জীবনকে ভালোবাসি, তার চেয়েও বেশী ভালোবাসি মেয়েকে। দেখতে দেখতে বিবাহিত জীবনের ৪টি বছর একসাথে পার করে ফেললাম। মনে হচ্ছে যেন এইতো সেদিন দুজনে কবুল বললাম। আজ কিছুটা স্মৃতিকাতর হয়ে যাচ্ছি যেন। আমাদের বিয়ের তারিখটি ছিলো সুন্দর - ০৮/০৮/০৮।
দুজনেই তখন বাচ্চা বাচ্চা অবস্থায়, মাত্র পড়াশুনা শেষ হয়েছে, এর মধ্যেই আম্মু আব্বু আমার বিয়ের কথা চিন্তা করা শুরু করেছেন। আমি ভয় পেয়ে তাকে বললাম যেভাবে পারো বিয়ের ব্যাবস্থা করো। সেও ভালো ছেলের মতো বিয়ের ব্যাবস্থা করতে লেগে গেলো। ভাগ্য ও আমাদের সহায় হয়েছিলো কারন তার কিছুদিন আগেই সে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে চাকরি পেয়েছিলো। আমার বাবা মা খুশিমনে বিয়েতে রাজী হয়ে গেলেন।
তারপর কিছুদিন কেটেছে ঝড়ের বেগে, নিজেদের বিয়ের যাবতীয় কেনাকাটা আমাদের দুজনকেই করতে হয়েছে। কস্ট ও লেগেছে আবার ভালোও লেগেছে , ভালো লেগেছে এই ভেবে যে আমরা আমাদের পছন্দমতো সব কিছু কিনতে পারছি। সব ঝামেলা পর্ব কাটিয়ে অবশেষে ০৮/০৮/০৮ টারিখে আমরা কবুল বললাম। বিয়ের পর ও অবশ্য অনেকদিন আমরা আলাদাই থেকেছি। বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান হয় ২০০৯ সালের ১৬ই অক্টোবরে।
বিয়ের পর থেকেই আমি সবসময় আমার স্বামীর সাহায্য ও সহযোগিতা পেয়েছি। আমাদের বিয়ের রাতে আমার স্বামীর আমার কাছে একটাই চাওয়া ছিলো - আমি যেন কখনো আমার শাশুড়ীর মনে কোনোভাবেই কস্ট না দেই। আমি সে কথা সবসময় মনে রেখে চলেছি। আমার শশুরবাড়ীতে থাকাকালীন সময়ে পরবর্তীতে কিছু বিষয় নিয়ে আমার শাশুড়ির সাথে আমার মতানৈক্য দেখা যায়, বা অনেক সময় অনেক অনভিপ্রেত ঘটনাও ঘটে, কিন্তু আমি কখনোই তার সাথে কোন খারাপ ব্যাবহার করিনি। আমি যখন কস্ট পেয়েছি তখন আমার স্বামীর সাথে ঘটনাগুলো শেয়ার করেছি, যেই ইস্যুগুলোতে আমি ঠিক ছিলাম সেগুলোতে সে আমাকে সমর্থন করেছে, আমাকে বুঝিয়েছে, আবার যেগুলোতে আমি ভুল ছিলাম সেগুলোর ব্যাপারেও সে আমাকে বুঝিয়েছে কোথায় আমার ভুল ছিলো।
কখনোই আমাদের মাঝে এসব বিষয় নিয়ে রাগারাগি বা ঝগড়ার সৃষ্টি হয়নি। এভাবে সে আমাকে আজ পর্যন্ত সহযোগিতা করে আসছে। যদি তার এই সহযোগীতা না থাকতো তাহলে আমার জীবনটা আসলে আজ এতো সহজ ও সুন্দর হতোনা। আমার কাছে মনে হয় একটা মেয়ের জন্য তার স্বামীর সহযোগীতা খুব বড় একটা বিষয়। অন্যকথায় বলা যায় ভালো স্বামী পাওয়াটা মেয়েদের জন্য বিশাল একটা ভাগ্যের ব্যাপার।
একটা মেয়ে তার জীবনের অন্য সব সমস্যা হাসিমুখে মোকাবেলা করতে পারে যদি তার স্বামী তার পাশে থাকে। তাই সব ব্লগার ভাইদের বলছি আপনার জীবন সুন্দর করার দায়িত্ব শুধু আপনার বৌ এর উপর চাপিয়ে না দিয়ে নিজেও একটু চেষ্টা করুননা দুজনে মিলে জীবনটাকে সুন্দর ও আনন্দদায়ক করার। একটা মেয়ে তার শৈশব কৈশর এর অনেকটা সময় একভাবে কাটিয়ে এসে শুশুরবাড়ীতে এসে সম্পূর্ণ নতুনভাবে জীবন শুরু করে , নতুন নতুন মানুষের সাথে তাকে থাকতে হয় তাদের মত করে। এই পরিবর্তনকালে তার কিছুটা সমস্যা হতেই পারে। এজন্য তাকে দোষারোপ না করে বরং তাকে সহযোগীতা ও সহায়তা করুন।
এর ফলে ভবিষ্যৎটা অবশ্যই সুন্দর হবে। সবাই ভালো থাকুন এই কামনা করি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।