চানি-জরিনা’র আরেক’টা গান, পিছনে সারুক-চাল্লু-চাইফের নাচ, সাথে রাখী সাওয়ান্ত (এইটা আইটেম গান) । সমাপ্ত ...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।