আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১ সেপ্টেম্বর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী বিক্ষোভ ও মার্কিন সেনাদের বাংলাদেশ আগমন

বিশ্ব শান্তি পরিষদের উদ্যোগে এশিয়া জুড়ে আগামী ১ সেপ্টেম্বর পালন হতে যাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বিক্ষোভ। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে গত ২০-২৩ জুলাই বিশ্ব শান্তি পরিষদের মহাসম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহন, সম্মেলনের অভিজ্ঞতা এবং আগামী কর্মসূচীকে সামনে রেখে গত ২ আগস্ট রিপোটার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ শান্তি পরিষদ। এতে আগামী ১ সেপ্টেম্বর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়া হয়। আজকের বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা মারফত জানতে পেলাম মার্কিন মেরিন কোরের ৪০-৪৫ জনের একটি দল ঢাকায় আসবে এবং ১লা সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দলের সাথে যৌথ অনুশীলন পরিচালনা করবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। মেরিন সেনাদের ঢাকায় আসা-যাওয়ার বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত ই-মেইলে অনেকগুলো চিঠি আদান-প্রদান হয়।

ডেইলিএডুকেশনডটনেট-এর হাতে থাকা একটি চিঠিতে এরকম কথা উল্লেখ আছে, “যুক্তরাষ্ট্র সরকার আগামী ১ সেপ্টেম্বর, ২০১২ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সশস্ত্র বাহিনীর U.S. Marine Corps Pacific Command (MARFORPAC) এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহনে Engineering Capabilities Exercise (ENCAP)-2012 নামে যৌথ অনুশীলন পরিচালনার মাধ্যমে একটি স্কুল সংস্কারের প্রস্তাব প্রেরণ করেছে। উক্ত প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে সেনাসদর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক সাভার এলাকাস্থ পলাশবাড়ী হাজী জয়নউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের একতলা ভবনটিকে সংস্কার/মজবুত করণের (Retrofitting) সম্মতি প্রদান করেছে। ” “এই অনুশীলনে যুক্তরাষ্ট্র সশস্ত্র বাহিনীর ৪০-৪৫ জন সদস্য এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীরও সমসংখ্যক সদস্য অংশগ্রহন করবে। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ এই অনুশীলনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র হতে আগত অংশগ্রহনকারী সদস্যদের যাতায়াত খরচ, থাকা, খাওয়া ও অনুশীলন সংক্রান্ত অন্যান্য যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবে। যুক্তরাষ্ট্রের অনুশীলনকারী দল অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি যুক্তরাষ্ট্র হতে বাংলাদেশে বহন করবে এবং অনুশীলন শেষে ফেরত নিয়ে যাবে।

অনুশীলনে অংশগ্রহনকারী যুক্তরাষ্ট্র সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বাসস্থান, যাতায়াত এবং নিরাপত্তার [বাসস্থান হতে অনুশীলন এলাকায় গমনাগমন এবং অনুশীলন এলাকার] প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক করা হবে। ” ওই চিঠিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে, “স্থানীয় প্রশাসনকে সাভার এলাকাস্থ পলাশবাড়ী জয়নউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মাণ কাজ সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য অনুশীলন চলাকালীন অনুশীলনে অংশগ্রহনকারী যুক্তরাষ্ট্র সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যবৃন্দের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সেনাবাহিনীর সাথে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রদানের জন্য পুলিশ প্রশাসন (গোয়েন্দাসহ)কে নির্দেশনা প্রদানের জন্য। ” চিঠিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সশস্ত্র বাহিনী দলটি হযরত শাহজালাল (রা) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে ঢাকায় আগমন ও প্রস্থান করবে। ওই চিঠিতে রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, “শুধুমাত্র অনুশীলনের কাজে বহনকৃত যুক্তরাষ্ট্র সশস্ত্র বাহিনীর সরঞ্জামাদির কর মওকুফ করার জন্য। ” এর আগেও এই মার্কিনীরা সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে প্রেরণ করতে চেয়েছিল।

কিন্তু বাংলাদেশের দেশপ্রমিক কিছু ব্লগার, কিছু লেখক, বামপন্থী দল গুলোর ( বিশেষ করে- কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদের নাম উল্লেখযোগ্য ) সপ্তম নৌবহর প্রেরণ বিরোধী অবস্থান এবং আন্দোলনে শেষতক মার্কিন দূত মজিনা ঘটা করে ঘোষণা দেন কোন নৌবহর আসছে না। একটি ঘোষণা কি মার্কিনীদের চক্রান্তের অবসান করে দিতে পারে? পাঠকদের কাছে প্রশ্ন। বর্তমান বিশ্ব রাজনীতি প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় মার্কিন বাজারের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হল চীন। চীনের উৎপাদিত পণ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বাজার ছেয়ে গেছে। মার্কিনীদের দেশে অর্থনীতির যে ধস সে ধসের বিন্দুমাত্র ছোঁয়া লাগেনি চীনা অর্থনীতিতে।

বরঞ্চ তাদের প্রবৃব্ধি বেড়েছে অনেক শতাংশ। মার্কিনীদের বাজার দখলের চেষ্টা নতুন কিছু নয়। আরব দেশগুলোতে যেভাবে যুদ্ধ বিগ্রহ চালিয়েছে তাতেই তাদের যুদ্ধবাজ মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠে। তারা তাদের বাজারের পরিধি বাড়াতে মানুষ হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করে না। তারা তাদের অস্ত্রের খেলা দেখিয়ে করে চলছে বিরাট বিরাট ধ্বংসযজ্ঞ।

যেমনটি দেখি দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের শেষের দিকে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে আণবিক বোমার প্রদর্শনী। সেই যুদ্ধবাজ মার্কিন আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানীদের পক্ষে অবস্থান করলেও পরবর্তীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন শাসক ও রাজনৈতিক দল তাদের এখন চরম বন্ধু। সে বর্তমান সরকারী দল হোক কিংবা বিরোধীদল হল। মার্কিনীদের কৌশল পাল্টেছে কিন্তু চরিত্র পাল্টেনি। একটি স্বাধীন দেশে যদি কেউ পার্সপোট ভিসা ছাড়া আসবে আবার এদেশে কিছু দিন থেকে আবার চলে যাবে, এরকমই যদি হয় তাহলে আমাদের সার্বভৌমতা কই থাকল? এরা চীনকে রুখতে আমাদের দেশের মাটি ব্যবহারও করবে এবং আমাদের দেশের খনিজ সম্পদও লুট করবে।

বাংলাদেশকে তলা বিহীন ঝুড়িতে পরিনত করার যে চেস্টা ও আমাদের তথাকথিত দেশপ্রেমিক সরকারী ও বিরোধীদলের প্রত্যক্ষ মদদ আমরা জনগণই পারি রুখতে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ রুখে দিতে পারে অন্যায় এবং এনে দিতে পারে আমাদের জন্য শান্তি ও উন্নতি। তাই আসুন বিশ্ব শান্তি পরিষদের সাথে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বিক্ষোভে দলে দলে অংশগ্রহন করি এবং মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী চক্রান্ত নস্যাৎ করি। মার্কিন সেনা আগমনের খবর পড়ুনঃ মার্কিন মেরিন সেনা ঢাকায় আসবে সংস্কার হবে জয়নউদ্দিন স্কুল বাংলাদেশ ও ন্যাটোর বিভিন্ন বৈঠকে আলোচিত বিষয় এবং ন্যাটো বাহিনী লক্ষ্য জানতে নিচের লিংকে যেতে পারেনঃ Bangladesh: U.S. & NATO Forge New Military Partnership In South Asia ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।