আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যাপিটালিজমের সাইড-এফেক্টঃ এ ডিসকাশন ফ্রম সোস্যাইটাল পয়েন্ট অব ভিউ

সাধারন এবং নাগরিক জীবনে বিশ্বাসী!!! Capitalism মানেই হইল গাছ কাইটা ফার্নিচার বানাইয়া বিজ্ঞাপন দেওয়া "একটি গাছ কাটলে দশটি গাছ লাগান"। Capitalism-এর খারাপ দিক বা সাইড-এফেক্টগুলোকে এখন "Corporate social responsibility(CSR) "-নামক একটি থীওরি দ্বারা এমনভাবে publicize করা হয়েছে যে, সোস্যাইটি এখন বলে উঠতে শুরু করেছে, Capital is GOD! আর কোম্পনীগুলোর স্ট্র্যাটেজীগুলোও এমন ডিজাইন করা যার অভ্যন্তরীন কোর ম্যাসেজটা হচ্ছে "যতক্ষন ক্রয় করছ-ততক্ষনই বেঁচে আছ নতুবা তুমি মৃত"। তা না হলে চাইনিজ কোন কিশোর Apple product-এর জন্য নিজের কিডনী বিক্রী করে দেয়। চিন্তা করা যায়, Capitalism আজ কোন পর্যায়ে চলে গিয়েছে যেখানে হিউম্যানিটির কোনো অস্তিত্ব আছে বলে মনে হয় না। "বিজ্ঞাপন" লইয়া অনেকদিন আগে একটি কথা বলেছিলাম, মানুষ যা বাস্তবে করিতে পারে না, তাহাই বিজ্ঞাপনে প্রদর্শন করা হয়।

সমাজের কালো মেয়েটিও যখন ফেয়ার এন্ড লাভলি'র ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার প্রজেক্ট টেলেভিশনে দেখেছিল তার মনের মেঘলা আকাশে হালকা সূর্য হেসে উঠেছিল যে, এবার সেও ফর্সা হয়ে যাবে! কিন্তু হায়রে! ক্যাপাটিলজমের দেবতা যে বড়ই নির্মম। তো সমাজের সব কালো মেয়েগুলোও বুঝে গিয়েছিল ৭দিন পর "কালো জন্মগতভাবেই কালো" এবং দুনিয়ার সব কালো-মেয়েরা ফেয়ার এন্ড লাভলি বর্জন করে। মজার কথা "ক্যাপিটালিজম দেবতা কোম্পানীগুলোকেই বেশী ভালবাসে র্যা দার দ্যান কনজিউমার বা কাস্টমারদের থেকে। ফেয়ার এন্ড লাভলি নতুন যে স্ট্র্যাটেজিটা ফর্মুলেট করল সেটা অনেকটা "তেলা মাথা আরোও তেল দেওয়ার মতো"। এবার তারা আর কালো মেয়েদের টার্গেট করে নাই, এবার তাদের টার্গেট কাস্টমার "সাদা মেয়েরা"।

আর সমাজের সাদা মেয়েদের নতুন আরেকটা থীওরি শিখিয়ে দিল যে থীওরির নাম "ডাবল ফেয়ার্নেস" ...... আর বিজ্ঞাপনের স্লোগানটা হলো "ফেয়ার এন্ড লাভলি এন্ড ফেয়ার এন্ড লাভলি"। মানে আপনি ফর্সা হলেই চলবে না আজকাল, ডাবল ফর্সা হতে হবে। আসলে এই ব্যাপারটাও ভাকওয়াস। সাদা চামড়াকে আর কত সাদা করবেন? তবে সাদা-চামড়ার দেবী খুশী হওয়ার কারনে ফার্মগুলো যদি কিছু টাকা পয়ষা বানাতে পারে-এই আর কি? যাকে আমরা বলি ভোক্তা বা ক্রেতা সন্তুষ্টি/Customer Satisfaction! বিজ্ঞাপনের প্রসংগ টানিলাম এই অর্থে ক্যাপিটালিজম এবং বিজ্ঞাপনের মাঝে সুন্দর একটা ফাইন লাইন আছে। ক্যাপিটালিজম-এর মূল শক্তি "বিজ্ঞাপন-ব্র্যান্ডিং"।

মানুষের মাঝে ক্রয়-যাতনা ছড়িয়ে দেওয়াই এর কাজ। মূলত শেষ করব আমার একটি রিয়েল লাইফ উদাহরন দিয়েই। এলিফ্যান্ট রোডের একটি কম্পিউটার হাউজে আমি প্রায়ই আড্ডা মারতে যাই। তো বেশ কিছুদিন আগে এক ছেলে তার ব্যবহার করা সেকেন্ড হ্যান্ড একটি HP Laptop বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসল সেই কম্পিউটার হাউসটিতে। তবে ছেলেটি কম্পিউটার হাউসের মালিকের পরিচিত।

তো এর মাঝেই ল্যাপটপটা গুতাইয়া গুতাইয়া দেইক্ষা কইলাম, "ভাই ল্যাপটপটা মারাত্নক ভালো, বিদেশী মাল মনে হচ্ছে, বিক্রয় করবা কেন?" ...... ছেলেটি মন খারাপ কইরা কহিল, "ভাই ঠিকই কইসেন ল্যাপটপটা আমার বাবা দুবাই থেকে আমার জন্য পাঠাইছে গত বছর আর ভাই দুঃখের কথা কারে কই, এইবার সেমিস্টারের টাকা মারতে পারি নাই আর তার মধ্যেই আমার গার্ল-ফ্রেন্ড(প্রেমিকা) এই ঈদে আবদার করসে Diamonds World এর থেইক্কা ডায়ামন্ডের নাক-ফুল আর ডায়ামন্ডের আংগুলের রিং দিতে...... তাই ভাই দুঃক্ষে কষ্টে ল্যাপটপ বেইচ্চা দিতে আসছি। মনে মনে ভাবিতে থাকিলাম, নির্ঘাত বেচারার গার্ল-ফ্রেন্ড ব্যাপক সুন্দর তা না হলে সাধের ল্যাপটপ বিক্রি করে। মূলত যা উপসংহারে টানিতে চাই, ক্যাপিটালিজম-দেবতা ভালবাসাকেও ছাড় দেয় নাই। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।